Puri Rath Yatra Celebration

পুরীতে নামমাত্র চলল জগন্নাথের রথ, ভিড়ে অসুস্থ ৬০০

দলাচেপ্টা বা পদপিষ্ট হওয়ার কারণ হিসেবে খাতায়-কলমে অপ্রত‍্যাশিত ভিড়ের কথাই বলেছে ওড়িশা সরকার। তবু স্থানীয় প্রশাসন ও শ্রীমন্দিরের সংশ্লিষ্ট সূত্রে দাবি, রথ সংলগ্ন ঘেরাটোপে বাড়তি লোকজনকে ঢোকার ছাড়পত্র দেওয়ার জন্যই ভুগতে হয়েছে এত মানুষকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০২৫ ০৫:৫৮
Share:

জগন্নাথের মূর্তি কাঁধে পুরীর মন্দিরের সেবায়েতরা। শুক্রবার। ছবি: পিটিআই।

সূর্যাস্ত হয়ে গিয়েছে বেশ কিছুক্ষণ। তবু জগন্নাথদেবের রথ নন্দীঘোষ থমকে দাঁড়িয়ে পুরীর শ্রীমন্দিরের সিংদ্বারের সামনেই। বৃহস্পতিবার পুরীর রথযাত্রার এই দৃশ‍্য ঘিরে আশঙ্কা দানা বাঁধছিল দেশেবিদেশে জগন্নাথদেবের ভক্ত পরিমণ্ডলে। স্মরণকালের মধ‍্যে রথযাত্রার নির্ঘণ্টে এতটা দেরি হয়নি পুরীতে। শেষ পর্যন্ত সন্ধ‍্যা ৭টা ৪৫ মিনিটে জগন্নাথের রথ নামমাত্র চললেও ঠেলিঠেলিতে পদপিষ্ট বা ভিড়ে দমবন্ধ হয়ে অন্তত ৬০০ জন ভক্ত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। রাত পর্যন্ত কারও প্রাণহানির খবর না মিললেও অন্তত ৪০ জন গুরুতর আহত।

দলাচেপ্টা বা পদপিষ্ট হওয়ার কারণ হিসেবে খাতায়-কলমে অপ্রত‍্যাশিত ভিড়ের কথাই বলেছে ওড়িশা সরকার। তবু স্থানীয় প্রশাসন ও শ্রীমন্দিরের সংশ্লিষ্ট সূত্রে দাবি, রথ সংলগ্ন ঘেরাটোপে বাড়তি লোকজনকে ঢোকার ছাড়পত্র দেওয়ার জন্যই ভুগতে হয়েছে এত মানুষকে। প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের হঠকারিতার ফলেই এত জনের জীবন নিয়ে ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।

এ দিন বলভদ্রের রথ তালধ্বজ টানার সময়ে পুরীর গজপতি মহারাজের বাসভবনের সামনে ঠেলাঠেলিতে জনা ২৫ ভক্ত রশি ছুঁতে গিয়ে রাজপথে ছিটকে পড়েন। এর পরেও জগন্নাথদেবের রথের সামনে বিপুল ভিড়কে নড়ানো যাচ্ছিল না। ফলে রথ টানা শুরু করা যায়নি। পরে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পুরীতে এ দিন রোদ তত ছিল না। সারা দিনই ঝিরঝিরে বৃষ্টি হচ্ছিল। তবু গরম ও ভিড় মিলিয়ে এত ভক্তের অসুস্থ হওয়া ঠেকানো গেল না। এই পরিস্থিতির জন‍্য স্থানীয় প্রশাসনের কাজ সামলানোয় ব্যর্থতা এবং বিশৃঙ্খলার দিকেই আঙুল উঠেছে।

রথের ভিড় সামলাতে পুরীর রাস্তায় নিরাপত্তারক্ষীরা। শুক্রবার। ছবি: পিটিআই।

দুর্ঘটনার সময়ে ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মোহনচরণ মাঝি পুরীতে উপস্থিত ছিলেন। জগন্নাথদেবের রথ টানবেন বলে তিনি অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু দুর্ঘটনায় উৎসবের সুর কেটে যায়। দিন শেষে জগন্নাথের রথ সিংহদ্বার থেকে নামমাত্র এগিয়েই থেমে যায়। তিনটি রথের কোনওটিই কিলোমিটার তিনেক দূরে গন্তব‍্য গুন্ডিচা মন্দির পর্যন্ত যেতে পারেনি। আজ, শুক্রবার বেলা ন’টায় ফের রথ টানা শুরু হবে।

বড়দা বলভদ্রের রথ রীতিমাফিক সবার আগে থাকে। এ দিন বিকেল সওয়া চারটেয় যা চলতে শুরু করেছিল। এর পরে ছোট বোন সুভদ্রার রথ। সব শেষে মেজদা জগন্নাথদেবের রথ চলার কথা। এ দিন বলভদ্রের রথ তালধ্বজ চলার পথ বড় দাণ্ডের উপরে বলগণ্ডি পর্যন্ত যেতে পেরেছে। সুভদ্রার রথ দর্পদলন মাঝপথে মার্কেট চক অবধি পৌঁছয়। খাতায়-কলমে এ দিন পুরীতে লোক হয়েছে ১৩ লক্ষের মতো। ভিড় বেশি হলেও ঠেলাঠেলি আটকাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে মনে করা হচ্ছে। গত বছরই রথযাত্রার পরে গুন্ডিচা মন্দিরে ঢোকার সময়ে পাহুন্ডির অনুষ্ঠান চলাকালীন বলভদ্রের বিগ্রহ পান্ডাদের দড়ি ছিঁড়ে পড়ে যায়। সে-বার শ্রী মন্দিরের আচার অনুষ্ঠান ঠিকঠাক মানা হচ্ছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। অভিযোগ ওঠে সেবায়েতরা অনেকে নিজস্বী তোলায় ব্যস্ত ছিলেন। এ বার তাই রথযাত্রার আগে প্রতিটা ধাপের কার্যবিধি বা এসওপি খতিয়ে দেখার ব‍্যবস্থা হয়। বিষয়গুলিতে বিশেষ নজর দেন শ্রীমন্দিরের মুখ‍্য প্রশাসনিক কর্তা অরবিন্দ কুমার পাঢ়ি। তাতেও দুর্যোগ ঠেকানো গেল না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন

এটি একটি প্রিমিয়াম খবর…

  • প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর

  • সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ

  • সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে

সাবস্ক্রাইব করুন