জুতোর বড় শখ! অথচ, অনেক দিন তা কেনা হয়নি। তাই ফিরতি পথে জুতো কেনার ইচ্ছের কথাটা আর চেপে রাখতে পারেনি মনোজ। সঙ্গে থাকা পুলিশকর্মীদের কাছে সেই ইচ্ছের কথা প্রকাশ করে ফেলে সে। অন্য কোনও আবদার তো নয়, সামান্য জুতো! কোনও একটা শপিং মলে গেলেই তা পাওয়া যেতে পারে। তাই পুলিশকর্মীরা তাকে নিয়ে হাজির হন কাছাকাছির একটি মলের এক জুতোর দোকানে। কেনাও হল জুতো। মনোজ খুশি। আর তার ইচ্ছেপূরণ করতে পেরে খুশি পুলিশকর্মীরাও।
কিন্তু, তখনও তাঁরা স্বপ্নেও ভাবেননি এই কারণে তাঁদের চাকরি যেতে পারে! মঙ্গলবার দিল্লি পুলিশের এক উচ্চপদস্থ পুলিশকর্তা জানিয়ে দিলেন, বিচারাধীন এক বন্দিকে শপিং মলে নিয়ে গিয়ে জুতো কিনে দেওয়ায় দিল্লি পুলিশের সশস্ত্র বাহিনীর ৬ পুলিশকর্মীকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
কে এই মনোজ?
পুলিশের দাবি, কুখ্যাত গ্যাংস্টার। পুরো নাম মনোজ বক্করবালা। একটি মামলায় অভিযুক্ত মনোজ আপাতত তিহাড় জেলে বন্দি। আগরার একটি আদালতে তার বিচার চলছে। গত ২৭ অগস্ট সেই মামলার শুনানিতে মনোজকে তিহাড় থেকে ওই আদালতে নিয়ে গিয়েছিলেন ওই ছয় পুলিশকর্মী। দিল্লি পুলিশের তিন নম্বর ব্যাটেলিয়নের ওই পুলিশকর্মীদের কাজ, সংশোধনাগার থেকে আসামিদের নিরাপত্তা-সহ আদালতে নিয়ে যাওয়া এবং শুনানি শেষে তাদের ফের জেলে ফিরিয়ে আনা। পুলিশের ওই আধিকারিক জানিয়েছেন, এই প্রথম নয় এর আগেও কর্তব্যে গাফিলতির কারণে ওই ছয় কর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল। বিভাগীয় তদন্ত শেষে এ বার তাঁদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
কিন্তু, ঘটনার কথা জানাজানি হল কী ভাবে?
পুলিশ সূত্রে খবর, শপিং মলের যে দোকানে জুতো কিনতে গিয়েছিল মনোজরা সেই দোকানের মালিক তাদের কথাবার্তা শুনে বিষয়টি আঁচ করতে পারেন। তার পর জিজ্ঞেস করায় মনোজ নিজের পরিচয় দেয় তাঁকে। এর পর জুতো কিনে বেরিয়ে যাওয়ার পর ওই দোকানদার সংবাদমাধ্যমে কাজ করা তাঁর কয়েক জন পরিচিতকে এ কথা জানান। ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসায়, বিভাগীয় তদন্ত শুরু করে দিল্লি পুলিশ। ঘটনা প্রমাণিত হওয়ায়, ওই ছয় পুলিশকর্মীকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে।