এম নাগেশ্বর রাও। ফাইল চিত্র
আদালত অবমাননার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হলেন সিবিআইয়ের সদ্য প্রাক্তন অন্তর্বর্তী ডিরেক্টর এম নাগেশ্বর রাও। তাঁকে এক লক্ষ টাকা জরিমানা এবং আজ আদালতের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এজলাসের এক কোণে গিয়ে বসে থাকার শাস্তি দিল সুপ্রিম কোর্ট। এমন ঘটনা কার্যত নজিরবিহীন বলে জানাচ্ছেন প্রবীণ আইনজীবীরা।
প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের বেঞ্চ সিবিআইয়ের অতিরিক্ত আইনি পরামর্শদাতা এস ভাসুরামকেও দোষী সাব্যস্ত করেছে। প্রধান বিচারপতি তাঁদের বলেন, “আপনারা এক কোণে গিয়ে বসে থাকুন। আদালত শেষ না হওয়া পর্যন্ত উঠবেন না।”
সিবিআইয়ের অন্তর্বর্তী ডিরেক্টর থাকার সময়ে নাগেশ্বর বিহারের মুজফ্ফরপুরের হোমে যৌন হেনস্থার তদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম ডিরেক্টর এ কে শর্মাকে সরানোয় ক্ষুব্ধ হয় সুপ্রিম কোর্ট। কারণ, ওই মামলার তদন্তকারী অফিসারকে সরানো যাবে না বলে নির্দেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত।
প্রধান বিচারপতি আজ অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপালের কাছে জানতে চান, নাগেশ্বর নিজেই সওয়াল করবেন, নাকি তাঁর হয়ে সওয়াল করবেন বেণুগোপাল। তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অমান্য করেছেন নাগেশ্বর। তা হলে সরকারি খরচে তাঁর হয়ে সওয়ালের ব্যবস্থা করা হবে কেন?’’ বেঞ্চের কাছে হাতজোড় করে ক্ষমা চান নাগেশ্বর ও ভাসুরাম। তাঁদের শাস্তির কথা ঘোষণা করে বেঞ্চ। বেলা ৩টে ৪০ নাগাদ বেণুগোপাল অনুরোধ করেন, এ বার ওঁদের যেতে দেওয়া হোক। জবাবে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘আপনি কি চান ওঁদের আগামিকাল আদালতের কাজ শেষ না-হওয়া পর্যন্ত বসে থাকার শাস্তি দিই?’’ এর পরে বিকেল ৪টে পর্যন্ত বসে থাকেন দু’জনে।
সিবিআইয়ের প্রাক্তন নির্দেশক অলোক বর্মা বনাম প্রাক্তন অতিরিক্ত নির্দেশক রাকেশ আস্থানার দ্বৈরথের সময়ে অন্তর্বর্তী ডিরেক্টর নিযুক্ত হন নাগেশ্বর রাও। দায়িত্ব পাওয়ার পরেই রাতারাতি এক ঝাঁক আধিকারিককে বদলি করেন তিনি। এ কে শর্মাকে বদলি করা হয় সিআরপিতে।
গত কাল সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে নাগেশ্বর বলেছিলেন, “আদালতের নির্দেশ অবমাননা করার কথা আমি স্বপ্নেও ভাবতে পারি না।” নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনাও করেন তিনি। কিন্তু কান দেয়নি আদালত।