বাবা জেলে। মা’কে পাশে বসিয়ে আরজেডি নেতাদের বৈঠকে পৌরোহিত্য করলেন তেজস্বী যাদব। মাপার চেষ্টা করলেন দলের প্রবীণ নেতাদের মনোভাব।
কাল রাতে রাঁচী থেকে পটনা ফিরেছেন তেজস্বী। বাবা লালুপ্রসাদের সঙ্গেই রাঁচী গিয়েছিলেন তিনি। পশুখাদ্য মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে বাবা জেলে। একাই ফিরেছেন তিনি। ফিরেই আজকের বৈঠকটি ডাকেন। সেখানে লালুপ্রসাদের বার্তা তিনি সকলকে জানান। শুধু বিজেপিই নয়, তাঁকে জেলে পাঠানোর পিছনে নীতীশ কুমারেরও হাত দেখছেন লালুপ্রসাদ। প্রচারে এই মোদী-নীতীশ দু’জনের বিরুদ্ধেই সমান ভাবে আক্রমণাত্মক হতে হবে তাঁদের।
মাস কয়েক আগেই নিজের রাজনৈতিক উত্তরাধিকারী হিসেবে বড় ছেলে তেজপ্রতাপ নয়, ছোট ছেলে তেজস্বীর নামই ঘোষণা করেছেন লালুপ্রসাদ। বয়সে নবীন নেতা নিয়ে দলের প্রবীণ নেতাদের মধ্যে চাপা অসন্তোষ থাকলেও লালুর সামনে সে বিষয়ে ক্ষোভ কেউই দেখাননি বা দেখাতে সাহস পাননি। তবে এখন লালুপ্রসাদের অনুপস্থিতিতে তাঁরা তেজস্বীর নেতৃত্ব কী ভাবে নেন, কার্যত তা যাচাই করতেই আজকের এই বৈঠকটি ডাকা হয়েছিল। পরিস্থিতি যাতে হাতে বাইরে না যায় তার জন্য মা, রাবড়ী দেবীকে পাশে নিয়েই বসেছিলেন তেজস্বী।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কথা যা বলার তেজস্বীই বলেন। রাবড়ী দেবী চুপচাপই ছিলেন। দলের নেতারাও বিশেষ সরব হননি। তাঁরা তেজস্বীর বক্তব্য শুনেছেন। দু’চারটি পরামর্শও দিয়েছেন। সামগ্রিক পরিস্থিতির মোটামুটি পর্যালোচনা করেছেন। ঠিক হয়েছে, আগামী ৬ জানুয়ারি প্রবীণ নেতাদের নিয়ে তেজস্বী পরবর্তী বৈঠকটি করবেন।
আজকের বৈঠকে হাজির ছিলেন রঘুবংশপ্রসাদ সিংহ, আব্দুল বারি সিদ্দিকি, জগদানন্দ সিংহ, রামচন্দ্র পূর্বে, শিবানন্দ তিওয়ারির মতো নেতারা। তেজস্বী ওই বৈঠকে বলেন, ‘‘সারা জীবনের জন্য লালুপ্রসাদ জেলে যাননি। জেল থেকেই দলকে পথ দেখাবেন।’’ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের বক্তব্য, তেজস্বী বিধানসভার বিরোধী দলনেতা তথা একক বৃহত্তম দল আরজেডির পরিষদীয় দলের নেতা। সুতরাং নেতৃত্বে তিনি এসেই গিয়েছেন। তবে এখন পরিস্থিতি একটু অন্য রকম। কারণ লালুপ্রসাদ সশরীরে ছেলের পাশে নেই। এই সময় রঘুবংশপ্রসাদ, জগদানন্দবাবুরা তেজস্বীকে কতখানি পাত্তা দেবেন। পর্যবেক্ষকদের মতে, তেজস্বী যেমন আজকের বৈঠকে জল মেপেছেন, তেমনই প্রবীণ নেতারাও তেজস্বীকে বাজিয়ে দেখছেন।