চিনের হাতে শ্রীলঙ্কার বন্দর, উদ্বিগ্ন নয়াদিল্লি

শ্রীলঙ্কার পরিকাঠামোয় চিনা লগ্নি বেশ কিছু দিন ধরেই উদ্বেগে রেখেছে দিল্লিকে। ২০০৯ সালে গৃহযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর থেকেই রাস্তা, বিমানবন্দর, বন্দর তৈরির জন্য চিন থেকে কোটি কোটি ডলার ঋণ নিয়েছে শ্রীলঙ্কা।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৭ ০২:৪৫
Share:

ভারতের উদ্বেগ বাড়িয়ে শ্রীলঙ্কার হামবানতোতা বন্দর তৈরির দায়িত্ব নিল চিনা সংস্থা। শ্রীলঙ্কার দক্ষিণে এই গভীর সমুদ্র বন্দর ভারতকে ঘিরতে চিনের ‘স্ট্রিং অব পার্লস’ নীতিরই অঙ্গ বলে ধারণা নরেন্দ্র মোদী সরকারের শীর্ষ কর্তাদের।

Advertisement

শ্রীলঙ্কার পরিকাঠামোয় চিনা লগ্নি বেশ কিছু দিন ধরেই উদ্বেগে রেখেছে দিল্লিকে। ২০০৯ সালে গৃহযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর থেকেই রাস্তা, বিমানবন্দর, বন্দর তৈরির জন্য চিন থেকে কোটি কোটি ডলার ঋণ নিয়েছে শ্রীলঙ্কা। হামবানতোতা বন্দর তৈরির ভার চিনা সংস্থাকে দিয়ে সেই ঋণের কিছুটা শোধ করতে চাইছে শ্রীলঙ্কা সরকার। ৯৯ বছরের জন্য ওই বন্দর লিজ দেওয়া হয়েছে চিনা সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন ওই সংস্থাকে। সেইসঙ্গে শিল্পতালুক তৈরির জন্য দেওয়া হয়েছে ১৫ হাজার একর জমি।

হামবানতোতায় চিনা উপস্থিতি নিয়ে শ্রীলঙ্কারই কোনও কোনও শিবির ও ভারতের উদ্বেগের কথা বিলক্ষণ জানে প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিঙ্ঘের সরকার। তাই সম্প্রতি বন্দরের আর্থিক কাঠামোয় চিনা সংস্থার শেয়ার ৭০ শতাংশে নামিয়ে এনেছে তারা। তাদের দাবি, ওই বন্দর থেকে কেবল বাণিজ্যিক কাজকর্মই করবে চিন। চিনা সামরিক বাহিনী সেখানে সক্রিয় হবে না। বরং বন্দরে হাজির থাকবে শ্রীলঙ্কার নৌসেনা। প্রধানমন্ত্রী বিক্রমাসিঙ্ঘের কথায়, ‘‘আমরা দেশের নিরাপত্তার ক্ষতি না করেই ভালো চুক্তি করতে পেরেছি।’’

Advertisement

কিন্তু এই যুক্তি মানতে রাজি নয় দিল্লি। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের মতে, চিনের স্বার্থে হাত পড়লে তারা হামবানতোতায় নিজেদের নৌসেনা মোতায়েন করতেই পারে। এই বন্দর চিনা ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান করিডর’ প্রকল্পেরই অঙ্গ। যে প্রকল্পের গোড়া থেকেই বিরোধিতা করছে ভারত। ভারতকে চার দিক থেকে ঘিরতে বেজিংয়ের ‘স্ট্রিং অব পার্লস’ নীতির ক্ষেত্রে শ্রীলঙ্কার এই বন্দর বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। সাউথ ব্লকের কর্তারা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, আন্তর্জাতিক আদালতের রায় উড়িয়ে দিয়ে দক্ষিণ চিন সাগরে নিজেদের আধিপত্য বাড়ানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছে চিন। ভারত মহাসাগরে তাদের আধিপত্য বাড়ানোর পাল্টা হিসেবে মরিশাসের অ্যাগালেগা ও সেশ্যেলসের অ্যাসাম্পশন দ্বীপ কিনে সেখানে সামরিক ঘাঁটি তৈরি করতে উদ্যোগী হয়েছে দিল্লি। এক কূটনীতিকের মতে, ‘‘স্বার্থে হাত প়ড়লে চিন যে কোনও নীতির ধার ধারবে না তা দক্ষিণ চিন সাগরের ঘটনা থেকেই বোঝা যায়। হামবানতোতা নিয়ে শ্রীলঙ্কার সতর্ক হওয়া উচিত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন