হাজারিবাগে বুরারি! মৃত ৬

দিল্লির বুরারির পরে গণআত্মহত্যা এ বার ঝাড়খণ্ডের হাজারিবাগে! আজ সকালে একই পরিবারের ছ’জনের দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মৃতদের মধ্যে দু’জন পুরুষ, দু’জন মহিলা এবং দু’টি শিশু।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রাঁচী শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৮ ০৪:০০
Share:

প্রতীকী ছবি।

দিল্লির বুরারির পরে গণআত্মহত্যা এ বার ঝাড়খণ্ডের হাজারিবাগে! আজ সকালে একই পরিবারের ছ’জনের দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মৃতদের মধ্যে দু’জন পুরুষ, দু’জন মহিলা এবং দু’টি শিশু। হাজারিবাগের সদর থানার মুনগা বাগিচার খাজাঞ্চি তালাবের কাছে সিডিএম অ্যাপার্টমেন্টে এই ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের নাম মহাবীর মাহেশ্বরী (৭০), কিরণ মাহেশ্বরী (৬৫), নরেশ মাহেশ্বরী (৪০), প্রীতি মাহেশ্বরী (৩৮), আমন মাহেশ্বরী (৮) এবং অনভি মাহেশ্বরী (৬)। প্রাথমিক ভাবে একে আত্মহত্যা মনে করা হলেও হত্যার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না তদন্তকারীরা।

Advertisement

আমনের গলা কেটে এবং অনভিকে বিষ দিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। ঘটনাস্থল থেকে তিনটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে পুলিশ। সেগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে, সুইসাইড নোটে লেখা রয়েছে, দোকান বন্ধ, অসুস্থতা, পাওনাদারদের টাকা দিতে না পারা এবং ঋণের বোঝার জন্যই আত্মহত্যা করতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। আমন মাহেশ্বরীকে হত্যা করার কথা হয়েছে বলেও নোটে লেখা রয়েছে। হাজারিবাগের ডিএসপি চন্দন বৎস বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে আত্মহত্যাই মনে হচ্ছে। ঘটনাস্থল থেকে তিনটি সুইসাইড নোট পাওয়া গিয়েছে। ফরেনসিক দলকে ডাকা হয়েছে। ফরেনসিক রিপোর্টের ভিত্তিতেই তদন্ত শুরু করা হবে।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সিবিএম অ্যাপার্টমেন্টের ৩০৩ এবং ৩০৪ ফ্ল্যাটে নরেশ মাহেশ্বরীর গোটা পরিবার থাকত। বাবা, মা, স্ত্রী এবং দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে সংসার ছিল নরেশবাবুর। তিনি পারিবারিক শুকনো ফলের ব্যবসা দেখাশোনা করতেন। কিন্তু ইদানীং সেই ব্যবসা ভাল যাচ্ছিল না। বাজারে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার দেনা ছিল বলেও জানতে পেরেছে পুলিশ। পড়শিরা জানিয়েছেন, সে কারণেই টেনশনে ছিলেন নরেশবাবু। শনিবার রাতে পরিবারের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুনতে পেয়েছিলেন পড়শিরা। রবিবার সকালে অ্যাপার্টমেন্টের কমপাউন্ডে নরেশ মাহেশ্বরীর দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়।

Advertisement

নরেশবাবুর পড়শি কুলদীপ কৃষ্ণা পুলিশকে জানিয়েছেন, আজ সকালে তাঁর মা প্রথমে নীচে নরেশকে পড়ে থাকতে দেখেন। প্রথমে মনে করা হয় জ্ঞান হারিয়ে পড়ে রয়েছেন। সকলকে ডেকে নীচে এসে দেখেন তাঁর শ্বাস চলছে না। এর পরেই পুলিশ এবং নরেশের আত্মীয়দের খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে ফ্ল্যাটের দরজা খুলে ঢোকে। একটি ঘরে কিরণদেবীর ঝুলন্ত দেহ এবং প্রীতিদেবীর দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। প্রীতিদেবীকে হত্যা করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। অন্য ঘর থেকে মহাবীর মাহেশ্বরীর ঝুলন্ত দেহ এবং আমনের দেহ বিছানা থেকে উদ্ধার করা হয়। আনভির দেহ ছিল সোফায়। ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন স্থানীয় বিধায়ক মণীশ জায়সবাল। তিনি বলেন, ‘‘পরিবারটা এ ভাবে শেষ হয়ে গেল, মানতেই পারছি না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন