সনিয়াকে বিশ্রামের পরামর্শ

সনিয়া হাসপাতালেই, টেলিফোনে খোঁজ নিলেন মোদী

গত কালের চেয়ে ভাল আছেন সনিয়া গাঁধী। চিকিৎসকেরা বিশ্রামের পরামর্শ দিয়েছেন তাঁকে। এখনও হাসপাতালেই রয়েছেন কংগ্রেস সভানেত্রী। তবে মোদী সরকারের তৎপরতায় কাল রাতে যেখানে তাঁকে ভর্তি করানো হয়েছিল সেই সেনা হাসপাতালে নয়, রয়েছেন পছন্দের গঙ্গারাম হাসপাতালে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৬ ০২:৪২
Share:

গত কালের চেয়ে ভাল আছেন সনিয়া গাঁধী। চিকিৎসকেরা বিশ্রামের পরামর্শ দিয়েছেন তাঁকে। এখনও হাসপাতালেই রয়েছেন কংগ্রেস সভানেত্রী। তবে মোদী সরকারের তৎপরতায় কাল রাতে যেখানে তাঁকে ভর্তি করানো হয়েছিল সেই সেনা হাসপাতালে নয়, রয়েছেন পছন্দের গঙ্গারাম হাসপাতালে। উদ্বিগ্ন কংগ্রেস শিবিরে এখন কিছুটা স্বস্তি। কিন্তু বারাণসীতে গিয়ে সনিয়ার অসুস্থ হয়ে পড়া থেকে আজকের হাসপাতাল বদল— গোটা পর্বে বারবার যে বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসছে, তা হল নরেন্দ্র মোদীর সৌজন্যের রাজনীতি। ‘ধন্যবাদ’ জানালেও উত্তরপ্রদেশে ভোটের মুখে সনিয়ার দল যা আড়ালে রাখতেই আগ্রহী।

Advertisement

প্রধানমন্ত্রী মোদীর নির্বাচনী কেন্দ্র বারাণসীতে ঝড় তুলতে গিয়েছিলেন প্রধান প্রতিপক্ষ দলের নেত্রী। ঝড় তুলেও দিয়েছিলেন রোড শোয়ে। তা সত্ত্বেও সনিয়ার অসুস্থতার খবর কানে আসতেই শুধু টুইটারে আরোগ্য কামনা করে ক্ষান্ত হননি প্রধানমন্ত্রী। তার আগেই নিজের সচিবালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন, সনিয়া গাঁধীর চিকিৎসার সব রকম ব্যবস্থা যেন সুনিশ্চিত করা হয়। বারাণসীতে কোনও বিমান পাঠানোর প্রয়োজন কি না, তা-ও খোঁজ নিতে বলেন। নিজেও উত্তরপ্রদেশের ভোটে কংগ্রেসের মুখ শীলা দীক্ষিতকে ফোন করে চিকিৎসক ও বিমান পাঠাবেন কি না জানতে চান।

বারাণসী বিমানবন্দরে কাল যখন সনিয়াকে স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে, সেই সময়ে তাঁর তরফে যে বিবৃতি জারি করা হয়েছিল, তাতেও তুলোধোনা করা হয়েছে মোদীকে। কিন্তু রাজনৈতিক বিরোধ যা-ই থাক, সৌজন্যের রাজনীতিতে পিছিয়ে থাকতে চাননি প্রধানমন্ত্রী। বারাণসীর চিফ মেডিক্যাল অফিসার যে কাল সনিয়ার সঙ্গে বিমানে দিল্লি এসেছেন, তার পিছনেও উপরতলার নির্দেশ কাজ করেছে বলেই মনে করা হচ্ছে।

Advertisement

রাতে দিল্লি বিমানবন্দরে নেমে উত্তরপ্রদেশের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা গুলাম নবি আজাদ বলেন, গঙ্গারাম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে সনিয়াকে। কিন্তু বিমানবন্দরে সরকারের দূত জানান, কাছেই প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অধীনে থাকা রিসার্চ অ্যান্ড রেফারেল হাসপাতালে ব্যবস্থা করা হয়ে গিয়েছে।

নবি আজ জানান, সময় বাঁচাতেই সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সনিয়াকে। কারণ, বারাণসী থেকে দিল্লিতে আসার পথে তাঁর শারীরিক অবস্থার আর একটু অবনতি হয়েছিল। মোদী থেমে থাকেননি। আজ সকালে প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পর্রীকরকে তিনি হাসপাতালে গিয়ে সনিয়ার সঙ্গে দেখা করে আসার নির্দেশ দেন।

গত কাল মোদীর টুইটের পর কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ‘ধন্যবাদ’ জানানো হয়েছিল। কিন্তু উত্তরপ্রদেশের তপ্ত রাজনীতির মধ্যে মোদীর সৌজন্যকে বড় করে তুলে ধরতেও চায়নি কংগ্রেস। আজ দুপুরেই সেনা হাসপাতাল থেকে ছুটি করিয়ে নিজের পছন্দের গঙ্গারাম হাসপাতালে চলে গিয়েছেন সনিয়া। প্রয়োজনে গঙ্গারামের চিকিৎসকদের দল সেনা হাসপাতালে গিয়ে দেখতে পারতেন সনিয়াকে। কেন হাসপাতাল বদল তা নিয়ে ধোঁয়াশা রেখেই অসুস্থ সনিয়া আজ গঙ্গারামে চলে যান। কংগ্রেসের এক নেতা যুক্তি দেন, আসলে অনেক দিন ধরেই গঙ্গারামে চিকিৎসা করাচ্ছেন সনিয়া। আগেও সেখানকার পালমোনোলজি বিভাগের চিকিৎসক অরূপ বসুর অধীনে ভর্তি ছিলেন। তাই সেখানেই নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাঁকে।

পরে গঙ্গারাম হাসপাতালের পক্ষ থেকে চিকিৎসক ডি এস রানা বলেন, ‘‘সনিয়া গাঁধীকে আজ বেলা দেড়টায় এখানে ভর্তি করানো হয়েছে। তাঁর শরীরে জলের অভাব দেখা গিয়েছিল। এখন তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। আরও কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। তাঁকে বিশ্রাম নিতে বলা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন