অন্তর্বর্তী সভাপতি হতে নারাজ সনিয়া

মা-ছেলে একসঙ্গে বেরোনোর সময়ে সনিয়াকে সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করেন, ‘‘আপনি অন্তর্বর্তী সভাপতি হচ্ছেন?’’ সনিয়া উত্তর না-দিয়ে হাসেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৯ ০২:১৫
Share:

ছবি: পিটিআই।

রাহুল গাঁধীর উত্তরসূরি খুঁজতে নাজেহাল কংগ্রেস। নেতারা ফের দ্বারস্থ হলেন সনিয়া গাঁধীর— যদি তিনি রাজি হন অন্তর্বর্তী সভাপতি হতে। ‘না’ করে দিলেন সনিয়া। যদিও সংসদে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কিছুই বললেন না। এরই মধ্যে হারের পরে আজই প্রথম সংসদে বক্তৃতা দিলেন রাহুল।

Advertisement

কর্নাটক ও গোয়ায় বিজেপির ‘আগ্রাসনের’ প্রতিবাদে আজ সকালে অন্য বিরোধীদের পাশে নিয়ে সংসদ চত্বরে সনিয়ার সঙ্গে ধর্না দিয়েছেন রাহুল। আর বক্তৃতায় নিজের নির্বাচনী কেন্দ্র ওয়েনাডে কৃষকদের দুর্দশা ও আত্মহত্যার জন্য কাঠগড়ায় তুলেছেন প্রধানমন্ত্রীকে। বলেছেন, ঋণ না-মেটাতে পারলে ব্যাঙ্ক নোটিস দিচ্ছে কৃষকদের। দেনার চাপে দেড় বছরে কেরলে ১৮ জন কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। রাজ্য সরকার ঋণশোধে স্থগিতাদেশ দিলেও রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিচ্ছে না কেন্দ্র। বাজেটেও কৃষকদের জন্য জুতসই পদক্ষেপ নেই। কৃষকদের দেওয়া কথা রাখেননি প্রধানমন্ত্রী।

এই সময়ে লোকসভায় ছিলেন না প্রধানমন্ত্রী। ছিলেন উপনেতা রাজনাথ সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘কৃষকদের দুর্দশা গত ৪-৫ বছরে হয়নি। দীর্ঘ সময় ধরে যাঁরা সরকারে ছিলেন, তাঁদের দৌলতেই হয়েছে। পাঁচ বছরে প্রধানমন্ত্রী যা করেছেন, তা হাজার বছরে হয়নি।’’ শুনে হল্লা শুরু করে কংগ্রেস। কর্নাটক-গোয়া নিয়েও সরব হন সাংসদেরা। কিন্তু স্পিকার তা নিয়ে বলার অনুমতি না-দেওয়ায় কক্ষত্যাগ করেন রাহুল-সনিয়ারা।

Advertisement

মা-ছেলে একসঙ্গে বেরোনোর সময়ে সনিয়াকে সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করেন, ‘‘আপনি অন্তর্বর্তী সভাপতি হচ্ছেন?’’ সনিয়া উত্তর না-দিয়ে হাসেন। তার পর রাহুলের দিকে তাকিয়ে এক সাংবাদিককে উদ্দেশ করে বলেন, ‘‘ওঁকে (সাংবাদিক) সভাপতি করলে কেমন হয়?’’ কংগ্রেস সাংসদদের একাংশের এখনও দাবি, রাহুলের উত্তরসূরি হিসেবে মল্লিকার্জুন খড়্গের পাল্লা ভারী। কিন্তু তাঁর নামে অনেকের আপত্তি। তাই কিছু নেতা সনিয়ার দ্বারস্থ হন। রাজ্যে রাজ্যে যখন বিজেপি ক্ষমতা দখল করতে চাইছে, সেই পরিস্থিতিতে গাঁধী পরিবারকেই নেতৃত্বে চাইছে দলের সিংহভাগ।

কংগ্রেস নেতারা বলছেন, দলত্যাগ ঘটছে বিজেপির প্রলোভনে। এই অবস্থায় সনিয়া নেপথ্যে হস্তক্ষেপ করছেন। কর্নাটকে রামলিঙ্গ রেড্ডি দল ছাড়লেও তাঁর মেয়ে সৌম্যা যাতে দলে থাকেন, সে জন্য কথা বলেছেন সনিয়া। কিন্তু অন্য বিষয়ে তিনি ঢুকতে চাইছেন না। এরই মধ্যে কোষাধ্যক্ষ আহমেদ পটেল কংগ্রেসের পেশাদারদের (পদাধিকারীদের নয়) নতুন কাজ খুঁজে নিতে বলেছেন। মিডিয়া বিভাগের কো-অর্ডিনেটর রচিত শেঠ আজ ইস্তফা দিয়ে বলেছেন, ‘‘দেড় মাস হল, কেউ সভাপতি হলেন না। বিজেপিকে দুষে লাভ নেই, সমস্যা কংগ্রেসে। রাহুল গাঁধীই যখন ইস্তফা দিয়েছেন, আমি পদে থাকব না।’’

হারের পরে এই আহমেদ শিবিরই ডেটা অ্যানালাইটিক্স বিভাগের প্রধান প্রবীণ চক্রবর্তীদের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিল। বিশ্বকাপের মোড়কে প্রবীণ আজ টুইট করেন, ‘ক্যাপ্টেনের নেতৃত্বে ভারত ভাল খেলেও গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে হেরেছে। কিন্তু কেউ টিমের সহযোগীদের দায়ী করেনি।’ এরই মধ্যে ‘ক্যাপ্টেন’ অমরেন্দ্র সিংহ আজ ফের নবীনদের হাতে দায়িত্ব দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছেন নিবন্ধে।

অনেকের মতে, জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া এবং মিলিন্দ দেওরা রাহুলের ইশারাতেই পদত্যাগ করেছেন। রাহুল এঁদের হাতেই দায়িত্ব দিতে চাইছেন। কিন্তু তাতে আহমেদদের আপত্তি। রাহুলের দফতর বলেছে, ‘‘লড়াই থেকে রাহুল হটছেন না। কালও তিনি আমদাবাদ যাবেন আদালতে হাজিরা দিতে। বিজেপি-সঙ্ঘ রাহুলের বিরুদ্ধে কুড়িটির বেশি মামলা করেছে। সব লড়াই রাহুল নিজেই লড়বেন।’’

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন