জলকামানে শিলচরে স্বাগত স্পাইসজেট

জল ছিটিয়ে ‘স্পাইসজেট’ বিমানকে শিলচরে স্বাগত জানাল এয়ারপোর্ট অথরিটি। নতুন বিমানের প্রথম উড়ান বা কোনও বিমানবন্দরে নতুন বিমান পরিষেবা চালু হলে জল-কামানে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করারই রীতি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলচর শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:১৪
Share:

জল ছিটিয়ে ‘স্পাইসজেট’ বিমানকে শিলচরে স্বাগত জানাল এয়ারপোর্ট অথরিটি।

Advertisement

নতুন বিমানের প্রথম উড়ান বা কোনও বিমানবন্দরে নতুন বিমান পরিষেবা চালু হলে জল-কামানে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করারই রীতি। শিলচরে অবশ্য নতুন বিমানের প্রথম উড়ানের ঘটনা ঘটেনি। তবে দীর্ঘ অপেক্ষার পর স্পাইসজেট শিলচরকেও তাদের নেটওয়ার্কে অন্তর্ভুক্ত করেছে। এখান থেকে গুয়াহাটি ও কলকাতার মধ্যে তাদের বিমানসেবা চালু হল আজ। তাই স্পাইসজেটের কিউ ৪০০ বিমানটি যখন আজ সকাল সওয়া ৬টায় শিলচরের রানওয়ে স্পর্শ করে, বিমানবন্দরের দু’টি দমকলের গাড়ি তখন দুদিক থেকে জল ছিটিয়ে তাকে স্বাগত জানায়। সম্মান প্রদর্শন করে পাইলট সহ বিমানকর্মীদের। সেইসঙ্গে কলকাতা থেকে আসা যাত্রীদের হাতে ফুল তুলে দেওয়া হয়।

বায়ুদূত, এয়ার ডেকান, কিংফিশার সংস্থা আগে এখানে বিমান চালিয়েছে। এখনও চলছে এয়ার ইন্ডিয়া ও জেটকানেক্টের বিমান। কিন্তু জলকামানে উচ্ছ্বাস প্রকাশের ঘটনা শিলচর বিমানবন্দরে এই প্রথম। আজ নতুন বিমান সংস্থার শিলচরে আসার মুহূর্তটিকে কেক কেটেও উপভোগ করেন এয়ারপোর্ট ডিরেক্টর নন্দকিশোর দেওলি, ওএসডি অর্ণব দাস, বিমান বাহিনীর উইং কমান্ডার শিবরাজ, স্পাইসজেটের চিফ সিকিউরিটি অফিসার এন ত্যাগরাজন। প্রথম বিমানের যাত্রীরাও তার সাক্ষী হয়ে থাকেন।

Advertisement

স্পাইসজেটের এয়ারপোর্ট ইনচার্জ রিপন মহন্ত জানিয়েছেন, প্রতি দিন ভোর পাঁচটায় কিউ ৪০০ বিমানটির যাত্রা শুরু হবে। কলকাতা থেকে শিলচর। এখান থেকে ৬টা ৪০ মিনিটে সেটি গুয়াহাটির উদ্দেশে ছাড়বে। সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে গুয়াহাটি থেকে শিলচর। পরে ৭৮ আসনের বিমানটি সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে আবার যাত্রী নিয়ে কলকাতা রওনা হবে। একইসঙ্গে আজ গুয়াহাটি-আইজল বিমান পরিষেবাও চালু করেছেন তাঁরা।

যাত্রীদের বক্তব্য, নতুন বিমান সংস্থা আসায় টিকিটের সঙ্কট কিছুটা হলেও কমবে। দামেরও হেরফের ঘটবে। কিন্তু এয়ার ইন্ডিয়া, জেট কানেক্ট এবং স্পাইসজেটের বিমান ভোর-সকালে চলছে বলে বড়সড় এক সমস্যা রয়েই গিয়েছে। দিনের শুরুতে কাজ ফুরিয়ে গেলেও গন্তব্যের উদ্দেশে বিমানে ওড়া সম্ভব নয়। অপেক্ষা করতে হয় আরেক ভোরের জন্য। এ ছাড়া ভোর ৫টা, ৬টার বিমান ধরা যাত্রীদের জন্য বড় কষ্টের। বিমান বাড়লেও সে সব যন্ত্রণা থেকে রেহাই মেলেনি। এ ছাড়া শিলচর বিমানবন্দরে রয়েছে কাউন্টার, বেল্ট, বোর্ডিং গেটেরও সমস্যা।

শিলচরের এয়ারপোর্ট অফিসার

নন্দকিশোর দেওলি জানিয়েছেন, কিছু দিনের মধ্যে এই সব সমস্যার কিছুটা মিটবে। রানওয়ে রি-কার্পেটিংয়ের কাজ শুরু করার জন্য বেলা ১২টার মধ্যে সমস্ত বিমানের ওঠা-নামার কাজ শেষ করা হচ্ছে। বৃষ্টির জন্য সেই কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। তিনি আশা করছেন, পুজোর পরই কাজ শুরু হয়ে যাবে। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে মূল কাজ শেষ হয়ে যাবে। তখন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বিমানবন্দর ব্যবহারের সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে বিমানবাহিনী। ফলে যাত্রীবিমানের নৈশ অবতরণেরও সম্ভাবনা রয়েছে। স্টেট ব্যাঙ্ক এই চত্বরে একটি এটিএম বুথ খোলার সম্মতি জানিয়েছে। বাকি পরিকাঠামো সমস্যার জন্য তিনি রাজ্য সরকারের ঘাড়ে দোষ চাপান।

দেউলি বলেন, এই বিমানবন্দরে এর চেয়ে ভাল পরিষেবা প্রদান কঠিন। বিষয়টি বুঝতে পেরে অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রক অন্যত্র বিমানবন্দর তৈরির প্রস্তাবে অনুমোদন জানিয়েছে। সে জন্য রাজ্য সরকারকে জমির বন্দোবস্ত করতে হবে। বার বার চিঠি লেখার পরও জমির ব্যাপারটা পাকা হচ্ছে না। তাঁর কথায়, ‘‘টার্মিনাল ভবনটি বহু পুরনো। জায়গা কম বলে একে ভেঙে আধুনিকতর করারও সুযোগ নেই।’’ তার ওপর দোকানপাট, লোকালয়ের এত কাছে টার্মিনাল ভবনের নিরাপত্তা নিয়েও যে তাঁরা শঙ্কায় ভোগেন, সে কথাও শোনান নন্দকিশোর দেওলি। ওএসডি অর্ণব দাস বলেন, ‘‘সব কিছুর একটাই সমাধান, নতুন জায়গায় বিমানবন্দরটিকে সরিয়ে নেওয়া।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন