যৌন নিগ্রহ করা হয়নি প্রদ্যুম্নকে, ময়নাতদন্তের পর জানালেন চিকিৎসক

মঙ্গলবার সৌরভ জানিয়েছেন, ঘটনার পরপরই তিনি শৌচাগারের কাছে পৌঁছেছিলেন। দেখেছিলেন, কন্ডাক্টর অশোক কুমারের শার্ট রক্তে ভেজা। সৌরভের দাবি, সে সময় কন্ডাক্টর তাঁকে বলেন জখম প্রদ্যুম্নকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যেতে বলেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষই।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৪:১৮
Share:

রহস্য ক্রমেই ঘনাচ্ছে গুরুগ্রামের রায়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে সাত বছরের পড়ুয়া প্রদ্যুম্ন ঠাকুরের হত্যাকাণ্ড ঘিরে। মঙ্গলবার ওই পড়ুয়ার দেহের ময়নাতদন্তকারী এক চিকিৎসক দীপক মাথুর দাবি করেছেন, প্রদ্যুম্নকে যৌন নিগ্রহ করা হয়নি। তাঁর এই দাবি ঘিরে ছড়িয়েছে চাঞ্চল্য।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা এই খবর জানিয়ে বলেছে, মাথুরের বক্তব্য, প্রদ্যুম্নের ঘাড়ে ছুরির দু’টি আঘাত মিলেছে। কিন্তু যৌন নিগ্রহের প্রমাণ মেলেনি। তার পোশাক পরীক্ষা করেও তেমন চিহ্ন মেলেনি। এই দাবির পরে স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, ওই পড়ুয়া খুনে মুখ্য অভিযুক্ত বাস কন্ডাক্টর অশোক কুমার তা হলে প্রদ্যুম্নকে মারতে গেল কেন? তা নিয়ে তৈরি হয়েছে তুমুল ধোঁয়াশা। ওই চিকিৎসকের দাবি, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই মারা যায় ছেলেটি। এবং তিনি বলেছেন, ছুরির আঘাতে বাচ্চাটির একটি স্নায়ু এমন ভাবে ছিঁড়ে গিয়েছিল যে সে সাহায্যের জন্য চিৎকারও করতে পারেনি।

এ দিন ওই স্কুলের বাসচালক সৌরভ রাঘব আবার দাবি করেছেন, মুখ্য অভিযুক্তকে স্কুলের তরফে বলা হয়েছিল, সেই সময়ে জখম প্রদ্যুম্নকে একটি গাড়িতে করে নিয়ে যেতে। এর সঙ্গে দেশের সব স্কুলে নিরাপত্তা সংক্রান্ত নির্দেশিকা ঠিকমতো বলবৎ করার দাবিতে আজই সুপ্রিম কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন দুই মহিলা আইনজীবী। প্রদ্যুম্নের বাবাও একই আর্জি জানান শীর্ষ আদালতে। ১৫ সেপ্টেম্বর দু’টি আবেদনই এক সঙ্গে শোনা হবে বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

Advertisement

মঙ্গলবার সৌরভ জানিয়েছেন, ঘটনার পরপরই তিনি শৌচাগারের কাছে পৌঁছেছিলেন। দেখেছিলেন, কন্ডাক্টর অশোক কুমারের শার্ট রক্তে ভেজা। সৌরভের দাবি, সে সময় কন্ডাক্টর তাঁকে বলেন জখম প্রদ্যুম্নকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যেতে বলেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষই। সৌরভের বয়ান অনুযায়ী, এর পরে স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং অশোকের কাছে তিনি শোনেন প্রদ্যুম্ন শৌচাগারে পড়ে গিয়েছিল। তাতেই তার আঘাত লেগেছে। তিনি আরও জানান, পড়ুয়াদের শৌচাগার ব্যবহার না করতে কন্ডাক্টরকে বারবার বলা হলেও সে কান দেয়নি। কালই সৌরভ সংবাদমাধ্যমের কাছে অভিযোগ করেন, যে ছুরি দিয়ে খুন করা হয়েছে সেটি তাঁর বাসের যন্ত্রপাতির বাক্সে ছিল বলে জবানবন্দিতে স্বীকার করতে চাপ দিয়েছে পুলিশ ও পদস্থ কর্তারা। তিনি রাজি হননি। এ দিনও সৌরভ জানান, ছুরি ঘটনাস্থল থেকেই মিলেছে। এ ছাড়া প্রমাণ লোপাটের অভিযোগও উঠেছে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। একটি সূত্রে দাবি, সোমবার আদালতে পুলিশ জানিয়েছে, সে দিন ঘটনার পরে ওই শৌচাগারের দেওয়াল এবং মেঝে থেকে রক্ত মুছে ফেলার ব্যবস্থা করেছিলেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। ফেসবুক পোস্টে একই দাবি করেছেন প্রদ্যুম্নের এক কাকা।

এ দিনই বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়েছে পুলিশি হেফাজতে থাকা বাস কন্ডাক্টর অশোক কুমারকে। তাকে ১৮ সেপ্টেম্বর গুরুগ্রামের বিশেষ আদালতে তোলা হবে। গুরুগ্রামের এসিপি বীরেন সিংহ বলেছেন, ‘‘সাত বছরের বাচ্চাটির খুনে অশোকেরই হাত ছিল, এটা স্পষ্ট। আর কেউ এতে জড়িত নয়। তবে স্কুলের তরফে গাফিলতি অন্য বিষয়।’’ জিজ্ঞাসাবাদে স্কুলের দুই পড়ুয়াও জানিয়েছে, প্রদ্যুম্নের উপরে ওই নির্যাতনের আগে অশোককে শৌচালয়ে দেখেছিল তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন