— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
বছর দুয়েক আগের কথা। জম্মু-কাশ্মীরের কুপওয়াড়ায় হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের সময় অকথ্য নির্যাতন চালানো হয়েছিল এক পুলিশ কনস্টেবলের উপর। সেই ঘটনায় এ বার অভিযুক্ত আধিকারিকদের কড়া শাস্তির নিদান দিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত। মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশও দিল সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চ।
সোমবার সকালে ওই মামলার শুনানিতে এই নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি বিক্রম নাথ এবং বিচারপতি সন্দীপ মেহতার একটি বেঞ্চ গোটা তদন্তপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে এক মাসের সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছে। নির্দেশে আরও বলা হয়েছে, ঘটনার সঙ্গে জড়িত সমস্ত অভিযুক্ত আধিকারিককে এক মাসের মধ্যে গ্রেফতার করতে হবে। পাশাপাশি, নির্যাতিত খুরশিদ আহমদ চৌহানকে ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে জম্মু ও কাশ্মীর প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন পুলিশ কনস্টেবল খুরশিদ। তাঁর অভিযোগ ছিল, ২০২৩ সালের ২০ থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি— ছ’দিন ধরে তাঁকে কুপওয়াড়ার জিজ্ঞাসাবাদ কেন্দ্রে (জেআইসি) আটকে রেখে ‘অমানবিক’ অত্যাচার করা হয়েছিল। মারধরের পাশাপাশি কেটে নেওয়া হয়েছিল যৌনাঙ্গও। এতে তাঁর মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে অভিযোগ তুলে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের বিরুদ্ধে আদালতে যান খুরশিদ। পাল্টা খুরশিদের বিরুদ্ধেও ভারতীয় দণ্ডবিধির (আইপিসি) ৩০৯ ধারা (আত্মহত্যার চেষ্টা)-র অধীনে মামলা দায়ের হয়।
দু’বছর আগের ওই ঘটনায় সোমবার সিবিআইকে একটি বিশেষ তদন্ত দল (এসআইটি) গঠনের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। খুরশিদের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার চেষ্টার মামলা বাতিল করা হয়েছে। বরং, জেআইসি কুপওয়াড়ার কার্যক্রমে ‘কাঠামোগত সমস্যা’গুলি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেন ওই যুবককে এ ভাবে নির্যাতন করা হয়েছিল, সে সব কারণও মূল্যায়ন করে দেখতে বলেছে দুই বিচারপতির বেঞ্চ। সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশে হেফাজতে নির্যাতনের মতো ঘটনার বিরুদ্ধে সাংবিধানিক সুরক্ষার বিষয়টি আরও এক বার স্পষ্ট হয়ে গেল। ফলে এই নির্দেশকে গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছে বিভিন্ন মহল।