—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
নির্দিষ্ট মেয়াদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির কারাবাসের মেয়াদ শেষ হলেই তাঁকে সংশোধনাগার থেকে মুক্তি দিতে হবে। মঙ্গলবার জানাল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, যে আসামিদের নির্দিষ্ট মেয়াদের যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয়েছে, তাঁদের কারাবাসের মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার পরে ছেড়ে দিতে হবে। এর জন্য নতুন করে কোনও নির্দেশের প্রয়োজন নেই। সব রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের স্বরাষ্ট্রসচিবদের সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশ মেনে সংশোধনাগারগুলিতে নজর দিতে বলেছে বিচারপতি বিভি নাগরত্ন এবং বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ। ২০০২ সালে নীতীশ কাটরা খুনে অন্যতম দোষী সুখদেব পেহেলওয়ানের মুক্তির নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সেই শুনানির সময়েই এই পর্যবেক্ষণের কথা জানিয়েছে শীর্ষ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ।
সুখদেবের সাজার মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। তার পরেও কেন তিনি জেলে রয়েছেন, সেই প্রশ্নই তুলেছে সুপ্রিম কোর্ট। ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, ‘‘এ ধরনের মানসিকতা থাকলে সব দোষীকে জেলেই মরতে হবে।’’
নীতীশ খুনে দোষী সাব্যস্ত সুখদেবকে ২০ বছরের সাজা দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। সেই সাজার মেয়াদ শেষ হয়েছে গত মার্চে। তিনি সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দায়ের করেন। সুপ্রিম কোর্ট বিষয়টির নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তাঁকে তিন মাসের জন্য অস্থায়ী ভাবে মুক্তি দেয়। ২৯ জুলাই সুখদেবকে পাকাপাকি ভাবে মুক্তির নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু বাধা দেয় সেনটেন্স রিভিউ বোর্ড। সুখদেবের আচরণ নিয়ে অভিযোগ জানায় তারা। এই নিয়েই অসন্তোষ প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। তার পর্যবেক্ষণ, ‘‘এটা কী ধরনের আচরণ!’’
গত জুলাই মাসে সুপ্রিম কোর্টে শুনানিতে দিল্লি সরকারের আইনজীবী তথা অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল অর্চনা পাঠক দাভে সুখদেবের মুক্তির বিরোধিতা করেন। তিনি সওয়াল করে জানান, কোর্টের নির্দেশ অনুসারে সাজা পাওয়ার ২০ বছরের মধ্যে সুখদেব তা কমানোর আবেদন করতে পারবেন না। তাঁর প্রকৃত সাজার মেয়াদ শেষ হয়নি এখনও। ‘যাবজ্জীবন’-এর অর্থ সুখদেবকে জীবনের বাকি দিন জেলেই কাটাতে হবে। সেই সওয়ালের বিরোধিতা করেন সুখদেবের আইনজীবী। তিনি জানান, ২০ বছর টানা জেলে ছিলেন সুখদেব। সেই সাজার মেয়াদ শেষ হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ জানিয়েছে, ২০ বছরের সাজার মেয়াদের পরে আর জেল খাটতে হবে না সুখদেবকে।
২০০২ সালে একটি বিয়ের আসর থেকে অপহরণ করা হয়েছিল নীতীশকে। ১৬-১৭ ফেব্রুয়ারি রাতে তাঁকে খুন করা হয়েছিল। দোষী বিকাশ যাদবের বোন ভারতী যাদবের সঙ্গে নীতীশের সম্পর্ক ছিল বলে খুন করা হয় তাঁকে। বিকাশ এবং তাঁর তুতো ভাই বিশাল যাদবকে দোষী সাব্যস্ত করে ২৫ বছরের সাজা দিয়েছে আদালত। অন্যতম দোষী ছিলেন সুখদেব।