এ মাসেই মুখোমুখি হচ্ছেন দু’দেশের বিদেশমন্ত্রী।
সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে মুখোমুখি হতে পারেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ এবং পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি। নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকেই সার্ক-ভুক্ত দেশগুলির বিদেশমন্ত্রীদের জন্য মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন হয়েছে। সূত্রের খবর, ওই ভোজসভায় আনুষ্ঠানিক আলোচনা না-হলেও সৌজন্য সাক্ষাৎ হবে। খাওয়ার টেবিলের ঘরোয়া পরিবেশে কিছু বাক্য বিনিময়ও হতে পারে দু’টি দেশে।
সুষমা এবং কুরেশি, দু’জনেই নিজস্ব প্রতিনিধি দল নিয়ে আমেরিকা পৌঁছচ্ছেন সেপ্টেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে। সুষমা রাষ্ট্রপুঞ্জে বক্তৃতা দেবেন ২৯ সেপ্টেম্বর। তার দু’দিন আগে, অর্থাৎ ২৭ তারিখে সার্ক-মন্ত্রীদের মধ্যাহ্নভোজের কথা রয়েছে। বিদেশ মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, ‘‘কোনও আনুষ্ঠানিক আলোচনার পরিকল্পনা এখনও পর্যন্ত নেই। আশা করব, পাকিস্তানের নতুন সরকার সন্ত্রাসবাদ নিয়ে আমাদের উদ্বেগ দূর করার জন্য পদক্ষেপ করবে। অন্তত মুম্বই হামলায় অভিযুক্তদের শাস্তি দেওয়ার প্রশ্নে কিছু তো করুক পাকিস্তান।’’
মুখে বললেও ইমরান খানের নতুন সরকার যে ক্ষমতায় আসার পরেই নয়াদিল্লির জন্য দরাজহস্ত হবে, এমন আশা আদৌ করছেন না সাউথ ব্লকের কর্তারা। তবে সতর্ক ভাবে তাঁরা বলছেন, আপাতত দু’দেশের মধ্যে বেশ কয়েকটি আস্থাবর্ধক পদক্ষেপের ফলে কিছুটা ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি হয়েছে। ইমরান শপথ নেওয়ার
দিনে চিঠি লিখে দু’দেশের সম্পর্কের উন্নতি কামনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও।
রাজনৈতিক সূত্রের মতে, কোন পাক-নীতি নিয়ে এগোলে লোকসভা ভোটের আগে সুবিধাজনক অবস্থায় থাকা যাবে, আপাতত সেই হিসেব কষে এগোচ্ছে মোদী সরকার। নভজ্যোৎ সিংহ সিধুকে ইসলামাবাদে পাঠিয়ে অথবা পাকিস্তানি বন্দিদের মুক্তি দিয়ে একটি ইতিবাচক সঙ্কেত ঝুলিয়ে রাখা হচ্ছে। আবার একই সঙ্গে বিমস্টেক সম্মেলন অথবা আমেরিকার সঙ্গে ‘টু প্লাস টু’ বৈঠকে ইসলামাবাদের সন্ত্রাসবাদী ভূমিকার কড়া নিন্দা করা হচ্ছে। ভোটের আগে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আরও একটি ‘সার্জিকাল স্ট্রাইক’ করে দেশপ্রেমের বন্যা বইয়ে দিতে পারলে আখেরে লাভ বেশি হবে কি না, তা বিবেচনা করে দেখা হচ্ছে বলে রাজনৈতিক সূত্রের খবর। অন্য দিকে সীমান্তে আপাতত শান্তি বজায় রাখা, কাশ্মীরকে শান্ত রাখার মতো দিকগুলিকেও বর্তমান পরিস্থিতিতে অগ্রাহ্য করতে পারছে না নয়াদিল্লি।
নভেম্বরে সার্ক সম্মেলন আয়োজনে সক্রিয়তা বাড়াচ্ছে পাক সরকার। কূটনৈতিক সূত্রের খবর, শীঘ্রই বিশেষ দূত পাঠিয়ে মোদীকে সার্ক-এ নিমন্ত্রণ করতে চলেছেন ইমরান। ভারতকে আলোচনার টেবিলে বসিয়ে কাশ্মীর নিয়ে চাপ বাড়ানোটা ইমরানের অগ্রাধিকার। অথচ ভোটের মুখে পাকিস্তান সফর অত্যন্ত বড় ঝুঁকি মোদীর কাছে। তাঁর স্বতঃপ্রণোদিত লাহৌর সফরের পরই পঠানকোটের সেনা ছাউনি আক্রমণ করে পাকিস্তানের মদতপ্রাপ্ত জঙ্গিরা। মুখ পুড়েছিল মোদী সরকারের। এই পরিস্থিতিতে নিউ ইয়র্কের মধ্যাহ্নভোজে দু’দেশের অন্যতম শীর্ষ নেতার দেখা হওয়ার বিষয়টি তাই গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।