রেলের তুলনায় সড়কপথে প্রায় এক ঘণ্টা আগে পৌঁছনো যায় গন্তব্যে। তাই কালকা-শিমলা টয়ট্রেন সফরের রোমাঞ্চকে পিছনে ফেলে সড়কপথই বেছে নিচ্ছেন অনেকে। এই অবস্থায় বিমুখ পর্যটকদের ফিরিয়ে আনতে এ বার আঁকাবাঁকা খাড়াই পথে টয়ট্রেনের গতি বাড়াতে চাইছে রেল।
ঐতিহ্যবাহী কালকা-শিমলা পথে টয়ট্রেন চালু হয় ১৯০৩ সালে। তখন থেকে এ-পর্যন্ত ৯৬.৬ কিলোমিটার ‘ন্যারো গেজ’ রেলপথে কখনও ট্রেনের গতি ঘণ্টায় ২৫ কিলোমিটার ছাড়ায়নি। কালকা থেকে ছাড়ার পরে ১৮টি স্টেশন পেরিয়ে শিমলায় পৌঁছতে সময় লাগে প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা। গাড়ি কিংবা ছোট বাসে একই দূরত্ব অতিক্রম করতে সময় লাগে সাড়ে চার ঘণ্টা। বাসে খরচও পড়ে ট্রেনের তুলনায় কম। ফলে বাসে বা ছোট ছোট দলে গাড়িতেই কালকা থেকে শিমলা যেতে ইদানীং বেশি পছন্দ করছেন পর্যটকেরা। ছোট গাড়িতে যাতায়াতের ক্ষেত্রে পছন্দসই জায়গায় ইচ্ছেমতো দাঁড়ানোর সুযোগও রয়েছে। এ-হেন সড়কপথের সঙ্গে প্রতিযোগিতা চালিয়ে যাওয়ার তাগিদে টয়ট্রেনের গতি বাড়িয়ে ঘণ্টায় অন্তত ৩৫ কিলোমিটারে নিয়ে যেতে চাইছেন রেলকর্তারা।
পরিস্থিতি সামাল দিতে মাস দুয়েক আগে ওই পথে ‘হপ-অন হপ-অফ’ পরিষেবা চালু করেন রেল-কর্তৃপক্ষ। একই টিকিটে দিনের মধ্যে যতবার খুশি যে-কোনও টয়ট্রেনে উঠে যাতায়াত করার সুবিধে রয়েছে এই ব্যবস্থায়। পর্যটকদের কাছে ট্রেনযাত্রার আকর্ষণ বাড়াতে সম্প্রতি কাচের দেওয়াল ও ছাদ দেওয়া বাতানুকূল ‘ভিস্তা-ডোম’ কোচও চালু করেছেন রেল-কর্তৃপক্ষ। কিন্ত এত কিছুর পরেও যাত্রী কমতে থাকার প্রবণতায় পুরোপুরি রাশ
টানা যায়নি।
প্রায় ৯৬ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথে ১০২টি সুড়ঙ্গ, ৮৮৯টি সেতু এবং ৯০০-র বেশি বাঁক রয়েছে। যা কোথাও কোথাও খুবই তীক্ষ্ণ। রেলের গবেষণা সংস্থা ‘রিসার্চ ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অর্গানাইজেশন’ (আরডিএসও)-কে এই সমস্যার সমাধানসূত্র খুঁজতে বলা হয়েছে।
কালকা-শিমলা ছাড়াও ভারতে দার্জিলিং, নীলগিরি, মাথেরন এবং কাংড়া উপত্যকায় টয়ট্রেন রয়েছে। সব ক্ষেত্রেই ট্রেনের গতিবেগ কমবেশি ২৫ কিলোমিটারের মধ্যে।