প্রতীকী ছবি।
শূন্য শূন্য শূন্য শূন্য…. লোকসভা নির্বাচনের আগে কংগ্রেসের স্পেকট্রাম দুর্নীতি নিয়ে তোপ দাগতে এভাবেই ‘শূন্য’ গুনে দেখাতেন নরেন্দ্র মোদী। সিএজির পরিসংখ্যান দিয়ে ১ লক্ষ ৭৬ হাজার কোটি টাকার টু-জি কেলেঙ্কারি নিয়ে হুঙ্কার ছাড়তেন। এ বারে সেই স্পেকট্রামেই মোদী জমানার দুর্নীতি খুঁজে পেল কংগ্রেস। তারা এর নাম দিয়েছে, ‘স্পেকট্রাম দুর্নীতি ২’।
স্পেকট্রামের টাকা উদ্ধার না করায় রাজকোষের ঘাটতি এবং এ সংক্রান্ত দুর্নীতি নিয়ে এর আগেও সরব হয়েছিল কংগ্রেস। এ বারে তারা অভিযোগ আনল, রিল্যায়্যান্স, এয়ারটেল, আইডিয়ার মতো টেলিকম সংস্থাগুলির আবেদনের ভিত্তিতে স্পেকট্রামে প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি করতে চলেছে মোদী সরকার। টেলিকম ও অর্থ মন্ত্রককে নিয়ে গঠিত কমিটি, এমনকী টেলিকম কমিশনেরও সম্মতি আদায় করে নিয়েছে মোদী সরকার। বাকি শুধু মন্ত্রিসভার আনুষ্ঠানিক সিলমোহর।
অভিযোগটি ঠিক কী?
এআইসিসি দফতরে সাংবাদিক সম্মেলন করে রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা আজ বলেন, ‘‘টু-জি মামলায় সুপ্রিম কোর্ট সতর্ক করেছিল, নিলাম হয়ে যাওয়ার পরে তার শর্ত পরিবর্তন করা যায় না। কিন্তু এই নিলামের মাধ্যমে এই তিন সংস্থাকে স্পেকট্রাম বরাদ্দ করার পরেও শর্ত বদল করছে কেন্দ্র। শর্তে বলা রয়েছে, প্রাথমিক টাকা দেওয়ার পর ৩ বছর কোনও টাকা দিতে হবে না। তার পরে ১০ বছর সমান কিস্তিতে তা সরকারকে দিতে হবে। কিন্তু টেলিকম সংস্থার আবেদনে ১০ বছর সময়টা বাড়িয়ে ১৬ বছর করে দেওয়া হচ্ছে। যার ফলে শুধুমাত্র সুদ হিসেবেই ২৩ হাজার ৮২১ কোটি টাকা লোকসান হবে সরকারের। কংগ্রেসের দাবি, আগে থেকে ১৬ বছরের সময়সীমা বলা থাকলে প্রথমেই সরকারি রাজকোষে আরও টাকা আসত।
কংগ্রেসের অভিযোগ, রাহুল গাঁধী গোড়া থেকে বলে আসছেন, মোদী শুধুমাত্র হাতে গোনা কয়েক জন ধনীর কথা ভাবেন। সরকারের যুক্তি মানলে তো জিএসটির কোপে পড়া যে কোনও ব্যবসায়ীও দাবি করতে পারেন, তাঁকে ছাড় দেওয়া হোক। কোনও ব্যক্তির পরিবারের আর্থিক অবস্থা খারাপ হলেও সরকারের কাছে আবেদন করতে পারেন, আয়কর তিনি পরে মেটাবেন। সরকার কি তা করবে? ফলে ধনী সংস্থাগুলির জন্য মোদী সরকার যা করতে চলেছে, সেটি অনৈতিক শুধু নয়, অসাংবিধানিক। টেলিকম মন্ত্রকের এক সূত্রের অবশ্য বক্তব্য, বিষয়টিতে এখনও মন্ত্রিসভার অনুমোদন মেলেনি। মন্ত্রক ও টেলিকম কমিশন বিষয়টি বিবেচনা করছে। টেলিকম সংস্থাগুলির পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে বিষয়টি পর্যালোচনা করা হচ্ছে।