Stan Swamy

জেলে ‘মানবতারই উদ্ভাস’ দেখছেন স্ট্যান স্বামী

গত সপ্তাহে আদালতে স্ট্যান আর্জি জানিয়েছেন, নিজের হাতে খাবার মুখে তোলা তো দূর, জলের গ্লাসও ধরতে পারেন না ঠিক করে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মুম্বই শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০২০ ০৩:০৯
Share:

স্ট্যান স্বামী।

জেসুইট যাজক। পাঁচশো বছর ধরে শিক্ষা ও জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দেওয়াই যে ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের লক্ষ্য। আদিবাসীদের অধিকার রক্ষায় নিয়োজিত থেকেছেন জীবনের অনেকটা সময়। এখন বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে সকাল ৬টা ও দুপুর ১২টা থেকে বেলা ৩টে পর্যন্ত বন্দি থাকেন জেলের ছোট কুঠুরিতে।

Advertisement

জেলকুঠুরি ও ব্যারাকের তালা খুললে বাকি সময়টায় জেলের অন্য বন্দি ও বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ অবশ্য রয়েছে। তবে মস্তিষ্কের রোগ পারকিনসন’স-এ আক্রান্ত স্ট্যান স্বামী চলাফেরাই করতে পারেন না। আদালতকে স্ট্যানের আইনজীবী জানিয়েছেন, শোনার ক্ষমতা প্রায় নষ্ট হয়ে গিয়েছে দুই কানেই। জেলে অনেক বার পড়ে গিয়েছেন। দু’বার হার্নিয়া অপারেশনের পরে তলপেটের যন্ত্রণাতেও কষ্ট পাচ্ছেন স্ট্যান। গত সপ্তাহে আদালতে স্ট্যান আর্জি জানিয়েছেন, নিজের হাতে খাবার মুখে তোলা তো দূর, জলের গ্লাসও ধরতে পারেন না ঠিক করে। তাঁকে যেন ‘স্ট্র’ ও ‘সিপার’ ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়। আদালত তাঁর আর্জি নিয়ে শুনানির দিন স্থির করেছে ২৮ নভেম্বর। অর্থাৎ ২০ দিন পরে আদালত ভাববে, এই মানুষটিকে ‘স্ট্র’ ও ‘সিপার’ দিয়ে খেতে দেওয়া যায় কি না।

এখন তবে কী ভাবে চলছে!

Advertisement

বন্ধুদের লেখা চিঠিতে স্ট্যান জানিয়েছেন, “ফেরেরা খাইয়ে দেন।” মহারাষ্ট্রের তলোজা জেলেই অন্য এক কুঠুরিতে বন্দি রাখা হয়েছে ভারাভারা রাও, ভারনন গনজ়ালভেস ও অরুণ ফেরেরাকে। স্ট্যানের জেলকুঠুরিতেও রয়েছেন আরও দু’জন। স্ট্যান লিখছেন, “ওঁরা আমাকে খেতে সাহায্য করেন। জামাকাপড় ধুয়ে দেন। হাঁটুর য্ত্রণা বাড়লে মালিশ করে দেন।” এর পরে বন্ধুদের প্রতি স্ট্যানের অনুরোধ, “এঁরা খুবই গরিব পরিবারের। আমার সহকর্মী ও এই সহ-বন্দিদের জন্যেও তোমরা প্রার্থনা কোরো। সমস্ত রকম প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও তলোজা জেলের অন্দরে মানবতারই উদ্ভাস দেখতে পাচ্ছি।”

আরও পড়ুন: প্রেমিকের জন্মদিনে যাওয়ায় বাবার বকুনি, চন্দননগরে ছাদ থেকে লাফ দিয়ে আত্মঘাতী কিশোরী

ভীমা কোরেগাওঁয়ে দু’বছর আগে জাতপাতের হিংসা ছড়ানোর চক্রান্তে লিপ্ত থাকা ও নিষিদ্ধ সংগঠন সিপিআই (মাওবাদী)-র সদস্য হওয়ার অভিযোগ এনে গত ৮ অক্টোবর রাঁচী থেকে স্ট্যানকে গ্রেফতার করেছে এনআইএ। ৯ অক্টোবর থেকে রয়েছেন বিচার বিভাগীয় হেফাজতে। খারাপ স্বাস্থ্যের কারণে জামিন চেয়েছিলেন। গত ২৩ অক্টোবর বিশেষ এনআইএ আদালত তা খারিজ করে দিয়েছে। একই মামলায় ওই জেলে বন্দি তেলুগু কবি, ৮১ বছর বয়সি ভারাভারা রাও-ও স্নায়ু ও কোভিড-পরবর্তী সমস্যায় ভুগছেন। তাঁকে নানাবতী হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করানোর আর্জি জানিয়েছিলেন আইনজীবী। বম্বে হাইকোর্ট গত বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, জেলেই ডাক্তারি পরীক্ষা করাতে হবে। এবং সেটা ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে।

আদালতে এঁদের অবস্থা নিয়ে প্রবীণ আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিংহ বলেছেন, “নৃশংস, অমানবিক ও অবমাননাকর পরিস্থিতি। প্রতি দিন অবস্থাটা খারাপ থেকে আরও খারাপ হচ্ছে।” স্ট্যান যদিও এর মধ্যেও ‘মানবতারই উদ্ভাস’ দেখতে পাচ্ছেন। তাঁর সেই চিঠির কিছু অংশ সামাজিক মাধ্যমে দিয়েছেন বন্ধু। নেটিজ়েনদের যা নতুন করে ভাবাচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন