হজে পদপিষ্ট হয়ে আহত এ রাজ্যের পুণ্যার্থীরাও

মক্কার কাছে মিনায় পুণ্যার্থীদের পদপিষ্ট হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়েছিল বৃহস্পতিবার থেকেই। রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেকে হজে গিয়েছেন। তাঁদের বাড়ির লোকের উদ্বেগ ক্রমশ বাড়ছিল। শুক্রবার ইদের আয়োজন তাই শুরু হয়েছিল উৎকণ্ঠার মধ্যেই। তার পরেই খবর আসতে থাকে, হজে আহত পুণ্যার্থীদের মধ্যে রয়েছেন এ রাজ্যের বাসিন্দারাও।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৩:৩৯
Share:

মৃতদেহের স্তূপ। ছবি: গেটি ইমেজেস।

মক্কার কাছে মিনায় পুণ্যার্থীদের পদপিষ্ট হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়েছিল বৃহস্পতিবার থেকেই। রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেকে হজে গিয়েছেন। তাঁদের বাড়ির লোকের উদ্বেগ ক্রমশ বাড়ছিল। শুক্রবার ইদের আয়োজন তাই শুরু হয়েছিল উৎকণ্ঠার মধ্যেই। তার পরেই খবর আসতে থাকে, হজে আহত পুণ্যার্থীদের মধ্যে রয়েছেন এ রাজ্যের বাসিন্দারাও।

Advertisement

সৌদি আরবের জেড্ডা থেকে ভারতের কনসাল জেনারেল বি এস মুবারক জানিয়েছেন, রাজ্যের দু’জন পুণ্যার্থী পদপিষ্ট হয়ে আহত হয়েছেন। তাঁদের নাম রহিছা বেগম ও আব্দুল কায়ুম। রহিছা বেগমের বাড়ি দক্ষিণ দিনাজপুরের কুশমণ্ডি থানার আমিনপুরের চাকধাপাড়া এলাকায়। আব্দুল কায়ুমের বাড়ি উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর এলাকায়। তাঁরা দু’জনেই সৌদির হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

তবে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ইসলামপুরের উকিলপাড়ার বাসিন্দা আব্দুল কায়ুম দুর্ঘটনায় আহত হলেও এখন সুস্থ। তাঁর ভাই পেশায় ওষুধ ব্যবসায়ী সাদেক আলি শুক্রবার বলেন, ‘‘দাদার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তিনি ভালই রয়েছেন। তবে ইসলামপুর থেকে একই নামের অন্য কেউ হজে গিয়ে আহত হয়ে পড়েছেন কি না, জানি না।’’

Advertisement

এ ছাড়া বিভিন্ন এলাকায় আরও কয়েকটি পরিবারের দাবি, তাঁদের আত্মীয়রাও আহত হয়েছেন। কারও কারও খোঁজ মিলছে না। কিন্তু সরকারি ভাবে সেই সংক্রান্ত খবর এখনও পরিবারকে জানানো হয়নি। রহিছা বেগমের বাড়ির লোকেরাই যেমন জানিয়েছেন, রহিছা বৃদ্ধ স্বামী হামিজুদ্দিন আহমেদের সঙ্গে হজে গিয়েছিলেন। রহিছার আহত হওয়ার খবর মিলেছে। কিন্তু হামিজুদ্দিনের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তাঁদের মেজ ছেলে মোতাহার আহমেদ জানান, দুপুর পৌনে ১টা নাগাদ কলকাতার হজ কমিটি থেকে ফোন আসে। তাঁর মা আহত হয়ে মিনার একটি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন বলে জানানো হয়। মোতাহার বলেন, ‘‘কিন্তু বাবার কোনও খবর পাইনি। মোবাইলে বারবার ফোন করার চেষ্টা করছি। কিন্তু ফোন পাচ্ছি না।’’ তবে মোতাহারকে আশা জোগাচ্ছেন গ্রামের লোকজন। তাঁর কথায়, ‘‘গ্রামের অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা বলছেন, বাবা সুস্থই রয়েছেন। না হলে সরকার ঠিকই তাঁর খবর দিত।’’

ইসলামপুরের কাছেই চোপড়া থানার চিতলঘাটার বাসিন্দা মহম্মদ ইশাকও হজে গিয়েছেন। তিনিও পদপিষ্ট হয়ে আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন তাঁর পরিবারের লোকেরা। তাঁর ছেলে পেশায় শিক্ষক সাদ্দাম আলি বলেন, ‘‘দুর্ঘটনার পরে বাবা প্রথমে দলছুট হয়ে গিয়েছিলেন। পরে বাবার সঙ্গে সরাসরি ফোনে কথা হয়েছে। তিনি আহত হয়েছিলেন। তবে এখন ভাল আছেন। হাসপাতাল থেকে ছাড়াও পেয়ে গিয়েছেন।’’

এই জেলারই আগাপুরের বাসিন্দা আব্দুল আজিজেরও (৬১) হজে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু তিনি দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন নাকি এমনিই অসুস্থ হয়ে মারা গিয়েছেন, সেটা স্পষ্ট নয়। তাঁর ছেলে জহরুলের দাবি, ‘‘পদপিষ্ট হয়েই মারা গিয়েছেন আমার বাবা। কিন্তু সরকারি ভাবে কিছু জানানো হয়নি।’’ আব্দুল আজিজের ভাইপো জিয়াউল হকেরও দাবি, ‘‘কাকার সঙ্গে যাঁরা ছিলেন তাঁরা জানিয়েছেন, তিনি মিনাতে পদপিষ্ট হন। আমরা চাই মক্কার মতো পবিত্র জায়গাতেই তাঁর শেষকৃত্য হোক।’’ কিন্তু সরকারের একটি সূত্রের খবর, দুর্ঘটনার আগেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে আব্দুল ‌আজিজের মৃত্যু হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন