Uttarakhand Helicopter Crash

কখনও গাড়িতে ধাক্কা খাচ্ছে চপারের ব্লেড, কখনও ভেঙে যাচ্ছে লেজ! চারধাম রুটে ছয় সপ্তাহে পাঁচ কপ্টার দুর্ঘটনা

রবিবার কেদারনাথ থেকে যাত্রীদের নিয়ে গুপ্তকাশীতে ফেরার পথে কপ্টার ভেঙে পড়েছে। মৃত্যু হয়েছে পাইলট-সহ সাত জনের। মৃতদের মধ্যে রয়েছে এক শিশুও।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০২৫ ১২:৫৭
Share:

উত্তরাখণ্ডের চারধাম রুটে নিয়মিত যাতাযাত করে হেলিকপ্টার। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

উত্তরাখণ্ডের চারধাম রুটে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা যেন থামতেই চাইছে না। গত ছ’সপ্তাহে পর পর পাঁচ বার দুর্ঘটনার কবলে পড়ল চপার। কখনও যাত্রিবাহী কপ্টার কখনও রোগী পরিবহণের এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স কোনও না কোনও বিপর্যয়ের মুখোমুখি হচ্ছে। সেই তালিকায় সাম্প্রতিকতম সংযোজন রবিবারের দুর্ঘটনা। যেখানে কেদারনাথ থেকে যাত্রীদের নিয়ে গুপ্তকাশীতে ফেরার পথে কপ্টার ভেঙে পড়েছে। মৃত্যু হয়েছে পাইলট-সহ সাত জনের। মৃতদের মধ্যে রয়েছে এক শিশুও। কী ভাবে এই দুর্ঘটনা ঘটল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, খারাপ আবহাওয়ার কারণে নিয়ন্ত্রণ হারান চালক। দুর্ঘটনার পরে ভেঙে পড়া হেলিকপ্টারের কিছু ছবি এবং ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল। তাতে দেখা গিয়েছে, কপ্টারের পিছন দিকের লেজের অংশ ভেঙে বেঁকে গিয়েছে। ঘুরছে ব্লেড। জমিতে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে কপ্টারের মাথার অংশ (এই ছবি বা ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম)।

Advertisement

এর আগে গত ৮ মে চারধাম রুটে কপ্টার দুর্ঘটনায় ছ’জনের মৃত্যু হয়। যাত্রীদের নিয়ে কপ্টারটি গঙ্গোত্রীর দিকে যাচ্ছিল। মাঝপথে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তা উত্তরকাশীতে গঢ়ওয়াল হিমালয়ের খাদে পড়ে যায়। সকাল ৮টা নাগাদ এই দুর্ঘটনায় পাইলট-সহ ছ’জনের মৃত্যু হয়। তবে কপ্টারের এক জন আরোহী বেঁচে গিয়েছিলেন। তিনি অন্ধ্রপ্রদেশের বাসিন্দা। চিকিৎসার জন্য আকাশপথেই তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় ঋষিকেশে।

এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার মাত্র চার দিন পরে বদ্রীনাথে আরও একটি কপ্টার দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। তবে অল্পের জন্য সে বার রক্ষা পান আরোহীরা। বদ্রীনাথের হেলিপ্যাড ছাড়ার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিলেন পাইলট। আবার কপ্টারটিকে হেলিপ্যাডে নামানোর চেষ্টা করেন তিনি। তখনই কপ্টারের ব্লেডগুলি ধাক্কা খায় পাশে দাঁড় করানো গাড়িতে। কপ্টারের আরোহী এবং ঘটনাস্থলে উপস্থিত লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তবে কারও আঘাত লাগেনি। ঘটনার গুরুত্ব বিচার করে কপ্টার সংস্থার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হয়।

Advertisement

১৭ মে চারধাম রুটে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে একটি এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স। এমস ঋষিকেশ থেকে রোগীকে আনতে ওই চপারটি যাচ্ছিল কেদারনাথে। কেদারের হেলিপ্যাডে নামার সময়ে চপারের লেজ মাটির সঙ্গে ধাক্কা খায়। তীব্র ঝাঁকুনি হয় এর ফলে। কেদার হেলিপ্যাডে চপারটি ‘ক্র্যাশ ল্যন্ড’ করে। ভিতরে ছিলেন পাইলট, এক চিকিৎসক এবং এক নার্স। তাঁরা কোনও রকমে অক্ষত অবস্থায় বেরিয়ে আসতে পেরেছিলেন। তবে যে ভাবে চপারের লেজের সঙ্গে মাটির সংঘর্ষ হয়েছিল, তাতে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত।

৭ জুন একটি বেসরকারি সংস্থার হেলিকপ্টার রুদ্রপ্রয়াগের বডাসুতে ‘ক্র্যাশ ল্যান্ড’ করে। ওই কপ্টারে পাঁচ জন পুণ্যার্থী ছিলেন। তাঁরা যাচ্ছিলেন কেদারনাথের উদ্দেশে। অবতরণের সময়ে এই কপ্টারের লেজের অংশ ভেঙে যায়। যদিও কোনও রকমে কপ্টারটিকে নিরাপদে হেলিপ্যাডে নামিয়ে দেন পাইলট।

পর পর কপ্টার দুর্ঘটনায় উদ্বেগ বাড়ছে। কেদার-বদ্রীর দুর্গম পথে পুণ্যার্থীদের অনেকেই কপ্টার পরিবহণের উপর ভরসা রাখেন। নিয়মিত এই রুটে হেলিকপ্টার যাতাযাত করে। রবিবার সাত জনের মৃত্যুর পর অসামরিক বিমান পরিবহণ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিজিসিএ এই রুটে কপ্টার চলাচল কমিয়ে দিয়েছে। চলছে নজরদারি। কী ভাবে এই ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো যায়, কোথায় সমস্যা হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখছেন কর্তৃপক্ষ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement