হিসেব করলে দাঁড়াচ্ছে সাকুল্যে উনিশ দিন। এই সময়টুকুর মধ্যেই সারা দেশে বেঘোরে খুন হয়ে গেলেন একে একে তিন জন সাংবাদিক।
গত ৪ সেপ্টেম্বর গৌরী লঙ্কেশকে তাঁর বেঙ্গালুরুর বাড়ির দোরগোড়ায় গুলি করে মেরেছিল আততায়ী। গত বুধবার খবর সংগ্রহে যাওয়া আগরতলার শান্তনু ভৌমিককে তুলে নিয়ে কুপিয়ে খুন করে কয়েক জন। আর একাধিক সর্বভারতীয় ইংরেজি সংবাদপত্রের প্রাক্তন বার্তা সম্পাদক কে জে সিংহের গলাকাটা দেহ আজ পাওয়া গেল তাঁরই বাড়িতে।
মোহালির ফেজ ৩বি২-এর সেই বাড়িতে দরজা ভেঙে ঢুকে ষাটোর্ধ্ব সাংবাদিকের সঙ্গে তাঁর মায়ের মৃতদেহও পেয়েছে পুলিশ। ৯২ বছরের গুরচরণ কৌরের গলাতেও ছিল আঘাত। পুলিশের সন্দেহ, শ্বাসরোধ করে মারা হয়েছে তাঁকে।
এই ঘটনার পরেই পঞ্জাব পুলিশের আইজি (অপরাধ দমন)-এর নেতৃত্বে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করে দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিংহ। সাংবাদিক খুন নিয়ে সরকারের অস্বস্তি তো রয়েইছে, সেই সঙ্গে আজকের ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে আমজনতার নিরাপত্তা নিয়েও। যথাযথ তদন্তের দাবি তুলেছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সুখবীর সিংহ বাদলও।
পুলিশ সূত্রে খবর, আজ দুপুর ১টা নাগাদ কে জে সিংহের দেখা করতে এসেছিলেন এক ব্যক্তি। বহু ডাকাডাকির পরেও কেউ দরজা না খোলায় সন্দেহ হয় তাঁর। শেষমেশ পুলিশে খবর দেওয়া হয়। দেহ দু’টি উদ্ধারের পরে পুলিশ দেখে, প্রবীণ সাংবাদিকের সবুজ রঙের গাড়িটিও উধাও।
গৌরীর খুনের পরে উঠে এসেছিল নানা তত্ত্ব— অসহিষ্ণুতা থেকে মাওবাদী রোষ। কাউকেই যদিও গ্রেফতার করা যায়নি। শান্তনুকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল উন্মত্ত জনতা। কে জে সিংহ ও তাঁর মাকে মারল কে? এ কি ছিঁচকে চোর-ডাকাতের কাজ?
পুলিশের সিনিয়র সুপারিন্টেন্ডেন্ট কুলদীপ সিংহ চহল কিন্তু চুরির তত্ত্ব খারিজ করে দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, বেশ কয়েকটি সূত্র ধরে ধরে এগোচ্ছে পুলিশ। চুরিটা যে উদ্দেশ্য ছিল না, সেই প্রমাণ পুলিশের কাছে রয়েছে। দুষ্কৃতীরা সংখ্যায় একাধিক ছিল বলেই সন্দেহ। দ্রুত তাদের পাকড়াও করা নিয়ে আশাবাদী ওই পুলিশকর্তা।