শব্দযন্ত্রের বিভ্রাট সমাবর্তন মঞ্চে, প্যাঁচে এনআইটি

শিলচর এনআইটি-র সমাবর্তন উৎসবে ছন্দপতন ঘটাল সাউন্ড সিস্টেম। বন্দেমাতরম গান চলাকালীন সেই যে বিগড়োল, ঠিক হতে সময় নিল পাক্কা ২৭ মিনিট।

Advertisement

উত্তম সাহা

শিলচর শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৬ ০৩:২৮
Share:

শিলচর এনআইটি-র সমাবর্তনে এ বছর সর্বোচ্চ নম্বরপ্রাপ্ত ছাত্র আমন হরলালকাকে পুরস্কৃত করছেন শিবপুর আইআইটি-র ডিরেক্টর অজয়কুমার রায়। শনিবার স্বপন রায়ের তোলা ছবি।

শিলচর এনআইটি-র সমাবর্তন উৎসবে ছন্দপতন ঘটাল সাউন্ড সিস্টেম। বন্দেমাতরম গান চলাকালীন সেই যে বিগড়োল, ঠিক হতে সময় নিল পাক্কা ২৭ মিনিট।

Advertisement

বড় বড় ইঞ্জিনিয়াররা তখন মঞ্চে বসে। তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে শ’য়ে শ’য়ে ইঞ্জিনিয়ার তৈরি করছেন। নীচে কয়েক হাজার দর্শক-শ্রোতা। তাঁদেরও প্রায় সবাই ইঞ্জিনিয়ার। কেউ বি-টেক করে এম-টেকের ডিগ্রি নিতে এসেছেন। কেউ আজই নিলেন বি-টেকের ডিগ্রি। ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড কম্যুনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড ইনস্ট্রুমেন্টেশন ইঞ্জিনিয়ারিং—সব বিভাগের ছাত্র-শিক্ষকদেরই নাস্তানাবুদ করে ছাড়ে ‘সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং’!

প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি বরণে মাইকের বিশেষ দরকার নেই বলে অনুষ্ঠান এগিয়ে চলে। শিলচর এনআইটি-র ডিরেক্টর নিশিকান্ত বিনায়ক দেশপান্ডেকেও বিনা মাইকেই ইনস্টিটিউট রিপোর্ট পড়তে হয়। সূচি অনুসারে এর
পরই বক্তৃতা করার কথা বিশেষ অতিথি, আফগানিস্তানের গালিব ইউনিভার্সিটি অ্যান্ড হসপিটাল-এর ডিরেক্টর রসেদ গুলাম সইদের। পরে সমাবর্তনের দীক্ষান্ত ভাষণ দেবেন শিবপুরের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ারিং সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি-র ডিরেক্টর অধ্যাপক অজয়কুমার রায়। তা-ও কি মাইক ছাড়া! ডিরেক্টর নির্দেশ দেন, ডিগ্রি প্রদান শুরু হয়ে যাক। সূচি ভেঙেই বক্তৃতা হবে তাঁদের। হলও তাই।

Advertisement

২৭ মিনিট পরে এনআইটির বিশাল অডিটোরিয়াম যখন আবার গমগম করে ওঠে, তখন অনেকের আনুষ্ঠানিক ডিগ্রি গ্রহণ শেষ। তবু ভাগ্যিস, প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথি বক্তৃতা করতে পারলেন মাইক্রোফোনের সামনে দাঁড়িয়ে। সমাবর্তন ভাষণে অধ্যাপক রায় শান্তি-সম্প্রীতি-সংহতির ওপর গুরুত্ব দেন। উল্লেখ করেন বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যের কথা। তাঁর কথায়, ডিগ্রির প্রয়োজন রয়েছে বটে, কিন্তু মানুষের কাজে লাগানো না গেলে সে সবই অর্থহীন। বিজ্ঞান-প্রযুক্তিকে কলা ও ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে সমন্বিত করতে পারলেই দেশের ক্ষুধা-দারিদ্র দূর করা যেতে পারে। উদ্যোগী মন, ইতিবাচক চিন্তাধারায় এগিয়ে যেতে তিনি আজকের ডিগ্রিপ্রাপকদের পরামর্শ দেন। আফগানিস্তান থেকে আসা রসেদ গুলাম সঈদ তাঁর সংক্ষিপ্ত ভাষণে বলেন, তাঁর দেশের বহু ছাত্র ভারতে এসে পড়াশোনা করছে। নানা দিক থেকে দুই দেশ পাশাপাশি রয়েছে। এই সম্পর্ককে আরও মজবুত করার অঙ্গীকার করেন তিনি।

বিভিন্ন বিভাগের মোট ৭৭৩ জনকে আজ ডিগ্রি প্রদান করা হয়। এর মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বরের জন্য সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের আমন হরলালকাকে স্বর্ণপদক প্রদান করা হয়। এনআইটি-র স্বর্ণপদক ছাড়াও একই কারণে আমন মনীষ রায় মেমোরিয়াল অ্যাওয়ার্ডও পান। কৃষাণু দে লাভ করে কালীকৃষ্ণ-মৃণালিনী ক্রোড়ি স্বর্ণপদক এবং ফয়জল করিম পায় শাশ্বত পুরকায়স্থ মেমোরিয়াল মেডেল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন