কর্নেল সোফিয়া কুরেশি। ছবি: রয়টার্স।
সেনার স্থায়ী কমিশনে (পার্মানেন্ট কমিশন) মহিলার অফিসারদের নিয়োগ মামলা যখন সুপ্রিম কোর্টে পৌঁছেছিল, দৃষ্টান্ত হিসাবে সেখানে উঠে এসেছিল কর্নেল সোফিয়া কুরেশির নাম। আর সেই দৃষ্টান্ত টেনে এনেছিল খোদ শীর্ষ আদালত। সেনায় কর্নেল সোফিয়ার কৃতিত্ব এবং সাফল্যের উদাহরণ তুলে ধরে শীর্ষ আদালত বার্তা দিয়েছিল, কেন স্থায়ী কমিশনে মহিলা অফিসারদের নিয়োগ করা উচিত। সেই সময় আদালত জানিয়েছিল, কর্নেল সোফিয়া ২০০৬ সালে কঙ্গোয় রাষ্ট্রপুঞ্জের শান্তিবাহিনীর সামরিক পর্যবেক্ষক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। দক্ষতার সঙ্গে কাজও করেন।
ঘটনাচক্রে, শীর্ষ আদালতে প্রশংসিত সেই মহিলা অফিসারকেই বুধবার বড় ভূমিকায় দেখা গেল। পাকিস্তানের মাটিতে মঙ্গলবার মধ্যরাতে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পর সেই মহিলা অফিসার সোফিয়াকেই সেনার সাংবাদিক বৈঠকে প্রত্যাঘাতের বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়। সঙ্গে ছিলেন আরও এক মহিলা অফিসার বায়ুসেনার উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিংহ। ‘অপারেশন সিঁদুর’ কী ভাবে, কেন করা হল পাকিস্তানের মাটিতে প্রত্যাঘাতের পর বুধবার সেনার সাংবাদিক বৈঠকে তাঁর ব্যাখ্যা দেন কর্নেল সোফিয়া এবং বায়ুসেনার উইং কমান্ডার ব্যোমিকা। তার পর থেকেই চর্চায় দুই বাহিনীর এই দুই মহিলা অফিসার। অনেকের মতে, নারীশক্তিকে বার্তা দিতেই সেনার সাংবাদিক বৈঠকে পাকিস্তানে প্রত্যাঘাতের বিষয়টি নিয়ে জানানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল কর্নেল সোফিয়া এবং উইং কমান্ডার ব্যোমিকার উপর।
ভারতীয় সেনার সামরিক যোগাযোগ ও ইলেকট্রনিক্স অভিযান সহায়ক শাখা সিগন্যাল কর্পসের অন্যতম শীর্ষ আধিকারিক সোফিয়া। ৩৫ বছরের এই অফিসার সেনাবাহিনীর একাধিক যুগান্তকারী সাফল্যের সঙ্গে যুক্ত। ২০১৬ সালে তিনি প্রথম খবরের শিরোনামে উঠে এসেছিলেন। ওই বছর ১৮টি দেশের সামনে ভারতের সামরিক মহড়ায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সোফিয়া। প্রথম মহিলা হিসাবে এই কৃতিত্ব তিনি অর্জন করেন। সে সময়ে সোফিয়া ছিলেন লেফ্টেন্যান্ট কর্নেল। পুণের ওই সামরিক মহড়া ছিল ভারতে আয়োজিত সবচেয়ে বড় বিদেশি সামরিক মহড়া। ২ থেকে ৮ মার্চের মহড়ায় যোগ দিয়েছিল জাপান, চিন, আমেরিকা, রাশিয়ার মতো দেশ। আর কোনও দেশের মহড়ার নেতৃত্বে মহিলা ছিলেন না।
১৯৭৪ সালে গুজরাতের বডোদরায় জন্ম সোফিয়ার। ১৯৯৭ সালে জৈবরসায়ন নিয়ে স্নাতোকত্তর করেন সোফিয়া।