প্রতীকী ছবি।
ছত্তীসগঢ়ের সুকমায় হামলা থেকে শিক্ষা নিয়ে মাওবাদী দমন কৌশলে পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্র। আগামী বছরে ওই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। ভোটের মুখে হামলা বাড়ার আশঙ্কা থেকেই এই সিদ্ধান্ত বলেই জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। বাড়ছে আর্থিক বরাদ্দও। আধাসেনার পরিকাঠামো উন্নয়নে আগামী দু’বছরে ১০৫৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হবে। যার একটি বড় অংশ খরচ করা হবে মাওবাদী অধ্যুষিত রাজ্যগুলিতে আধাসেনার পরিকাঠামো উন্নয়নে।
এপ্রিলে সুকমায় মাওবাদী হানায় জনা ত্রিশেক সিআরপিএফ জওয়ানের মৃত্যু হয়। তার পরেই মাওবাদী দমনে নতুন রণকৌশল বানানোর জন্য সিআরপিএফকে নির্দেশ দেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। বছরের শেষে জমা দেওয়া রিপোর্টে মাওবাদী দমন ও হামলা ঠেকাতে কয়েকটি সুপারিশ করা হয়েছে।
প্রথমত, জঙ্গলে অভিযানে যাওয়া বাহিনীর জন্য মাইনরোধী গাড়ির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, বস্তার-সুকমায় মাওবাদী দমন ও এলাকা দখলে দিন-রাতে এক যোগে অভিযান চালানোর প্রয়োজন। কিন্তু রাতের অভিযানে মাইনরোধী গাড়ি না মিললে প্রয়োজনে অভিযান বন্ধ রাখতে হবে। আপৎকালীন পরিস্থিতিতে যাতে দ্রুত বাহিনী পৌঁছতে পারে সে জন্য মোটরবাইক ব্যবহার করতে বলা হয়েছে।
দ্বিতীয়ত, আধাসেনার কাছে ৩৬০ ডিগ্রি দেখা সম্ভব এমন ক্যামেরা ও ‘নাইট ভিশন ক্যামেরা’ অবশ্যই থাকা উচিত বলে জানিয়েছে সিআরপিএফ। মাওবাদীরা মূল হামলা চালানোর আগে বাহিনীর নজর ঘোরাতে একাধিক কৌশল নিয়ে থাকে। তাই বিশেষ কোনও এলাকায় অভিযানের আগে ওই এলাকায় সন্দেহজনক গতিবিধি দেখার জন্য ড্রোন ব্যবহারের সুপারিশ করা হয়েছে। রাতের অন্ধকারে চলা অভিযানের জন্য জোর দেওয়া হয়েছে ‘থার্মাল ইমেজিং’ যন্ত্রের ব্যবহারেও। যাতে সামান্য কোনও গতিবিধিও ওই যন্ত্রে ধরা পড়ে। তৃতীয়ত, প্রতিটি অভিযানের আগে সংশ্লিষ্ট এলাকার ভূ-প্রকৃতি যাতে বাহিনীর প্রত্যেকের মাথায় থাকে তা নিশ্চিত করতে হবে বলে জানিয়েছেন সিআরপিএফ কর্তারা। এক স্বরাষ্ট্রকর্তার কথায়, ‘‘প্রতিটি অভিযানের আগে অভিযানস্থলের উপগ্রহ চিত্র ভাল ভাবে খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।’’ যন্ত্রের পাশাপাশি মাইন খুঁজতে জোর দেওয়া হয়েছে প্রশিক্ষিত কুকুরবাহিনী ব্যবহারের উপরেও।
চতুর্থত, স্থানীয় স্তরে আরও বেশি করে গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক বাড়াতে বলা হয়েছে। সুপারিশ করা হয়েছে স্থানীয় ভূমিপুত্র বিশেষ করে আদিবাসীদের নিয়োগেও। সে জন্য স্থানীয় যুব সমাজের আস্থা অর্জনে একাধিক ইতিবাচক পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে।