বরফে ঢেকেছে চারপাশ। রাস্তায় নেমে পড়েছেন পর্যটকেরা। শনিবার শিমলায়। ছবি: পিটিআই।
হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ডে তুষারপাত। পারদ পতন গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে।
উত্তর ভারতের পাহাড়ে বরফ প়ড়ার পিছনে দায়ী জোরালো পশ্চিমী ঝঞ্ঝা (ভূমধ্যসাগরীয় এলাকা থেকে বয়ে আসা ঠান্ডা, ভারী হাওয়া)। আর উত্তুরে হাওয়া জোরালো হওয়ায় ঠান্ডা বাড়ছে দক্ষিণবঙ্গে। আবহবিদেরা জানান, উত্তর ভারতের পাহাড়ের তুষারপাতের সঙ্গে কলকাতার পারদ পতনের সরাসরি সম্পর্ক নেই। তবে এই জোড়া ঘটনার মধ্যেই আম-বাঙালির ইচ্ছেপূরণের ইঙ্গিত রয়েছে।
আবহবিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, ঝঞ্ঝার জেরে গোটা উত্তর ভারত জুড়ে জোরালো শীতের পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। তার প্রভাব পড়বে এ রাজ্যেও। মরসুমের গোড়া থেকেই বারবার মুখ থুবড়ে পড়েছিল শীত। পৌষের শেষে এসে এ বার সে কিছুটা গা-ঝা়ড়া দিয়ে উঠে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিচ্ছে।
শনিবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা কি না এ সময়ের স্বাভাবিক। সারা দিন ধরেই মিলেছে উত্তুরে হাওয়ার হিমেল খোঁচা। শীতকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা অবশ্য স্বাভাবিকের নীচে থাকাটাই দস্তুর। ফলে সে দিক থেকে পারদের এই অবস্থান আহামরি কিছু নয়। কিন্তু এ বছর শীতের যা রকমসকম, তাতে রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকে পৌঁছনোটাই শীত-প্রত্যাশীদের কাছে অনেক বড় পাওনা। পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে অবশ্য ঠান্ডা ক্রমশ জাঁকিয়ে বসছে। এ দিন শ্রীনিকেতন, আসানসোল, বর্ধমান, পুরুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯-১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে ঘোরাফেরা করছে।
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল (পূর্বাঞ্চল) সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, আগামী দিন দুয়েক তাপমাত্রা এমনই থাকবে। তার পরে সামান্য বাড়লেও শীতের ছন্দপতনের আশঙ্কা তেমন নেই।
আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, এ বছর উত্তুরে হাওয়ার তেমন জোর ছিল না। ফলে সাগর থেকে জোলো হাওয়া ঢুকে তাপমাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছিল। রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে ৩-৪ ডিগ্রি উপরে উঠে গিয়েছিল। গত ক’দিনে উত্তুরে হাওয়ার সক্রিয়তা বাড়তেই পারদ নামতে শুরু করে।
এ রাজ্যের পারদ পতনের পিছনে যেমন জোরালো উত্তুরে হাওয়ার ভূমিকা রয়েছে, তেমনই জোরালো পশ্চিমী ঝঞ্ঝার প্রভাবেই তুষারপাত শুরু হয়েছে উত্তর ভারতের পাহাড়ে। হাওয়া অফিস সূত্রের খবর, মঙ্গলবার একটি ঝঞ্ঝা আফগানিস্তান, পাকিস্তান হয়ে কাশ্মীর দিয়ে এ
রাজ্যে ঢুকেছিল। বৃহস্পতিবার আরও একটি ঝঞ্ঝা ঢুকেছে। এবং দু’টি ঝঞ্ঝা মিশে জোরালো একটি ঝঞ্ঝা তৈরি করেছে। তার ফলেই এমন তুষারপাত। ঝঞ্ঝাটি উত্তর ভারত থেকে সরে এলে সেখানে জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়বে। তার প্রভাবে কনকনে ঠান্ডা নিয়ে উত্তুরে হাওয়া বয়ে আসতে পারে এ রাজ্যেও।