‘হোক বিজ্ঞানী, জ্ঞান দেবে মেয়ে!’

এক দল লিখতে শুরু করেন, ‘‘চাঁদ কোনও গ্রহ নয়।’’ বক্তাদের প্রায় সকলেই পুরুষ। অনীতা প্রশ্ন তুলেছেন, তিনি বিশেষজ্ঞ হওয়া সত্ত্বেও কিছু পুরুষ কেন তাঁকে বোঝাতে আসছেন। মেয়ে বলেই কি?

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:৪৭
Share:

নেটিজ়েনের নিশানায় মহাকাশ বিজ্ঞানী অনীতা সেনগুপ্ত।

নাসার মঙ্গল অভিযানে তিনি ছিলেন অন্যতম কান্ডারি, ভারতীয় বংশোদ্ভূত বাঙালি বিজ্ঞানী অনীতা সেনগুপ্ত। ভিন্‌গ্রহের মাটিতে কী ভাবে সফল অবতরণ করবে মঙ্গলযান ‘কিউরিয়োসিটি’, সবটাই দেখভাল করেছিল তাঁর দল। ‘চন্দ্রযান ২’-এর সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার পরে নিজের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা থেকে ইসরোকে সমর্থন জানিয়ে টুইট করেছিলেন, ‘‘যে কোনও গ্রহে মহাকাশযান সফল ভাবে নামানো খুবই কঠিন।’’

Advertisement

যদিও এর পরেই নাসার প্রাক্তন বিজ্ঞানী, বর্তমানে ‘এয়ারস্পেস এক্সপেরিয়েন্স টেকনোলজিস’-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতাকে আক্রমণ করে শুরু হয়ে যায় টুইটের বন্যা। এক দল লিখতে শুরু করেন, ‘‘চাঁদ কোনও গ্রহ নয়।’’ বক্তাদের প্রায় সকলেই পুরুষ। অনীতা প্রশ্ন তুলেছেন, তিনি বিশেষজ্ঞ হওয়া সত্ত্বেও কিছু পুরুষ কেন তাঁকে বোঝাতে আসছেন। মেয়ে বলেই কি?

অনীতার টুইটটি ছিল, ‘‘বিক্রমের কী হয়েছে এখনই বলা সম্ভব নয়। কিন্তু প্রথম চেষ্টাতেই যে কোনও গ্রহের মাটিতে নামা খুব কঠিন। আমরা যেটা শিখলাম, সেটা কী ভাবে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে আরও উন্নতি করা যায়।’’ কিউরিয়োসিটি অভিযানের সময়ে দীর্ঘদিন ধরে ‘সুপারসনিক প্যারাশুট’ তৈরি নিয়ে কাজ করেছিলেন তিনি। সংবাদমাধ্যমের কাছে অনীতা জানিয়েছেন, নিজের পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে ইসরোর বিজ্ঞানীদের কুর্নিশ জানিয়ে তিনি লিখেছিলেন, ‘ল্যান্ডিং অন দ্য সারফেস অব অ্যানাদার প্ল্যানেট ইজ় ভেরি হার্ড’। বলতে চেয়েছিলেন, পৃথিবীর বাইরে যে কোনও জায়গাই অবতরণের জন্য কঠিন। কিন্তু অনীতা ‘প্ল্যানেট’ শব্দটি কেন লিখেছেন, তা নিয়ে টুইটারে সমালোচনা শুরু করে দেন কিছু লোকজন। অনীতা প্রতিবাদ জানালে, এক জন এমনও লেখেন, ‘‘বেশি কথা বললে পাটকেল খেতেই হবে। মহান বিজ্ঞানীরা নম্র হন। চাইলে তালিকা দিতে পারি। আপনি গুগল করুন।’’

Advertisement

তবে অনেকেই বলেছেন, ওঁর টুইট পড়ে স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে, উনি ভিন্ন পরিবেশ যান নামানোর প্রতিকূলতা নিয়ে বলতে চেয়েছেন। সেখানে ওঁর কথার এ ভাবে খুঁত ধরার কারণ কী!

অনীতা টুইটারেই জবাব দিয়েছেন। লিখেছেন, সব ‘ম্যানসপ্লেনারস’-এর উদ্দেশে জানাচ্ছেন, ইডিএল (এনট্রি, ডিসেন্ট, ল্যান্ডিং) বলে একটি বিষয় আছে। আমেরিকার সাদার্ন ক্যালিফর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ওই বিষয়টি তিনি পড়ান। তবু আক্রমণ থামেনি। ‘ম্যানসপ্লেনারস’-এর অর্থ, কোনও এক পুরুষ যখন তাঁর চেয়ে ‘যোগ্যতর’ কোনও মহিলাকে কিছু বোঝাতে (এক্সপ্লেন) যান। এই শব্দটি কেন ব্যবহার করেছেন, কেন লিঙ্গবৈষম্যের প্রশ্ন তুলছেন, তা নিয়ে পরবর্তী আক্রমণ শুরু হয়। অনীতার উত্তর, ‘‘আপনি ইঞ্জিনিয়ার নন, আমি বিশেষজ্ঞ। তাই এটা ম্যানসপ্লেনিং’।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন