পশ্চিমবঙ্গের দৃষ্টান্ত তুলে ধরে কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী স্মৃতি ইরানি আজ বোঝালেন, শিক্ষাক্ষেত্রে তিনি কোনও রাজনীতি করছেন না।
লোকসভায় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের বাজেট অনুদান সংক্রান্ত আলোচনার জবাব দিতে গিয়ে স্মৃতি আজ গোড়া থেকে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন। যা দেখে বিরোধীরা তো বটেই, তাঁর দল বিজেপি’র নেতারাও বিস্মিত। অনেকের মতে, গত ক’দিন ধরে দলের ভিতরে স্মৃতিকে যে ভাবে কোণঠাসা হতে হচ্ছে, তাঁর মন্ত্রক নিয়ে যে ভাবে সমালোচনার ঝড় বয়ে গিয়েছে, এটা তারই মোকাবিলার চেষ্টা।
আর তা করতে গিয়ে তৃণমূলের সুগত বসু, সৌগত রায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো একাধিক সাংসদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডাতেও জড়ান স্মৃতি। এমনকী মাঝে বাংলাতেও বলেছেন, ‘‘আপনাদের কথা চুপ করে শুনেছি। এ বার আমার কথা সহ্য করতে হবে।’’ সমালোচনার জবাব দিতে গিয়ে তিনি পশ্চিমবঙ্গকেই ঢাল করেছেন। বলেছেন, ‘‘শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ যে সমস্যার মুখে পড়েছিল, তার নিরসনে আমি নিজে মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কাজ করেছি। যে শিশুরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যায়, তারা ভোটব্যাঙ্ক নয়।’’ এর পরেই তিনি চলে যান বিশ্বভারতী প্রসঙ্গে। জানান, বিশ্বভারতীর উপাচার্যের বিরুদ্ধে ওঠা বিভিন্ন অভিযোগ সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিতে মন্ত্রক যে প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছিল, তার সদস্য বাছাই করতে গিয়ে রাজনীতির রং দেখা হয়নি। ‘‘সেখানে বি বি দত্ত রয়েছেন। তিনি কংগ্রেস জমানায় রাজ্যসভার সদস্য হয়েছিলেন, উত্তর-পূর্ব কংগ্রেসের কো-অর্ডিনেশন কমিটির সাধারণ সম্পাদকও ছিলেন।’’— উদাহরণ দেন স্মৃতি। এ-ও জানান, বিশ্বভারতী সংক্রান্ত সেই রিপোর্ট মন্ত্রকে জমা পড়েছে। শিক্ষাক্ষেত্রে নিরপেক্ষতা নিয়ে মন্ত্রীর আরও দাবি, ‘‘আইসিএইচআরে রয়েছেন পূরবী রায়, যিনি বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ তো বটেই, সিপিআই নেতা কল্যাণ রায়ের স্ত্রীও।’’
নিজের বক্তব্য পেশ করার সময়ে বলবার সময় স্মৃতি আজ এতটাই আগ্রাসী ছিলেন যে, পরে সৌগত রায়, সুগত বসুরা তাঁর বাচনভঙ্গি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। জবাবে স্মৃতি বলেন, ‘‘আমি ব্যক্তিগত আগ্রাসন দেখাচ্ছি না। কিন্তু কেউ বিশেষজ্ঞ বলেই সংসদকে বিভ্রান্ত করবেন, সেটাও ঠিক নয়।’’