Coronavirus

দু’সপ্তাহে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিন, মোরেটরিয়াম নিয়ে কেন্দ্রকে ‘শেষ সময়’ দিল সুপ্রিম কোর্ট

কেন্দ্রের তরফে এ দিন আদালতে জানানো হয়েছে, এ নিয়ে শীর্ষ স্তরে ব্যাঙ্ক-সহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে সরকার পর্যালোচনা করছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৫:৪৩
Share:

মোরেটরিয়াম নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে কেন্দ্রকে দু’সপ্তাহের সময় দিল সুপ্রিম কোর্ট।

করোনাভাইরাস-লকডাউনের মোকাবিলায় ৬ মাসের জন্য ঋণের কিস্তি স্থগিতের (ইএমআই মোরেটরিয়াম) সুযোগ দিয়েছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। সেই সুবিধা যাঁরা নিয়েছিলেন, তাঁদের সুদের উপর সুদ গুণতে হবে। অর্থাৎ সুবিধা নিতে গিয়ে কার্যত বিপাকে ঋণগ্রহীতারা। এই নিয়েই সুপ্রিম কোর্টে একাধিক মামলার প্রেক্ষিতে কেন্দ্র ও রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ‘শেষ সুযোগ’ দিল সুপ্রিম কোর্ট। আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে এ নিয়ে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা সুপ্রিম কোর্টে জমা দিতে হবে বলে নির্দেশ দিল শীর্ষ আদালতের বিচারপতি অশোক ভূষণের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ।

Advertisement

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শৃঙ্খল রুখতে ২৫ মার্চ থেকে দেশে লকডাউন জারি হয়েছিল। তার কয়েক দিন পরেই রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানিয়েছিল, ঋণগ্রহীতারা চাইলে তিন মাসের জন্য বাড়ি-গাড়ি, পার্সোনাল-সহ প্রায় সব ধরণের ঋণের ইএমআই নাও দিতে পারেন। পরে সেই মেয়াদ আরও তিন মাস বাড়ানো হয়েছিল। সব মিলিয়ে মার্চ থেকে অগস্ট পর্যন্ত মোট ছ’মাসের জন্য ঋণের কিস্তি স্থগিতের সুযোগ দেওয়া হয় ঋণগ্রহীতাদের। অর্থাৎ এই ছ’মাস ঋণের কিস্তি না দিলেও ঋণগ্রহীতাকে কোনও জরিমানা দিতে হবে না বা ক্রেডিট স্কোরে কোনও প্রভাব পড়বে না। গত ৩১ অগস্ট সেই মেয়াদ শেষ হয়েছে।

প্রাথমিক ভাবে এই ঋণের কিস্তি স্থগিত ঋণগ্রহীতাদের কাছে সুবিধাজনক মনে হয়েছিল বটে। কিন্তু ঘোষণার কয়েকদিন পরেই বোঝা যায়, এতে সাময়িক স্বস্তি হলেও ঋণের মেয়াদ শেষে গিয়ে অনেক বেশি টাকা ঘাড়ে চাপবে। অর্থাৎ এই ছ’মাসের ঋণের সুদের উপরেও সুদ দিতে হবে গ্রাহকদের। অর্থাৎ কেউ যদি পাঁচ বছরের মেয়াদে ঋণ নেন এবং ইএমআই শুরু হওয়ার গোড়ার দিকেই ইএমআই স্থগিতের বিকল্প গ্রহণ করেন, তা হলে এই পুরো সময়ের জন্য ছ’মাসের ঋণের সুদের উপর সুদ মিলিয়ে পরিশোধ করতে হবে ব্যাঙ্ককে। বিষয়টি সামনে আসতেই চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ তৈরি হয় ঋণগ্রহীতা ও সংশ্লিষ্ট সব মহলে। বিরোধীরাও সরকারের তীব্র সমালোচনা করে। তাঁদের বক্তব্য ছিল, সরকার ঋণগ্রহীতাদের সুবিধা দেওয়ার বদলে আরও বড় ঋণের বোঝা ঘাড়ে চাপিয়েছে। ব্যাঙ্কগুলিকে আরো লাভের পথ করে দিয়েছে। পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টে এ নিয়ে একাধিক মামলা দায়ের হয়। জনস্বার্থ মামলাও রয়েছে তার মধ্যে। মামলাকারীদের দাবি, ঋণের কিস্তি স্থগিত করা ছ’মাসের জন্য সুদ এবং সুদের উপর সুদ দু’টোই মকুব করতে হবে।

Advertisement

আরও পড়ুন: অর্থনীতি ধুঁকছে, অথচ শেয়ার বাজারে টাকা উড়ছে কী করে!

সেই মামলাগুলি একত্রিত করে শুনানি চলছে বিচারপতি অশোক ভূষণ, বিচারপতি সুভাষ রেড্ডি এবং বিচারপতি এম আর শাহ-এর বেঞ্চে। গত ১ সেপ্টেম্বরের শুনানিতে কেন্দ্র ও সুপ্রিম কোর্টকে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার জানাতে বলেছিল শীর্ষ আদালত। কিন্তু এ দিন সরকার পক্ষ কোনও সিদ্ধান্ত জানাতে পারেনি। তার পরেই শেষ বারের মতো ১৪ দিনের সময়সীমা দিয়ে বিচারপতিরা বলেন, ‘‘কেন্দ্রকে আমরা দু’সপ্তাহের সময় দিচ্ছি। কিন্তু চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিন।’’

আরও পড়ুন: পরের দিন নিট, ১২ সেপ্টেম্বর লকডাউন প্রত্যাহার, ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর

তবে কেন্দ্রের তরফে এ দিন আদালতে জানানো হয়েছে, শীর্ষ স্তরে এ নিয়ে বিচার-বিবেচনার প্রক্রিয়া চলছে। ব্যাঙ্ক-সহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে সরকার পর্যালোচনা করছে। ঋণগ্রহীতাদের কী ভাবে সুবিধা দেওয়া যায়, কথা হচ্ছে তা নিয়ে। ইতিমধ্যেই দু’-তিন দফা আলোচনার পর্ব সারাও হয়ে গিয়েছে। সব পক্ষের উদ্বেগের বিষয়টি খতিয়ে দেখছে কেন্দ্র। অন্য দিকে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক আদালতে আগেই জানিয়েছিল, ঋণের কিস্তি স্থগিতের ছ’মাসের সুদ ও সুদের উপর সুদ মকুব করলে ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার উপর বিপুল চাপ পড়বে। কিন্তু শীর্ষ আদালতের এ দিনের নির্দেশের পর কেন্দ্র ও রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কিছুটা চাপ পড়ল বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন