ভারত-নেপাল সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে

রাজ্যের ভারত-নেপাল সীমান্তের নজরদারি আরও আঁটোসাটো করার সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। গত সপ্তাহে সীমান্তে মোতায়েন সশস্ত্র সীমা বলে’র (এসএসবি) ডিজি রজনীকান্ত মিশ্র শিলিগুড়িতে এসেছিলেন।

Advertisement

কৌশিক চৌধুরী

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৮ ০২:৩৪
Share:

রাজ্যের ভারত-নেপাল সীমান্তের নজরদারি আরও আঁটোসাটো করার সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। গত সপ্তাহে সীমান্তে মোতায়েন সশস্ত্র সীমা বলে’র (এসএসবি) ডিজি রজনীকান্ত মিশ্র শিলিগুড়িতে এসেছিলেন। বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা ঘুরে দেখা ছাড়াও নেপাল ও ভুটান সীমান্তে মোতায়েন অফিসারদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেন ডিজি। এসএসবি সূত্রের খবর, জাল টাকা, চোরাচালান, বন্যপ্রাণ পাচার থেকে আগ্নেয়াস্ত্র তো বটেই দুষ্কৃতীদের সক্রিয়তা ঠেকাতে রাজ্যের নেপাল সীমান্ত নতুন ১৫টি সীমান্ত চৌকি (বিওপি) তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন। অফিসারেরা জানান, বর্তমানে সাড়ে ৩ কিলোমিটার পরপর মোটামুটি চৌকি রয়েছে। দূরত্বটা কমিয়ে ৩ কিলোমিটার করা হবে।

Advertisement

এসএসবি সূত্রের খবর, ১৭৫১ কিলোমিটার ভারত-নেপাল সীমান্তের মধ্যে শিলিগুড়ি ফ্রন্টিয়ারের অধীণে রয়েছে ৩১৫ কিলোমিটার। বর্তমানে ৯০টি সীমান্ত চৌকি পুরোপুরি কাজ করছে। এবার সংখ্যাটা বাড়িয়ে ১০৫টি করা হচ্ছে। ১৫টির মধ্যে রাজ্যের লাগোয়া বিহারে ৩টি, সিকিমে ২টি নতুন সীমান্ত চৌকি হবে। বাকি নতুন ১০টি চৌকিই রাজ্যের সীমান্তে থাকবে। সেই সঙ্গে সিকিমের দিকে নতুন আরও দুই কোম্পানি ব্যাটালিয়ান মোতায়েন করার কথাও ঠিক হয়েছে। আগামী ছয়মাসের মধ্যে সমস্ত প্রক্রিয়া শেষ করার কথা বলে গিয়েছেন এসএসবি-র ডিজি। বর্তমানে সীমান্তে ৯ কোম্পানি ব্যাটালিয়ন রয়েছে।

বাহিনীর শিলিগুড়ি ফ্রন্টিয়রের আইজি শ্রীকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সীমান্ত চৌকির বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু হতে চলছে। নতুন ১৫টি চৌকি হবে। জমির সমস্যা নেই। এতে সীমান্তে নজরদারি আরও মজবুত হবে।’’

Advertisement

শিলিগুড়ি ফ্রন্টিয়ারের অধীণে বিহারের কিসানগঞ্জ, ঠাকুরগঞ্জ, রানিডাঙা হয়ে সিকিম অবধি নেপাল সীমান্ত। তেমনই, মালবাজার, ফালাকাটা, আলিপুরদুয়ারের দিকে ভুটান সীমান্ত এসএসবি দেখভাল করে। গত ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর অবধি জালটাকা, মাদক, বন্যপ্রাণ, চোরা কারবার মিলিয়ে ৫৫৩ কোটি টাকার মালপত্র উদ্ধার করে ফ্রন্টিয়র। উদ্ধার হয় ৩৯টি আগ্নেয়াস্ত্র। ধরা পড়েছিলেন ১০১১ জন। সীমান্ত জুড়ে দুষ্কৃতীদের সক্রিয়তা বাড়তে থাকায় সম্প্রতি এসএসবি-র নতুন গোয়েন্দা শাখাও তৈরি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।

এসএসবি-র অফিসারেরা জানান, ১৯৫১ সালের ভারত-নেপাল মৈত্রী চুক্তির জেরে দুই পারের বাসিন্দারা অবাধে দুই পাশে যাতায়াত করেন। কাঁটাতারের বেড়াও নেই। এর সুযোগে বিভিন্ন সময়ে চোরা কারবারীরা সীমান্তে সক্রিয় হয়। বিশেষ করে নকশালবাড়ি, খড়িবাড়ি ব্লকের বিভিন্ন গ্রামীণ রাস্তা ব্যবহার করে দুষ্কৃতীরা যাতায়াত করেন। একসময় কেএলও-আলফা জঙ্গিরাও উত্তরবঙ্গ থেকে বিপদ বুঝলেই সেই সব পথে নেপাল ঢুকে আত্মগোপন করতেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন