পর্যটনে মোদীর চায়ের দোকান, কুমির ধরার হ্রদ

প্রধানমন্ত্রী ঠিক কোন দোকানে চা বিক্রি করতেন, তা নিয়ে রেলের রেকর্ডে কোনও নথি নেই। কংগ্রেস আগেই তথ্য জানার অধিকার আইনে জানতে চেয়েছিল, কোথায় চা বিক্রি করতেন মোদী? রেল জানিয়েছিল, এমন কোনও তথ্য তাদের কাছে নেই। স্টেশন-লাগোয়া ৬টি দোকান আছে, কোনওটিই মোদী পরিবারের নামে ছিল না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০১৭ ১৯:০০
Share:

ছবি: এএফপি।

পর্যটন মানচিত্রে আসতে চলেছে ‘মোদীর চায়ের দোকান’।

Advertisement

উদ্যোগ খোদ নরেন্দ্র মোদীরই সংস্কৃতি মন্ত্রকের।

গুজরাতের বড়নগরে জন্ম প্রধানমন্ত্রীর। সেখানেই রেল স্টেশনের পাশে ছোট্ট চায়ের দোকান চালাতেন তাঁর বাবা। ছোটবেলায় চা বিক্রি করে বাবাকে সাহায্য করতেন মোদী। লোকসভা ভোটের প্রচারের সময়ে নিজেকে ‘চা-ওয়ালা’ বলেই তুলে ধরেছিলেন। সেই চায়ের দোকানটিকেই এ বার পর্যটন স্থল হিসেবে গড়ে তুলছে সংস্কৃতি মন্ত্রক।

Advertisement

শুধু চা-দোকান নয়। ছোটবেলায় বড়নগরের শর্মিষ্ঠা হ্রদে কুমির ধরে মোদীর বাহাদুরির কাহিনিও বিস্তর প্রচার করেছে বিজেপি। পর্যটন মানচিত্রের আওতায় আসতে চলেছে সেই হ্রদটিও। এই প্রকল্পে ইতিমধ্যেই একশো কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু পাছে বিতর্ক দানা বাঁধে, সেই কারণে অন্য কৌশল নেওয়া হয়েছে। সংস্কৃতি মন্ত্রক জানাচ্ছে, সম্প্রতি আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া (এএসআই) বড়নগরে বৌদ্ধ মঠ খুঁজে পেয়েছে। তাই ‘ঘটনাচক্রে’ মোদীর জন্মস্থানটিও চলে আসছে বৌদ্ধ সার্কিটের আওতায়। গোটা এলাকার উন্নয়ন হচ্ছে সেই নিরিখেই।

মন্ত্রক যা রেখেঢেকে বলছে, কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রী মহেশ শর্মার সেই রাখঢাক নেই। তিনি বলছেন, ‘‘বৌদ্ধ সার্কিট হিসেবে গোটা এলাকাকে পর্যটনের জন্য ঢেলে সাজা তো হচ্ছেই। কিন্তু সেই স্টেশনটিরও উন্নয়ন হচ্ছে, যেখানে চায়ের দোকানে চা বিক্রি করতেন প্রধানমন্ত্রী। নিজস্বতা বজায় রেখেই উন্নয়ন করা হচ্ছে। পর্যটকরা যখন সেখানে যাবেন, তখন নিশ্চয়ই দেখতে চাইবেন, নরেন্দ্র মোদী কোথায় চা বিক্রি করতেন। ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।’’

যদিও প্রধানমন্ত্রী ঠিক কোন দোকানে চা বিক্রি করতেন, তা নিয়ে রেলের রেকর্ডে কোনও নথি নেই। কংগ্রেস আগেই তথ্য জানার অধিকার আইনে জানতে চেয়েছিল, কোথায় চা বিক্রি করতেন মোদী? রেল জানিয়েছিল, এমন কোনও তথ্য তাদের কাছে নেই। স্টেশন-লাগোয়া ৬টি দোকান আছে, কোনওটিই মোদী পরিবারের নামে ছিল না।

কিন্তু সংস্কৃতি মন্ত্রক বলছে, দোকানটি চিহ্নিত করার জন্য মোদীর ভাইয়ের সাহায্য নেওয়া হয়। তিনিই দেখিয়ে দেন দোকানটি। তাই এখন স্টেশনের উন্নয়নের সঙ্গে দোকানটির সংরক্ষণের কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে।

বিরোধীরা অবশ্য মনে করছেন, গুজরাত নির্বাচনের আগে ব্র্যান্ড-মোদীতে আরও শান দিতে চাইছে বিজেপি। কিন্তু এতেই বোঝা যাচ্ছে, নিজের রাজ্যেই কতটা ভয়ে আছেন মোদী। কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মা বলেন, ‘‘মোদী শুধু একটি কাজই পারেন। তা হল, নিজের প্রচার। জীবদ্দশাতেই প্রধানমন্ত্রী জীবন্ত কিংবদন্তি সাজতে চাইছেন। আর তাঁর জমানায় মরছেন গরিব কৃষক, শ্রমিক, দলিত-সংখ্যালঘুরা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন