ফাইল চিত্র।
দশ মাস শহরবন্দি থাকার পরে অবশেষে বিদেশ যাত্রার অনুমতি মিলল বিদেশমন্ত্রীর! আর সেই ছাড়পত্র মিলতেই এ বার ঢাকার পথে সুষমা স্বরাজ। তার পরে যাবেন মায়ানমারে।
গত ডিসেম্বরে কিডনিতে অস্ত্রোপচার হয় সুষমার। তার কয়েকমাস আগে থেকেই অসুস্থতার কারণে বিদেশমন্ত্রীর বিদেশ সফরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন ডাক্তাররা। সুষমার শেষ বিদেশযাত্রা ছিল গত বছর সেপ্টেম্বরে, ইতালিতে। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, বাংলাদেশে যাতায়াতের ধকল যে হেতু কম, তাই প্রথম সফর হিসেবে ঢাকাকেই বেছে নেওয়া হয়েছে। আগামী মাসে ১০ তারিখে ঢাকা যাবেন সুষমা।
গত এপ্রিলে শেখ হাসিনার নয়াদিল্লি সফরের পরে, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে আরও জোরদার করতে চাইছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। তিস্তা চুক্তি নিয়ে এখনও পর্যন্ত সমাধানসূত্র বেরিয়ে আসেনি। তবে সেই জটিলতার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আটকে না রেখে শিল্প, বাণিজ্য, যোগাযোগ, পরিকাঠামো নির্মাণে বিভিন্ন চুক্তির রূপায়নের দিকে জোর দেওয়া হচ্ছে। ভারত নতুন করে ৫০০ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে বাংলাদেশকে। পরিকাঠামো ক্ষেত্রে কোন প্রকল্পগুলি এর আওতায় আসবে— তা চিহ্নিত করার কাজ শুরু হচ্ছে।
আরও পড়ুন: আপাতত সনিয়াই মুখ মোদীর বিরুদ্ধে
আগামী এক বছরে দু’দেশের মধ্যে যে বিপুল কর্মযজ্ঞ চলবে, তার সলতে পাকাতেই বিদেশমন্ত্রীর আসন্ন ঢাকা সফর। গত কালই তিস্তা চুক্তি নিয়ে ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন সুষমা। পাশাপাশি এ-ও জানিয়েছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়েই এ ব্যাপারে এগোতে চাইছে কেন্দ্র।
বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, আগামী মাসে বাংলাদেশে যাওয়ার আগে মমতার সঙ্গে কথা বলবেন সুষমা। গত কালই তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া তোর্সা সংক্রান্ত বিকল্প প্রস্তাবটি খতিয়ে দেখছে কেন্দ্র। এ ব্যাপারে রিপোর্ট তৈরি হলে মমতার সঙ্গে আলোচনা করা হবে।
অনেকেই অবশ্য মনে করছেন, এ সব কথা বলে আসলে মমতার প্রতি ইতিবাচক বার্তা দিতে চাইছেন সুষমা। তিস্তা চুক্তি বাতিল করে অন্য কোনও নদীর জল বাংলাদেশের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার বিষয়টি দু’দেশের কারও পরিকল্পনার মধ্যে নেই। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাবকে গুরুত্ব
দিয়ে তাঁকে নরম করার কৌশল নিচ্ছে মোদী সরকার। তিস্তা নিয়ে অনড় মনোভাব কমাতে মমতার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে চাইছেন সুষমা।
সুষমা ও মমতা— এই দুই নেত্রীর ব্যক্তিগত রসায়নও যথেষ্ট ভাল। আগামী বছরের শেষে বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন। তার আগেই তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়িত করতে চাইছে ভারত।