Ravi Shankar Prasad

তথ্য নিয়ে কড়াকড়ি শুধু কি চিনের ক্ষেত্রে

সম্প্রতি এক ভিডিয়ো-কনফারেন্সে রবিশঙ্কর বলেন, “তথ্য সম্পদ। বিশেষত আজকের প্রযুক্তি-নির্ভর দুনিয়ায় কৌশলগত ভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ।”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০২০ ০৪:০৪
Share:

ফাইল চিত্র

তথ্যের নিরাপত্তার সঙ্গে কোনও আপস নয়। তাই সেই তথ্য বা ডেটাকে কব্জা করে কারও সাম্রাজ্য বিস্তারের চেষ্টাকেও বরদাস্ত করবে না ভারত। জোর গলায় আজ ফের এ কথা ঘোষণা করলেন কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। কিন্তু তাঁর এই ‘হুঙ্কারের’ পরেও প্রশ্ন, এই আপত্তি কি অ্যাপল, অ্যামাজ়ন, গুগলের মতো বহুজাতিক মার্কিন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে? নাকি নিশানায় থাকবে শুধু চিনা সংস্থাগুলিই।

Advertisement

সম্প্রতি এক ভিডিয়ো-কনফারেন্সে রবিশঙ্কর বলেন, “তথ্য সম্পদ। বিশেষত আজকের প্রযুক্তি-নির্ভর দুনিয়ায় কৌশলগত ভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ।” তাই ভারতীয়দের তথ্য যাতে কেউ যথেচ্ছ ভাবে দেশের বাইরে নিয়ে চলে যেতে না-পারে, তা নিশ্চিত করতে কড়া হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। জানিয়েছেন, এই বিষয়টি নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই তথ্য নিরাপত্তা বিল এনেছেন তাঁরা। যা এই মুহূর্তে খতিয়ে দেখছে সংসদের সংশ্লিষ্ট স্থায়ী কমিটি।

লাদাখে চিনের সঙ্গে সীমান্ত সংঘর্ষের পর থেকে তথ্যের নিরাপত্তা নিয়ে সুর আরও চড়াচ্ছে ভারত। পড়শি মুলুকের ৫৯টি অ্যাপ (মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন) ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা চাপানোর পাশাপাশি জোর দেওয়া হচ্ছে দেশের মাটিতে অ্যাপ তৈরির উপরে। এই একই কারণে টেলি সরঞ্জাম থেকে শুরু করে বিভিন্ন যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ আমদানির ক্ষেত্রেও কড়াকড়ির মুখে পড়তে হচ্ছে। সব মিলিয়ে, এ দেশের সাধারণ মানুষের তথ্য যাতে চিনা অ্যাপ কিংবা ওই দেশের সংস্থার হাত ধরে পিএলএ বা বেজিংয়ের হাতে না-পৌঁছয়, তার জন্য সব রকম ভাবে কোমর বাঁধছে দিল্লি।

Advertisement

এ দেশের গ্রাহক কিংবা ক্রেতাদের তথ্য বহুজাতিক সংস্থার বিদেশে থাকা সার্ভার ঘুরে বাইরে চলে যাওয়ার বিষয়ে আগেও আপত্তি তুলেছে মোদী সরকার। কিন্তু অন্তত এখনও পর্যন্ত তাতে কাজের কাজ কিছু হয়নি। অ্যামাজ়নের কেনাকাটার পোর্টাল হোক বা ফেসবুকের পেজ, কিংবা গুগলের সার্চ ইঞ্জিন— প্রতি মুহূর্তে ক্রেতা এবং গ্রাহকদের থেকে তথ্য সংগ্রহ করে তারা। যা রাখার ভাণ্ডার এ দেশে নয়। কেন্দ্রের আপত্তি সত্ত্বেও অন্তত এখনও পর্যন্ত তাদের ব্যবসার মডেল বদলায়নি। বরং আরও বেশি করে এ দেশের বাজার ধরতে মুকেশ অম্বানীর জিয়ো প্ল্যাটফর্মে টাকা ঢেলেছে ফেসবুক, গুগল। গাঁটছড়া বেঁধেছে মাইক্রোসফটও। গুগলের মূল সংস্থা অ্যালফাবেটের সিইও সুন্দর পিচাই সম্প্রতি ভারতে আগামী ৫-৭ বছরে ৭৫ হাজার কোটি টাকা ঢালার কথা ঘোষণা করায়, তাকে স্বাগত জানিয়েছেন খোদ রবিশঙ্করই।

স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, তথ্যের নিরাপত্তা নিয়ে কড়াকড়ি কিংবা তা দেশের বাইরে নিয়ে যেতে না-দেওয়ার জেদ এই প্রযুক্তি-দৈত্যদের বেলাতেও বজায় থাকবে তো? নাকি তার কোপ শুধু টিকটকের মতো চিনা সংস্থার উপরেই? এ দিনই আবার জানা গিয়েছে, ভারতে ধাক্কা খাওয়ার পরে নিজেদের সদর লন্ডনে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করছে ওই চিনা সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন