পটনার এক সভায় তেজস্বী যাদব। রবিবার। ছবি: পিটিআই।
সন্ধ্যা নেমেছে। বিহারের রামগড়ের হাই স্কুলের মাঠে তখন সবে শেষ হয়েছে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সভা। রামগড়ের বর্তমান বিধায়ক ও বিজেপি প্রার্থী অশোককুমার সিংহের হয়ে প্রচার করেছেন রাজনাথ। কিন্তু তাঁর সভা শেষ হওয়ার পরেও তৎপরতা কমল না মাঠে।
কারণ, পরের দিনই ওই মাঠেই সভা করবেন বিরোধী মহাগঠবন্ধনের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী ও আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব। বক্সারের সাংসদ সুধাকর সিংহ বললেন, ‘‘কেবল গেরুয়া থেকে বদলে সবুজ প্যান্ডাল করতে হবে।’’
আজ বিহার বিধানসভা ভোটের দ্বিতীয় পর্যায়ের জন্য প্রচারের শেষ দিনে যখন তেজস্বী যাদবের কপ্টার এসে পৌঁছল রামগড় স্কুলের মাঠে, ততক্ষণে সুধাকর সিংহ ও তাঁর ভাই তথা রামগড়ের আরজেডি প্রার্থী অজিত সিংহের বক্তৃতা শেষ। সভাস্থলে চেয়ার ভর্তি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের সভার মতো মহিলাদের ভিড় নেই সেখানে।
এ দিনটা শুধু প্রচারের শেষ দিনই নয়, লালুপ্রসাদ-পুত্র তেজস্বীর জন্মদিনও বটে। বিপুল উচ্ছ্বাসের মধ্যে বক্তৃতা শুরু করে তেজস্বী বললেন, ‘‘আমি ৩৬ পূর্ণ করলাম। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী আর মন্ত্রীরা, ইডি, সিবিআই, আয়কর এমনকি নির্বাচন কমিশনও ৩৭ বছর বয়সি এক জনকে থামাতে একজোট হয়েছে।’’ বক্তৃতার পরে যখন উড়ল তাঁর কপ্টার, তখন উপস্থিত জনতা হাত নাড়ল ঠিকই কিন্তু সেই সঙ্গে শোনা গেল উদ্বেগের সুরও। ভিড়ের মধ্যেই কয়েক জন বললেন, ‘‘এ সব ঠিক আছে। কিন্তু আমাদের সরকারটা হচ্ছে কি?’’
বিরোধীদের সরকার যে হচ্ছে না তা নিয়ে একেবারে নিশ্চিত কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আর তাঁর সহযোগীরা। যদিও বিহারে এসআইআরে কত জন অনুপ্রবেশকারীর নাম বাদ দেওয়া গিয়েছে সেই প্রশ্নের জবাব এখনও পর্যন্ত এড়িয়ে গিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ও নির্বাচন কমিশন। কিন্তু আগামী পাঁচ বছরে সব অনুপ্রবেশকারীকে ফেরত পাঠানো হবে বলে ফের হুঙ্কার দিয়েছেন শাহ। আবার লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর তরফে ‘ভোট চুরি’র অভিযোগের বিরুদ্ধে সেই অনুপ্রবেশকেই অস্ত্র করে তাঁর বক্তব্য, ‘‘রাহুল গান্ধী বিহার থেকে ইটালি পর্যন্ত যাত্রা করতে পারেন। কিন্তু অনুপ্রবেশকারীদের এখানে থাকতে দেব না।’’ বিহারের আরওয়ালের সভা থেকে শাহের বক্তব্য, ‘‘অনুপ্রবেশকারীদের নাম বাদ গিয়েছে বলেই রাহুল ভোটচুরির অভিযোগ করছেন। প্রমাণ থাকলে তিনি কমিশনে অভিযোগ করুন।’’
তবে ভোট চুরির অভিযোগ ছাড়তে রাজি নন রাহুল। বিহারে ১৫ দিনের যাত্রা ছাড়াও ১৫টি সভা করা রাহুল এ দিন কিসানগঞ্জের সভা থেকেও বলেছেন, ‘‘মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশে ভোট চুরি হয়েছে। বিহারেও ভোট চুরির চেষ্টা হচ্ছে।’’ সম্প্রতি ভোট চুরি নিয়ে কিছু নির্দিষ্ট অভিযোগ সামনে এনেছেন রাহুল। তাঁর কথায়, ‘‘এগুলি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী আর নির্বাচন কমিশন চুপ কেন? কারণ এগুলি সত্য।’’
প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর
সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ
সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে