—ফাইল চিত্র।
ভাঙন নিশ্চিত, বোঝা যাচ্ছে সপ্তাহ দু’য়েক ধরেই। কিন্তু জেডি(ইউ)-এর অভ্যন্তরীণ টানাপড়েন এ বার অন্য রকম মোড় নিয়ে নিল। দলের আসল মালিক কে? নীতীশ কুমার, না শরদ যাদব? বিতর্ক এ বার শুরু হয়ে গেল তা নিয়েই। এই টানাপড়েনে নীতীশকে জোর ধাক্কা দিতে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছেন শরদ যাদব। দলের ১৪টি রাজ্য কমিটি ইতিমধ্যেই শরদ যাদবের পাশে দাঁড়িয়েছে। রাজ্য সভাপতিদের কাছ থেকে জোগাড় করা সমর্থনের চিঠি তুলে ধরে নিজেদেরকেই আসল জেডি(ইউ) বলে দাবি করছে শরদ শিবির। তবে নীতীশ কুমারের অনুগামীরা বলছেন, বিহারের বাইরে সে ভাবে অস্তিত্বই নেই দলের। তাই অন্যান্য রাজ্যের কমিটিগুলি কার পক্ষে দাঁড়াচ্ছে, তা গুরুত্বপূর্ণ নয়।
লোকসভায় ২টি আসন রয়েছে জেডি(ইউ)-এর। এঁদের কেউই শরদ যাদবের পাশে নেই। রাজ্যসভায় জেডি(ইউ)-এর সাংসদ সংখ্যা ১০। তাঁদের মধ্যে শরদ যাদব নিজেই একজন। আলি আনোয়ার এবং বীরেন্দ্র কুমারও শরদের দিকে। অর্থাৎ দলের মোট ১২ সাংসদের ৩ জন শরদ শিবিরে। ৯ জন নীতীশের পক্ষে। বিহার বিধানসভায় জেডি(ইউ)-এর যে পরিষদীয় দল, সেখানেও নীতীশের নিয়ন্ত্রণ প্রায় নিরঙ্কুশ। কিন্তু বিহারের বাইরে বেরোলেই নীতীশ কুমার বেশ নিঃসঙ্গ। লালু এবং কংগ্রেসের হাত ছেড়ে নীতীশ কুমার বিজেপির হাত ধরার পর থেকে দলের মধ্যে যে টানাপড়েন শুরু হয়েছে, তাতে ১৪টি রাজ্য কমিটি এখন নীতীশের বিরুদ্ধে খড়্গহস্ত। শরদ যাদবকেই দলের নেতা হিসেবে মানছেন ওই সব রাজ্যের জেডি(ইউ) নেতৃত্ব।
আরও পড়ুন: ক্রস ভোটের অভিযোগে তপ্ত তৃণমূল
নীতীশ ইতিমধ্যেই শরদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেছেন। রাজ্যসভায় জেডি(ইউ) দলনেতা ছিলেন শরদ। জেডি(ইউ)-বিজেপি জোটের বিরুদ্ধে শরদ জেহাদ ঘোষণা করায় ওই পদ থেকে তাঁকে সরিয়ে দিয়েছেন দলের সভাপতি নীতীশ কুমার। জোট পছন্দ না হলে শরদ যাদব নিজের জন্য অন্য পথ দেখে নিতে পারেন বলেও নীতীশ মন্তব্য করেছেন। শরদ যাদব দল ছেড়ে দেবেন এবং নতুন দল গড়বেন বলেই শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু আচমকা তিনি কৌশল বদলেছেন। নিজে দল না ছেড়ে, নীতীশকেই দলছাড়া করার ছক কষতে শুরু করেছেন।
আরও পড়ুন: পওয়ারকে পেতে ঝাঁপাচ্ছে বিজেপি
নীতীশ শিবিরের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, জেডি(ইউ) মূলত বিহার-কেন্দ্রিক দল। তাই বিহারের দলীয় কর্মী এবং জনপ্রতিনিধিরা যে দিকে থাকবেন, সেটাই আসল জেডি(ইউ)। কিন্তু শরদ যাদব শিবিরের দাবি, জেডি(ইউ) বরাবরই জাতীয় রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ। গুজরাত জেডি(ইউ)-এর নেতা অরুণ শ্রীবাস্তবের কথায়, ‘‘আমরা দল ছাড়ব না। নীতীশ কুমার নিজেই বলেছেন যে বিহারের বাইরে দল অস্তিত্বহীন। অতএব তাঁর উচিত বিহারের জন্য একটা নতুন দল গড়ে নেওয়া। যে দলটা জাতীয় রাজনীতিতে রয়েছে, সেই দলের দখল নেওয়ার চেষ্টা নীতীশের করা উচিত নয়।’’