শপথের আগে দল ছাড়লেও কি শাস্তি

এই যুক্তি মানতে চাননি সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা। বিচারপতি এ কে সিক্রির বেঞ্চ মন্তব্য করে, বিধায়করা শপথ নেওয়ার আগে দলত্যাগ বিরোধী আইনের আওতায় পড়েন না, এমন যুক্তি মানা অসম্ভব।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৮ ০৪:০৬
Share:

কর্নাটক বিধানসভায় ভোটাভুটির আগেই যদি কংগ্রেসের এক-একাধিক বিধায়ক বিজেপিতে যোগ দেন, সে ক্ষেত্রে কি দলত্যাগ বিরোধী আইন প্রযোজ্য হবে? শনিবার বিকেলে বি এস ইয়েদুরাপ্পার শক্তিপরীক্ষা। তার আগে এই প্রশ্নে নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে।

Advertisement

ভোটের ফল বলছে, কর্নাটক বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠ নয় বিজেপি। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টে বুধবার গভীর রাতের শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল যুক্তি দিয়েছিলেন, বিধানসভায় ভোটাভুটির সময় কোন বিধায়ক কোন দিকে ভোট দেবেন, তা আন্দাজ করে সুপ্রিম কোর্টের কোনও বিষয়ে নাক গলানো উচিত নয়। কারণ, সাংসদ বা বিধায়ক হিসেবে শপথ নেওয়ার আগে কারও বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইন প্রযোজ্য হয় কি না, তা নিয়ে অস্পষ্টতা রয়েছে।

এই যুক্তি মানতে চাননি সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা। বিচারপতি এ কে সিক্রির বেঞ্চ মন্তব্য করে, বিধায়করা শপথ নেওয়ার আগে দলত্যাগ বিরোধী আইনের আওতায় পড়েন না, এমন যুক্তি মানা অসম্ভব। কারণ, তাতে এর অর্থ দাঁড়াবে, শপথের আগে ঘোড়া কেনাবেচার খোলা নিমন্ত্রণ রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের এই মন্তব্যের পরে আইনি বিশেষজ্ঞদের মধ্যেও আলোচনা শুরু হয়েছে বিষয়টি নিয়ে। তাঁদের মতে, এমনিতেই গোয়া, মণিপুর, মেঘালয়ে বিজেপির জোটকে সরকার গড়তে ডাকা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আগামী দিনে ছোট রাজ্যগুলিতে এই প্রশ্ন আরও বড় হয়ে উঠতে পারে।

Advertisement

সামনে মিজোরামের ভোট। রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবের মতে, ‘‘আইনত শপথ নেওয়ার পরেই দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকর হয়। কিন্তু কংগ্রেসের কোনও বিধায়ক যদি শপথ নেওয়ার আগেই কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে ন, তা হলেও বিধানসভায় তিনি কংগ্রেসেরই বিধায়ক হয়ে থাকবেন। তাঁকে কংগ্রেসের হুইপও মানতে হবে। না মানলেই দলত্যাগ বিরোধী আইনে ব্যবস্থা হবে।’’ বিশ্বজিৎ মনে করাচ্ছেন, ‘‘মুশকিল হল, দেশে অনেক ক্ষেত্রে এই আইনের সঠিক প্রয়োগ হয় না। কারণ, এই আইনে ব্যবস্থা নোওয়াটা নির্ভর করে স্পিকারের ইচ্ছার উপরে।’’ প্রবীণ আইনজীবী অমরেন্দ্র শরণও বলছেন, ‘‘নির্বাচিত ঘোষণার পরেই দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকর হয়। ফলে নির্বাচিত বিধায়ককে তাঁর দলের নির্দেশ মানতেই হবে।’’

আইনজীবীরা অবশ্য বলছেন, এই আইনের ফাঁক গলেও নিজের দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা যায়। হুইপ অমান্য করে অন্য দলের হয়ে ভোট দেওয়ার দরকারই নেই, অসুস্থ বলে মেডিক্যাল সার্টিফিকেট দিয়েও কেউ অনুপস্থিত থাকতে পারেন। সে ক্ষেত্রে দলত্যাগ বিরোধী আইনেও তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। কর্নাটকে কংগ্রেস-জেডিএস জোটের এক বা একাধিক বিধায়ক এমন পথ নিলে আস্থাভোটে জেতার জন্য জাদুসংখ্যাটা ১১২ থেকে কমে যাবে। ইয়েদুরাপ্পার পথ মসৃণ করার চেষ্টা হতে পারে এ ভাবেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন