জম্মু রণবীর সিংহ সেক্টরে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সতর্ক প্রহরা। ছবি: রয়টার্স।
পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্রে নির্বাচন এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গেই এল নিয়ন্ত্রণরেখার ওপারে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গিদের সক্রিয় হয়ে ওঠার খবর। সুযোগ পেলেই ভারতে ঢুকে পড়ার অপেক্ষায় এখন লুকিয়ে থাকা সেই জঙ্গিরা। জঙ্গিদের এই সক্রিয়তার খবর পাওয়ার সঙ্গেই পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে, এমনটাই জানিয়েছে ভারতীয় সেনা।
ভারতীয় সেনার ফিফটিন কোরের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) এবং লেফটেনান্ট জেনারেল কেজেএস ধিলোঁ একটি সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘হ্যাঁ, আমরা বিষয়টি নিয়ে নিশ্চিত। গোয়েন্দা সূত্রে খবর পেয়েছি, নিয়ন্ত্রণরেখার ঠিক ওপারেই লঞ্চ প্যাডগুলিতে ফিরে এসেছে প্রশিক্ষিত জঙ্গিরা। সুযোগ পেলেই ওরা অনুপ্রবেশ করবে, জানা যাচ্ছে এমনটাও।’’
পাক অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গিদের সক্রিয় হয়ে ওঠার খবরে ভারতের উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ আছে। ২০১৬ সালে নিয়ন্ত্রণরেখার ওপারে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ঢুকে বেশ কয়েকটি জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করেছিল ভারতীয় সেনা। এই জঙ্গিঘাঁটিগুলি ছিল একই সঙ্গে লঞ্চ প্যাড এবং প্রশিক্ষণ শিবির। যে কোনও মুহূর্তে ভারত অভিযান চালিয়ে জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করতে পারে, এই আতঙ্ক থেকেই পাক অধিকৃত কাশ্মীর থেকে নিজেদের ঘাঁটি সরিয়ে নিয়েছিল লস্কর, জইশ সহ সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলি।
আরও পড়ুন: মাসুদ আজহারকে ‘বিশ্ব সন্ত্রাসী’ ঘোষণায় এ বারও ভেটো? তেমনই ইঙ্গিত চিনের
কিন্তু ভারতীয় সেনাকর্তাদের বক্তব্য থেকে পরিষ্কার, নির্বাচন এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ফের পুরনো শিবিরগুলি সক্রিয় করার চেষ্টা চালাচ্ছে পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিরা। তাহলে কি জম্মু ও কাশ্মীরে আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে ফের নাশকতার ষড়যন্ত্র করছে জঙ্গিরা? উঠছে সেই প্রশ্ন। লেফটেনান্ট জেনারেল কেজেএস ধিলোঁ অবশ্য জানিয়েছেন, ‘‘পুরো বিষয়টির উপর তাঁরা নজর রাখছেন। পরিস্থিতির মোকাবিলায় তাঁরাও প্রস্তুত।’’
অনুপ্রবেশ করতে চাওয়া জঙ্গিদের মধ্যে তৎপরতা দেখা গেলেও জম্মু ও কাশ্মীরের যুবকদের দলে টানতে অনেকটাই ব্যর্থ হচ্ছে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলি, তাও জানিয়েছেন লেফটেনান্ট ধিলোঁ। আপাত ভাবে এই খবর ভাল হলেও এর পিছনে অন্য কোনও কারণ লুকিয়ে আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হবে জানানো হয়েছে ভারতীয় সেনার তরফে। ধিঁলোর কথায়, ‘‘তা হলে কি দলে নাম না লিখিয়ে তাদের সরাসরি আত্মঘাতী বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত করা হচ্ছে। অথবা অন্য কোনও কারণ লুকিয়ে আছে? আমরা সব রকম সম্ভাবনার কথাই ভেবে দেখছি।’’
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
জম্মু ও কাশ্মীরের সাধারণ প্রবণতা অনুযায়ী জুন থেকে সেপ্টেম্বর, এই চারটে মাসই নিয়ন্ত্রণরেখায় সব থেকে তৎপর থাকে জঙ্গিরা। সেনাপ্রহরা এড়িয়ে ভারতের মাটিতে ঢোকার জন্য এই সময়টাই বেছে নেয় তারা। আগামী এপ্রিলেই সারা দেশের সঙ্গে নির্বাচন জম্মু ও কাশ্মীরেও। উপত্যকায় পাঁচ দফার নির্বাচনে ঘোঁট পাকানোর চেষ্টা হলে পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়া হবে, এই আশ্বাসও মিলেছে সেনার তরফে।