বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। ফাইল চিত্র।
ভারতীয় বাবা-মার ‘বিদেশি কন্যা’ সোফিয়া খাতুন অবশেষে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ‘শাপমুক্ত’ হলেন।
বাবা-মা, পাঁচ ভাই ভারতীয়। স্বামীও ভারতীয়। তার পরেও তাঁর গায়ে বিদেশি তকমা লাগিয়ে ২০১৬ থেকে কোকরাঝাড় ডিটেনশন ক্যাম্পে বন্দি রাখা হয় বরপেটার কামারগাঁওয়ের বাসিন্দা সোফিয়া খাতুনকে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে আজ তাঁর কারামুক্তি ঘটল।
বিচারপতি কুরিয়েন জোসেফের নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেয়, ভারতীয় বাবা-মা’র মেয়ে ও ভারতীয় ভাইদের বোনকে কী পরিপ্রেক্ষিতে বিদেশি সন্দেহে বন্দি করা হল—তার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করুক সরকার। আপাতত সোফিয়াকে প্রতি মাসে বরপেটা থানায় হাজিরা দিতে হবে।
পঞ্চাশোর্ধ সোফিয়ার সমস্যা ছিল বাবা ও ঠাকুরদার নাম নিয়ে। বাবা হাসান মুন্সির নাম বিভিন্ন সরকারি নথিতে কোথাও হাসান আলি, কোথাও হাসান আলি মুন্সি লেখা ছিল। একই ঘটনা ঠাকুরদার নামের ক্ষেত্রেও। ১৯৯৮ সালে সীমান্ত শাখার পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে প্রথম নোটিস পাঠায়। সোফিয়ারা ৫ ভাই, ৫ বোন। তাঁর তিন কন্যা ও এক পুত্র। ১৯৮৮ সালে বাবা ও ১৯৯১ সালে মা মারা যান। ২০১৬-য় ফরেনার্স ট্রাইবুনালে ওঠা মামলায় সোফিয়ার উকিল তাঁকে ভারতীয় হিসেবে ‘প্রমাণ’ করতে ব্যর্থ হন। হাইকোর্টেও সেই রায় বহাল থাকায় বছর দুয়েক ধরে তিনি ডিটেনশন শিবিরে ছিলেন।
সুপ্রিম কোর্টে মামলা ওঠার পরে ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্য সরকারের কাছে সোফিয়া খাতুনের পরিবারের নাগরিকত্ব সম্পর্কে বিশদ রিপোর্ট তলব করে। গত কাল রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা পেশ করে জানায়, সোফিয়ার বাবা-মা, অন্য আত্মীয়রা সকলেই ভারতীয়। কিন্তু বাবার নামে গন্ডগোল থাকায় বাবার সঙ্গে সোফিয়ার সম্পর্ক আদালতে প্রতিষ্ঠিত নয়। এর পর সুপ্রিম কোর্ট গোটা বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দেয়। একই সঙ্গে মুক্তি দেয় সোফিয়াকে।