সুইডেনের রাজকুমারী ভিক্টোরিয়ার সঙ্গে রাষ্ট্রপতি। ছবি: রয়টার্স।
ধাপার মাঠ যদি হয় স্কি-রিং! আদি গঙ্গা বা বাগজোলা খালে যদি হয় রিভার ক্রুজ! অনেকেই শুনে নাক কুঁচকাবেন, কিন্তু ঠিক এটাই করে দেখিয়েছে সুইডেন।
এ দেশের হ্যামারবে শহর বছর কয়েক আগেও পাল্লা দিতে পারত পার্ক সার্কাসের চামড়া পট্টির সঙ্গে। ঘিঞ্জি রাস্তা, পরিকল্পনা ছাড়া গড়ে ওঠা কলকারখানা, সঠিক নিকাশি ব্যবস্থার অভাবে দূষণ এত বেড়ে গিয়েছিল যে হ্যামারবে ছাড়তে শুরু করেন বাসিন্দারা। শেষমেশ সুইডিশ সরকার সিদ্ধান্ত নেয়, আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সুইডেনের প্রথম স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তোলা হবে হ্যামারবেকে। সুইডিশ সরকারের আশা, ২০১৮ সালে কাজ শেষ হলে এই শহরে ৫০ হাজারেরও বেশি লোক থাকতে পারবে।
ক্ষমতায় এসেই মোদী সরকার কানপুর, বারাণসীর মতো প্রায় একশো শহরকে স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে। তার পরেই নড়েচড়ে় বসেন সুইডিশ কর্তৃপক্ষ। দেশের বিনিয়োগ কমিটির চেয়ারম্যান জেকব ওয়েলবার্গ বলেন, ‘‘অন্যান্য দেশেও স্মার্ট সিটি বানাই। ভারতের বৃহত্তর বাজার ধরতে আমরা আগ্রহী।’’ গ্রিন-প্রযুক্তি ব্যবহার করে হ্যামারবে লেকের দু’ধারে নতুন করে গড়ে উঠেছে হ্যামারবে। গত কাল ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় স্টিমারে চড়ে শহরটি ঘুরে দেখেন। ভিজিট সুইডেন সংস্থার সিইও টমাস ব্রল বলেন, ‘‘ময়লা জমে জমে পাহাড় হয়ে গিয়েছিল। নতুন শহর গড়ার সময় বিশেষ প্রজাতির ঘাস লাগিয়ে সবুজ করে ফেলা হয় পাহাড়টিকে। তার পর তাকে এমন আকার দেওয়া হয় যাতে শীতে বরফ জমলে স্কি করা যায়। গত কয়েক বছর ধরে এটি ইউরোপের অন্যতম স্কি করার জায়গা।’’ স্বচ্ছতার নিরিখে ইউরোপের প্রথম সারিতে জায়গা করে নিয়েছে ওই লেক। হ্যামারবের সাফল্যের কারণে ২০১০ সালে ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে সবুজ রাজধানীর মর্যাদা পায় স্টকহলম।
আজ প্রণববাবু সুইডিশ বণিক সভার এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘‘সরকার চায় ভারতের মতো আকর্ষণীয় বাজার ধরতে সুইডিশ সংস্থাগুলি এগিয়ে আসুক।’’ তিনি আরও জানান, সুইডেনের পর্যটকদের ইলেকট্রনিক ভিসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত।