গত বছরের ৮ জুলাই। সেনা অভিযানে হিজবুল নেতা বুরহান ওয়ানি-সহ তিন জঙ্গির মৃত্যু হয়েছিল। আর প্রাণ বাজি রেখে সেই অভিযানে যাঁরা নেতৃত্ব দিয়েছিলেন রাষ্ট্রীয় রাইফেলের সেই তিন সেনা অফিসারকে সাহসিকতার জন্য পুরস্কৃত করল ভারত সরকার। তাঁরা হলেন মেজর সন্দীপ কুমার, ক্যাপ্টেন মানিক শর্মা এবং নায়েক অরবিন্দ সিংহ চৌহান।
অফিসাররা জানালেন গায়ে কাঁটা দেওয়া সেই অভিজ্ঞতার কথা। সে দিন গোপন সূত্রে খবর ছিল, কাশ্মীরের বুমডোরা গ্রামের একটি বাড়িতে গা ঢাকা দিয়েছে সরতাজ আজিজ-সহ তিন দুর্ধর্ষ জঙ্গি। সঙ্গে প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র। অনন্তনাগের সেনা ছাউনি থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার দুরে ওই বুমডোরা গ্রাম। খবর পেয়ে সশস্ত্র বাহিনী নিয়ে বাড়িটি ঘিরে ফেলেন সেনা অফিসাররা। তবে সেনা অভিযানের খবর চাপা থাকেনি গ্রামবাসীদের কাছে। কিছু ক্ষণের মধ্যেই এলাকার বাসিন্দারা সেখানে ভিড় জমতে শুরু করেন। তাঁদের চোখে আগুন। হাতে পাথর। আসলে কাশ্মীরের জঙ্গি-প্রভাবিত প্রত্যন্ত ওই সব গ্রামের মানুষের কাছে জঙ্গি নেতারাই ত্রাতা, ‘রবিনহুড’। এঁদের শান্ত করতে সে দিন গ্রামের ইমামদের ডাকিয়ে বোঝানো ছাড়া সেনা বাহিনীর আর উপায় ছিল না।
সেনা অফিসাররা জানালেন সে দিনের কথা। খবর পেয়ে জঙ্গিদের ডেরা ঘিরে ফেলেছে জওয়ানরা। আর তাঁদের লক্ষ করে পাথর ছুড়ছে উত্তেজিত জনতা। ঘনঘন স্লোগান উঠছে। এ দিকে দিনের আলো দ্রুত ফুরিয়ে আসছে। তারই মধ্যে গুলি চালিয়ে পালাবার চেষ্টা করল জঙ্গি নেতা সরতাজ আজিজ। সময় নষ্ট করেননি জওয়ানরা। পুলিশের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে তাঁর মৃত্যু হয়। এর পরেই ক্যাপ্টেন মানিক শর্মা এবং নায়েক অরবিন্দ সিংহ চৌহানকে সামনে রেখে ওই বাড়িতে ঢুকে পড়েন মেজর সন্দীপ কুমার। পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় আরও দুই জঙ্গির।
পরে জানা যায় এঁদেরই এক জন হিজবুল মুজাহিদিনের মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গি নেতা বুরহান ওয়ানি। যাঁর মৃত্যুতে পরের দিনগুলোয় বিক্ষোভের আগুন জ্বলেছে কাশ্মীরে। যে আগুনের আঁচে এখনও পুড়ছে ভূস্বর্গ।