নিষেধাজ্ঞার দাবি তামাকজাত পদার্থ ব্যবহারে

ভারতে ক্যানসারের পিছনে বড় কারণ তামাক এবং তামাকজাত পদার্থ। বিশ্বম্ভর প্রসাদ নিশাদ-সহ একাধিক সাংসদ আজ রাজ্যসভায় অবিলম্বে তামাকজাত পদার্থ ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করার জন্য কেন্দ্রীয় নীতি প্রণয়নের দাবি করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৯ ০২:৪৯
Share:

বিশ্বে ক্যানসার আক্রান্তের সংখ্যায় আমেরিকা ও চিনের পরেই ভারতের স্থান। এই রোগে বছরে বিশ্বে মারা যাচ্ছেন প্রায় ১ কোটি মানুষ। মৃত্যুহার কমাতে ক্যানসারের দ্রুত চিহ্নিতকরণের উপরে জোর দিলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন। আজ রাজ্যসভায় ক্যানসার সংক্রান্ত বিতর্কে হর্ষ বলেন, ভারতে যে ধরনের ক্যানসার দেখা যায়, দ্রুত চিহ্নিত করতে পারলে তার ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ ক্ষেত্রে চিকিৎসার পরে সুস্থ জীবন পাওয়া সম্ভব। এ জন্য সচেতনতা বৃদ্ধিতে গুরুত্ব দেন তিনি।

Advertisement

ভারতে ক্যানসারের পিছনে বড় কারণ তামাক এবং তামাকজাত পদার্থ। বিশ্বম্ভর প্রসাদ নিশাদ-সহ একাধিক সাংসদ আজ রাজ্যসভায় অবিলম্বে তামাকজাত পদার্থ ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করার জন্য কেন্দ্রীয় নীতি প্রণয়নের দাবি করেন। যদিও ওয়াকিবহাল মহলের মতে, ওই নিষেধাজ্ঞা জারি করা কার্যত অসম্ভব। তামাকজাত পদার্থের বিক্রি থেকে বড় মাপের রাজস্ব পায় রাজ্য ও কেন্দ্র। ফলে সেই রাজস্ব হারানোর ঝুঁকি নিতে চান না কেউই। উপরন্তু তামাকজাত শিল্পের সঙ্গে যে কয়েক লক্ষ শ্রমিকের রুটি-রুজি জড়িয়ে রয়েছে, তাঁদের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। এ ছাড়া, তাঁদের রুজি গেলে ভোট হারানোরও সম্ভাবনা রয়েছে। বিকল্প হিসাবে তাই কয়েক জন সাংসদ তামাকজাত পদার্থে আরও বেশি মাত্রায় কর বসানোর পক্ষে সওয়াল করেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কথায়, ‘‘জীবনের সব ক্ষেত্রে প্লাস্টিকের বিপুল ব্যবহার, খাবারে ভেজাল রাসায়নিকের ব্যবহার ক্যানসার বাড়ার অন্যতম কারণ।’’

অধিকাংশ সাংসদই মেনে নেন, ক্যানসারের দ্রুত চিহ্নিতকরণ হলে তা সারানো সম্ভব। হর্ষের কথায়, ‘‘অধিকাংশ আক্রান্তই স্টেজ থ্রি বা ফোর-এ পৌঁছানোর পরে ওই রোগের কথা জানতে পারেন। তখন কিছু করার কথা থাকে না।’’ বিজেডি-র প্রসন্ন আচার্য প্রতিটি জেলায় একটি করে ক্যানসার চিহ্নিতকরণ কেন্দ্র খোলার দাবি করেন। বিশ্বম্ভর প্রসাদ বলেন, প্রতিটি সরকারি হাসপাতালে অঙ্কোলজি কেন্দ্র থাকা বাধ্যতামূলক হোক। জবাবে হর্ষ বলেন, ‘‘দেশে ৪৮২টি ক্যানসার চিকিৎসা কেন্দ্র রয়েছে। যে প্রান্তে ক্যানসার আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির ঘটনা সামনে আসছে, সেখানে চিকিৎসা কেন্দ্র খোলা হচ্ছে।’’ তৃণমূলের সাংসদ যোগেন চৌধুরী জানান, ভারতে স্তন ও জরায়ুমুখ ক্যানসারে সবচেয়ে বেশি মহিলা মারা যান। তিনি এইচপিভি ভ্যাকসিনকে টিকাকরণ প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসার পক্ষে সওয়াল করেন।

Advertisement

আলোচনায় উঠে আসে ক্যানসার চিকিৎসার বিপুল খরচের দিকটিও। সাংসদদের বক্তব্য, অর্থবানেরা ক্যানসার হলে চিকিৎসা করাতে বিদেশে চলে যান। আর এ দেশে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গেলে সর্বস্বান্ত হতে হয় রোগীর পরিবারকে। ছবিটি পাল্টাতে তাই ক্যানসার চিকিৎসাকে সাধারণের আওতার মধ্যে আনার দাবি তোলেন সিপিএমের কে কে রাজেশ। জবাবে হর্ষ বলেন, ‘‘আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পে বিনামূল্যে ক্যানসার চিকিৎসা করা হয়। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় সস্তায় চিকিৎসা সম্ভব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন