প্রতি বছর নিয়ম করে বিঘ্নহর্তার দর্শনে লালবাগচায় যান তিনি! আর সেটাই এ বারের গণেশ চতুর্থীতে বিঘ্ন ডেকে আনল মুম্বইয়ের নন্দিনী গোস্বামীর কপালে! মণ্ডপের প্রহরারত পুলিশের হাতে বেধড়ক মার খেতে হল তাঁকে। আর দেখতে দেখতে সোশ্যাল নেটওয়ার্কে ঝড় তুলল সেই লা়ঞ্ছনার ভিডিও।
দোষের মধ্যে নন্দিনী তাঁর মায়ের সঙ্গে দাঁড়িয়ে ছিলেন ভিআইপি লাইনে। অবশ্য, শুধু তাঁরাই নন! নন্দিনীর দাবি, তাঁদের মতোই সাধারণ মানুষের একটা ভিড় অপেক্ষা করছিল ভিআইপি লাইনে। ভিআইপি দরজা খোলা মাত্র সেই ভিড় মণ্ডপের দিকে ছুটে যায়।
মাকে সঙ্গে নিয়ে দরজার দিকে এগোন নন্দিনীও। লাইনের আগে থাকা বেশ কিছু লোক তত ক্ষণে ঢুকে পড়েছেন মণ্ডপের ভিতরে। সেই দিকে এগোচ্ছিলেন নন্দিনীরাও। সেই সময়েই তাঁদের বাধা দেন জনাকয়েক মহিলা কনস্টেবল। বলেন, এই দরজা দিয়ে তাঁরা মণ্ডপের ভিতরে যেতে পারবেন না। ওই মহিলা কনস্টেবলরা ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেন তাঁদের।
নন্দিনী জানান, এত জোরে ধাক্কা দেওয়া হয় যে তাঁর মায়ের শাড়ি ছিঁড়ে যায়। তখনই আর থাকতে না পেরে ঘটনার প্রতিবাদ করেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে তাঁর উপরে ঝাঁপিয়ে পড়েন চার-পাঁচ জন মহিলা কনস্টেবল। নির্মম ভাবে তাঁরা প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে পেটাতে থাকেন তাঁকে!
নন্দিনীর বক্তব্য যে সত্যি, মোবাইলে তোলা ভিডিও ফুটেজে তার প্রমাণ রয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, প্রথমে তাঁকে থাপ্পড় মারা হয়েছে, তার পরে ধাক্কা দিয়ে ফেলে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এক কোণে। তার পরেই শুরু হয়েছে অবিরাম মারের পালা! মারতে মারতে এক সময়ে ওই মহিলা কনস্টেবলরা ক্লান্ত হয়ে পড়লে তার পরে নন্দিনীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়।
অবশ্য, নন্দিনীর মার খাওয়ার ঘটনা দেখা গেলেও তাঁকে বাঁচানোর জন্য বাড়ির লোক কী করছিলেন, সেটা ওই ভিডিওয় দেখা যায়নি।
ওই মহিলা কনস্টেবলরা অবশ্য বলছেন অন্য কথা। তাঁদের দাবি, নন্দিনী মানসিক ভাবে সুস্থ নন। তাঁরা ভদ্র ভাবেই ভিতরে ঢুকতে বাধা দেন। তার পরে নন্দিনী এতটাই উত্তেজিত হয়ে পড়েন এবং অশান্তি সৃষ্টি করেন যে তাঁকে ঠেকানোর জন্যই গায়ে হাত তুলতে হয়। নন্দিনী এবং তাঁর পরিবার যদিও এই মানসিক অসুস্থতার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীশ ওই ভিডিও ফুটেজের ভিত্তিতে ঘটনাটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। ভিডিও ফুটেজ থেকে ওই মহিলা কনস্টেবলদেরও সনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।