রোগীর মৃত্যু ঘিরে শারীরিক নিগ্রহের প্রতিবাদে রাস্তায় নামলেন শিলচরের চিকিৎসকরা। সঙ্গে বেসরকারি হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীরাও। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দোষীদের গ্রেফতারের দাবি করেছেন তাঁরা। না হলে শনিবার সমস্ত বেসরকারি হাসপাতাল, প্যাথলজি, রেডিওলজি সেবা ২৪ ঘণ্টার জন্য বন্ধ রাখার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত ১৬ মে। শিলচরের একটি নার্সিংহোমে অস্ত্রোপচারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রাণ হারান উধারবন্দের বকুলরানি শীল। তাঁর পরিবারের লোকেদের অভিযোগ, চিকিৎসার গাফিলতি ও উদাসীনতার জন্যই মৃত্যু হয়েছে ৬০ বছর বয়সী ওই মহিলার। অভিযোগ, তাঁরা সেখানে ভাঙচুর চালান। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরাও শারীরিক নিগ্রহের শিকার হন। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। পরে জানা যায়, হাসপাতালটির লাইসেন্স নেই। অতিরিক্ত জেলাশাসক অসীমকুমার ভট্টাচার্য অন্য রোগীদের সরিয়ে নিয়ে হাসপাতালটি ‘সিল’ করে দেন। স্বাস্থ্য বিভাগের যুগ্ম সঞ্চালক সুদীপজ্যোতি দাস বিষয়টি তদন্ত করে দেখার জন্য পুলিশে এজাহার দিয়েছেন। অন্য দিকে, নার্সিংহোমের কর্ণধার চিকিৎসক বিভাবসু চৌধুরীও সদর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। তিনি জানান, অস্ত্রোপচার সংক্রান্ত সমস্যায় নয়, হৃদরোগে মারা গিয়েছিলেন বকুলরানি। অহেতুক একদল উত্তেজিত জনতা হাসপাতালে ভাঙচুর চালায়। লাইসেন্স নিয়ে তাঁর বক্তব্য, পুরসভার অনুমতিপত্র থেকে অন্য সমস্ত কাগজপত্র তাঁর কাছে রয়েছে। ওই সবের ভিত্তিতে ২০১৩ সালে স্বাস্থ্য বিভাগে লাইসেন্সের আবেদন জমা করেছেন। রোগীর মৃত্যুর তদন্ত দাবি করে বকুলরানি শীলের পরিবার থেকেও পুলিশে এজাহার দেওয়া হয়েছে।
‘ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের’ শিলচর শাখা ও ‘অল আসাম নন-গভর্নমেন্টাল হেলথ এস্টাবলিসমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন’-এর বরাক ভ্যালি জোনের কর্তাদের দাবি, চিকিৎসক ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের নিগ্রহকারীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করতে হবে। দুই সংগঠনের পক্ষ থেকে আজ মৌন মিছিল বের করা হয়। শিলচর সিভিল হাসপাতাল থেকে মিছিল বের হয়ে আসে জেলাশাসকের কার্যালয়ের সামনে। অতিরিক্ত জেলাশাসক এম কে দাসের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের দাবির কথা জানিয়ে দেন। আজ শিলচরে ব্যক্তিগত চেম্বার বন্ধ রাখেন ডাক্তাররা। তবে লাইসেন্স ছাড়া হাসপাতাল চালানো নিয়ে ডাক্তার বা স্বাস্থ্যকর্মীদের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।