এ বার রাস্তাঘাট নয়, অন্য ২৩টি প্রস্তাব বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করতে তৎপর শিলচরের বিধায়ক দিলীপকুমার পাল। তার মধ্যে ১৯টি একেবারেই নিজের এলাকার জন্য। বাকি চারটি বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার হিসেবে। ভুবন শৈবতীর্থ, খাসপুর রাজবাড়ি, শনবিল এবং তেজপুরে বিষ্ণু রাভার সমাধিস্থলের উন্নয়নেও বাজেটে অর্থবরাদ্দের আর্জি জানিয়েছেন দিলীপবাবু।
তিনি বলেন, ‘‘রাস্তার জন্য টাকা বরাদ্দ হতেই অন্য সব ব্যাপারে চিন্তাভাবনার অবকাশ মিলল। এরই মধ্যে সরকার শিলচরের প্রায় সমস্ত সড়ক সংস্কারের জন্য অর্থ মঞ্জুর করেছে। কিছু রাস্তার প্রস্তাবে দুই-তিন দিনের মধ্যে অনুমোদন মিলবে।’’
তিনি জানান, পূর্ত দফতরের জন্য স্বাভাবিক নিয়মেই বাজেটে তহবিল নির্দিষ্ট থাকবে। জেলার মানুষ হিসেবে মন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য সেই তহবিল থেকে এই অঞ্চলে প্রয়োজনীয় কাজ করবেন, তা নিয়ে আশাবাদী দিলীপবাবু। তাই এখন তাঁর ভাবনা, অন্যান্য প্রকল্প নিয়ে। আগামী বাজেটে কত বেশি প্রকল্পে অর্থবরাদ্দ করা যায়।
দিলীপবাবু বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন শিলচর জেলা গ্রন্থাগার ও প্রেক্ষাগৃহের উন্নয়নে। অনেক দিন ধরে গ্রন্থাগার ও প্রেক্ষাগৃহের একেবারে দৈন্যদশা। ছাদ থেকে জল পড়ে। পলেস্তারা খসে পড়ছে। একে সুদৃশ্য দালানবাড়িতে রূপান্তরের জন্য জেলা প্রশাসন আগেই প্রস্তাব পাঠিয়েছিল। দিলীপবাবুর আশা, এ বছরের বাজেটে তার জন্য আলাদা অর্থ বরাদ্দ সম্ভব হবে। তিনি সে জন্য ৩০ কোটি টাকা চেয়েছেন।
অন্যান্য প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে নিউ শিলচরের জন্য প্রেক্ষাগৃহ ও খেলার মাঠ, শিলচর কলেজের পরিকাঠামোগত উন্নয়ন, সিভিল হাসপাতাল, সুন্দরীমোহন সেবাসদন ও কাছাড় ক্যানসার হাসপাতালের উন্নতি, রাঙ্গিরখালের সংস্কার, নর্মাল স্কুলের উন্নয়ন। রামনগরের অশ্ব ক্ষুরাকৃতি হ্রদকে পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় করে তোলার জন্যও তিনি অনুরোধ করেছেন। চেয়েছেন শিলচরের জন্য একটি ট্রেড সেন্টারও।
রাজ্যের অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ১০ জানুয়ারি শিলচরে আসছেন। শিলচর মেডিক্যাল কলেজের ‘চাইল্ড অ্যান্ড মাদার ইউনিট’-এর উদ্বোধন করবেন। সেই দিন এই সব প্রকল্প নিয়ে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর আলোচনা হবে।
পূর্তমন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্যের সঙ্গে শিলচরের রাস্তা সংস্কার নিয়ে মতান্তরের কথা উড়িয়ে দেন ডেপুটি স্পিকার দিলীপকুমার পাল। তিনি বরং পরিমলবাবুর প্রশংসা করেন। দিলীপবাবু জানান, পরিমলবাবুর দক্ষতা নিয়ে প্রশ্নের অবকাশ নেই। বৃষ্টির মরসুম শেষ হওয়ায় এখন সব দিকে কাজ চলছে।
আগামী বর্ষার আগে সব সড়কে সংস্কারের কাজ শেষ হবে। বছর দু’য়েকের মধ্যে বরাক উপত্যকার রাস্তাঘাটের চেহারা বদলে যাবে বলে তিনি আশাপ্রকাশ করেন।
দলে এই সময়ে কোনও বিরোধ নেই বোঝাতে তিনি এ দিন পাশে বসান জেলা বিজেপির বিদায়ী সভাপতি কৌশিক রাই ও নবনিযুক্ত সভাপতি উদয়শঙ্কর গোস্বামীকে। ছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কবীন্দ্র পুরকায়স্থও। ঐক্যের বার্তা শোনাতে গিয়ে জানান, রাজ্য কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাজদীপ রায়েরও থাকার কথা ছিল। কিন্তু লালায় বিজেপি-র পুরবোর্ড হতে চলেছে। সে জন্য দলীয় নির্দেশে তিনি সেখানে ছুটে গিয়েছেন।