‘মিস ইংল্যান্ড’ মিলা ম্যাগি। এ বছর বিশ্বসুন্দরীর প্রতিযোগিতার অন্যতম প্রতিযোগী। ছবি: সংগৃহীত।
প্রতিযোগীদের শোষণ এবং নারীবিদ্বেষী আচরণের অভিযোগে সম্প্রতি হায়দরাবাদে চলা ২০২৫ সালের ‘মিস ওয়ার্ল্ড’ প্রতিযোগিতা থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন ‘মিস ইংল্যান্ড’ মিলা ম্যাগি। এ বার সেই অভিযোগের ভিত্তিতে মুখ খুললেন তেলঙ্গানার এক সরকারি আধিকারিক। মিলার যাবতীয় অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’ বলেও দাবি করলেন তিনি।
তেলঙ্গানার একজন বর্ষীয়ান আইএএস অফিসারকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, মিলার অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’। ওই আধিকারিক বলেন, ‘‘ওঁর অভিযোগের সপক্ষে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।’’ রবিবার তেলঙ্গানা সরকারের বিশেষ মুখ্যসচিব জয়েশ রঞ্জনও পিটিআইকে জানিয়েছেন, গোটা ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছেন তিনি। তবে এখনও পর্যন্ত মিলার অভিযোগের সপক্ষে কোনও প্রমাণ মেলেনি। প্রথমে পারিবারিক সমস্যার কথা উল্লেখ করে প্রতিযোগিতা থেকে সরে এসেছিলেন মিলা। পরে একটি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি প্রতিযোগিতার নানা নিয়মের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন। তাঁর দাবি, সেখানে প্রতিযোগীদের সর্বদা চড়া মেকআপ করে থাকতে হত। কখনও আবার সারা দিন বল গাউন পরে থাকতে বাধ্য করা হত।
যদিও মিস ওয়ার্ল্ডের সিইও জুলিয়া মর্লি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। আয়োজকদের তরফেও বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, ‘‘চলতি মাসের শুরুতে মিলা ম্যাগি তাঁর মায়ের অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে প্রতিযোগিতা থেকে সরে গিয়েছিলেন। একজন মা হিসাবে মিলার ওই পরিস্থিতিতে সহানুভূতি জানিয়েছিলেন মিস ওয়ার্ল্ডের চেয়ারওম্যান জুলিয়া। প্রতিযোগীকে অবিলম্বে ইংল্যান্ডে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থাও করেছিলেন তিনিই।’’ শনিবার জুলিয়া বলেন, ‘‘ভারতে তাঁর অভিজ্ঞতা সম্পর্কে মিলার অভিযোগগুলি শুধু মিথ্যাই নয়, বরং মানহানিকর। ওঁর দাবিগুলি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’’ প্রসঙ্গত, মিলা যাওয়ার পর ‘মিস ইংল্যান্ড’-এর প্রথম রানার-আপ শার্লট গ্রান্ট তাঁর দেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন।
গত ১০ মে থেকে হায়দরাবাদে বিশ্বসুন্দরী (মিস ওয়ার্ল্ড) প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। চলবে ৩১ মে পর্যন্ত। সেখানে ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করছেন রাজস্থানের নন্দিনী গুপ্ত। সব ঠিকঠাকই চলছিল। কিন্তু আচমকা অন্যতম প্রতিযোগী ‘মিস ইংল্যান্ড’ মিলা প্রতিযোগিতা থেকে নিজের নাম তুলে নেন। আয়োজক সংস্থার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগও তোলেন তিনি। মিলার অভিযোগ, সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার আড়ালে আসলে প্রতিযোগীদের নানা ভাবে শোষণ করা হয়। তাঁর কথায়, ‘‘ওখানে নিজেকে যৌনকর্মী বলে মনে হচ্ছিল। বাঁদরকে যে ভাবে নাচানো হয়, সেই ভাবেই আমাদের পারফর্ম করতে হচ্ছিল।’’ এর পরেই উষ্মা প্রকাশ করে মিলা বলেন, ‘‘আমি কারও মনোরঞ্জনের পাত্রী হতে আসিনি।’’ মিলা আরও জানিয়েছেন, প্রতিযোগীদের সকাল থেকে মেকআপ করা, পোশাক পরা, সেগুলি ঘনঘন বদলানো, ইত্যাদি করতে হত। তার পর হাঁটতে হত ধনী পুরুষদের সামনে, তাঁদের মনোরঞ্জনও করতে হত। উল্লেখ্য, ৭৪ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম কোনও প্রতিযোগী ‘মিস ওয়ার্ল্ড’ প্রতিযোগিতা থেকে স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়িয়েছেন। আর তা নিয়েই হইচই পড়ে গিয়েছে বিশ্বে।