কাশ্মীরে ফের লুঠ পুলিশের হাতিয়ার

পাক ভূমিতে গিয়ে জঙ্গিদের লঞ্চ প্যাড উড়িয়ে দেওয়ার দাবি করেছে ভারতীয় সেনা। সেই সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কৃতিত্ব জাহিরের শেষ নেই। কিন্তু তাতে কাশ্মীরে জঙ্গি সন্ত্রাস কমেনি। বরং বদলা নিতে মরিয়া জঙ্গিরা একের পর এক হামলা চালাচ্ছে ভূস্বর্গে।

Advertisement

সাবির ইবন ইউসুফ

শ্রীনগর শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৬ ০৪:০৬
Share:

পাক ভূমিতে গিয়ে জঙ্গিদের লঞ্চ প্যাড উড়িয়ে দেওয়ার দাবি করেছে ভারতীয় সেনা। সেই সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কৃতিত্ব জাহিরের শেষ নেই। কিন্তু তাতে কাশ্মীরে জঙ্গি সন্ত্রাস কমেনি। বরং বদলা নিতে মরিয়া জঙ্গিরা একের পর এক হামলা চালাচ্ছে ভূস্বর্গে। লুঠ হয়ে যাচ্ছে বাহিনীর হাতিয়ার। তাই কাশ্মীরে সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

Advertisement

জুলাইয়ের গোড়ায় হিজবুল কম্যান্ডার বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর থেকেই মাথাচাড়া দিচ্ছিল অস্ত্র ছিনতাইয়ের ঘটনা। কিন্তু উরির সেনা ছাউনিতে সাম্প্রতিক হামলা আর সেনার সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের পরে সেই প্রবণতা বেড়েছে বই কমেনি।

সাম্প্রতিক উদাহরণ কাল রাতের ঘটনা। দক্ষিণ কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার দালভাশ এলাকার দুরু গ্রামে একটি টিভি টাওয়ার পাহারা দিচ্ছিলেন কয়েক জন পুলিশ কর্মী। রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ সেনার উর্দি পরা জনা কয়েক সশস্ত্র জঙ্গি হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়ে সেখানে। পুলিশকে ভয় দেখিয়ে তাঁদের কাছ থেকে পাঁচটি অস্ত্র ছিনিয়ে পালিয়ে যায় তারা।

Advertisement

পুলিশ জানাচ্ছে, কাল রাতের ঘটনার পরে নিরাপত্তা বাহিনীর কাছ থেকে ছিনতাই হওয়া অস্ত্রের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২। পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা জানিয়েছেন, ওই পলাতক জঙ্গিদের খোঁজে জোর তল্লাশি শুরু হয়েছে গোটা অনন্তনাগ জেলায়। পুরোপুরি ঘিরে ফেলা হয়েছে দুরু গ্রাম। কোনও জঙ্গি যাতে এলাকা ছেড়ে পালাতে না-পারে তার জন্য সব রকমের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। মোতায়েন করা হয়েছে সেনাও। যে রক্ষীদের কাছ থেকে অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছিল, হেফাজতে নেওয়া হয়েছে তাঁদের। পুলিশ সূত্রের খবর, ছিনতাই হওয়া অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে তিনটি এসএলআর, একটি কার্বাইন এবং একটি ইনসাস রাইফেল।

জঙ্গিদের এই প্রবণতা অবশ্য নতুন নয়। তবে বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর থেকে যে এই ধরনের ঘটনা বেশ বেড়ে গিয়েছে তা এক বাক্যে স্বীকার করেছেন সেনা ও পুলিশ কর্তাদের একাংশ। তাঁদের ব্যাখ্যা, বুরহানের মৃত্যুর পরে প্রচুর কাশ্মীরি যুবক বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনে নাম লিখিয়েছে। আর নতুন সদস্যদের অস্ত্র জোগাতেই নিরাপত্তা বাহিনীর উপর হামলা চালাচ্ছে জঙ্গিরা। চলতি মাসের আট তারিখেই পুলওয়ামায় এমন ঘটনা ঘটেছিল। লাসিপোরায় পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে দু’টি সার্ভিস রিভলবার নিয়ে পালায় জঙ্গিরা। কালও একই ঘটনা ঘটতে গিয়েছিল পুলওয়ামায়। সিরনু এলাকায় একটি পুলিশ চৌকি লক্ষ করে গুলি চালাতে শুরু করেছিল জঙ্গিরা। কিন্তু পুলিশের পাল্টা গুলিতে জঙ্গিরা পালায়। এই ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন