থামলেন দ্রাবিড় রাজনীতির শিল্পী কলাইনার, অন্ত্যেষ্টির জমিতে জট

সৌজন্যের সুর কেটে যায় সমাধিস্থল নিয়ে বিরোধে। পরিবার চেয়েছিল, মেরিনা সৈকতে আন্না সমাধি অর্থাৎ প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী সি এন আন্নাদুরাইয়ের সমাধির কাছে তা হোক। কিন্তু করুণানিধি ‘প্রাক্তন’ মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মারা গিয়েছেন— এই যুক্তিকে সামনে রেখে এডিএমকে সরকার সেই অনুরোধ রাখেনি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

চেন্নাই শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৮ ০৪:৩২
Share:

এম করুণানিধি। —ফাইল চিত্র।

সব লড়াই শেষ হল সন্ধে ৬টা ১০-এ। যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়েও হার মানতে বাধ্য হলেন কাবেরী হাসপাতালের চিকিৎসকেরা। ৯৪ বছর বয়সে মারা গেলেন দ্রাবিড় রাজনীতির পাঁচ দশকের কলাইনার। তামিলে যার অর্থ, শিল্পী। ফিল্মের চিত্রনাট্য লিখিয়ে হিসেবে যাত্রা শুরু করা তামিলনাড়ুর পাঁচ বারের মুখ্যমন্ত্রী মুথুভেল করুণানিধিকে এ নামেই চিনে এসেছেন তাঁর অনুগামীরা। ডিএমকের সভাপতি হিসেবে এটিই ছিল তাঁর ৫০তম বছর। শেষ বছরটা বার্ধক্যের কারণে নানা জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। হাসপাতালেই কেটেছে দীর্ঘ সময়। রক্তচাপ নেমে যাওয়ায় শেষ দফায় তাঁকে কাবেরি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় গত ২৬ জুলাই। মুমূর্ষু স্বামীকে দেখতে গত কাল হাসপাতালে এসেছিলেন স্ত্রী দয়ালু আম্মাল। কাল রাজ্যে সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী পলানীস্বামী।

Advertisement

করুণানিধির অবস্থা সঙ্কটজনক জেনেই আজ বিকেল ৫টা ২০ নাগাদ তড়িঘড়ি নবান্ন থেকে বেরিয়ে সোজা দমদম বিমানবন্দরে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলে যান, ‘‘আমি চেন্নাই যাচ্ছি। বুধবার ফিরব। তার পরে ঝাড়গ্রাম যাব।’’ পরে টুইট করেন, ‘‘দেশ তার এক মহান সন্তানকে হারাল। তাঁর পরিবারকে গভীর সমবেদনা জানাই। তাঁদের সঙ্গে গোটা দেশ শোকসন্তপ্ত।’’ আগামিকাল আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, রাহুল, কে সি রাও, পিনারাই বিজয়ন ও বিভিন্ন দলের নেতানেত্রীরা।

তবে সৌজন্যের সুর কেটে যায় সমাধিস্থল নিয়ে বিরোধে। পরিবার চেয়েছিল, মেরিনা সৈকতে আন্না সমাধি অর্থাৎ প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী সি এন আন্নাদুরাইয়ের সমাধির কাছে তা হোক। কিন্তু করুণানিধি ‘প্রাক্তন’ মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মারা গিয়েছেন— এই যুক্তিকে সামনে রেখে এডিএমকে সরকার সেই অনুরোধ রাখেনি। ডিএমকের কার্যনির্বাহী সভাপতি, করুণা-পুত্র এম কে স্ট্যালিন মুখ্যমন্ত্রী পলানীস্বামীর সঙ্গে দেখা করলেও কাজ হয়নি। এডিএমকে সরকার মেরিনার বদলে দুই একর জমি বরাদ্দ করে গুইন্ডির গাঁধী মণ্ডপমে। তারা হাতিয়ার করে বেশ ক’টি জনস্বার্থ মামলাকে। সেগুলিতে অভিযোগ আনা হয়েছে, সৈকতটি ক্রমেই শ্মশান ও সমাধিস্থলে পরিণত হচ্ছে। দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। আন্নাদুরাই, এমজিআর, জয়ললিতার পরে আর কারও অন্ত্যেষ্টি বা সমাধি গড়ার অনুমতি যেন না দেয় বৃহত্তর চেন্নাই পুরসভা। এ দিন দুপুরে একটি মামলা প্রত্যাহার করা হলেও ঝুলে ছিল আরও মামলা। ডিএমকের আর্জিতে রাতে হাইকোর্টে শুনানি শুরু হলেও বেশি রাতের দিকে আদালত জানায়, বুধবার সকালে তারা মামলাটি ফের শুনবে। তবে আদালতের রায়ের আগেই শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক তরজা। রাহুল বলেছেন, ‘‘জয়ললিতার মতো করুণানিধির জন্যও মেরিনা সৈকতে জায়গা দেওয়া উচিত।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: চেন্নাইয়ে বসেই নির্ধারক শক্তি করুণানিধি

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন