নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে ‘জন-আক্রোশ’ সভার মঞ্চে রাহুল বললেন ২০১৯-য় দেশে জিতবে কংগ্রেস। ফাইল চিত্র।
পাঁচ, চার, তিন, দুই, এক...
কাউন্টডাউন শেষ হতেই জায়ান্ট স্ক্রিন জুড়ে রাহুল গাঁধী। উঠে দাঁড়ালেন সনিয়া গাঁধী, মনমোহন সিংহরা।
দিল্লির রামলীলা ময়দানে নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে ‘জন-আক্রোশ’ সভার মঞ্চে রাহুল বললেন— কর্নাটক, তার পরে মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তীসগঢ়। আর ২০১৯-য় দেশে জিতবে কংগ্রেস। কারণ মোদীর ‘মিথ্যার মুখোশ’ খুলে গিয়েছে।
মোদীর ‘মিথ্যা’র তালিকা মেলে ধরেই রাহুলের নেতৃত্বে একজোট হওয়ার ডাক দিলেন সনিয়া-মনমোহনও। আর মোদী-হটাও অভিযানের নেতৃত্ব দিয়ে রাহুল বললেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর আধ ঘণ্টা বক্তৃতা শুনে দেশকে এখন ফের বসতে হয় তার সত্যতা খুঁজতে।’’
কিসের মিথ্যা?
রাহুলদের কথায়, মোদী বলেন দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়ছেন। অথচ কর্নাটকে তাঁর সঙ্গী জেল খাটা ইয়েদুরাপ্পা, রেড্ডিরা। জয় শাহ, পীযূষ গয়াল, রাফাল, নীরব মোদীর লুট। বন্ধু শিল্পপতিরা ফায়দা পাচ্ছেন, আর ‘চৌকিদার’ মোদী চুপ। রোজগার, কৃষক আয়, দলিত-সংখ্যালঘু-আদিবাসী-মহিলাদের নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি— সব মিথ্যা। আদালত থেকে নির্বাচন কমিশন, সর্বত্র আরএসএসের লোক। সনিয়ার প্রশ্ন, ‘না খাব, না খেতে দেব’-র ফাঁপা স্লোগান কোথায় গেল? আর মনমোহনের অভিযোগ, ‘‘মোদীর কাজের ধরনে বিপন্ন গণতন্ত্র।’’
প্রশ্ন তুললেন রাহুল, ‘‘এ কেমন প্রধানমন্ত্রী?’’ নেহরু, ইন্দিরা, রাজীব থেকে দেবগৌড়া-গুজরাল, এমনকি বাজপেয়ীর থেকে মোদীকে আলাদা করে কংগ্রেস সভাপতি বলেন, ‘‘৭০ বছরে কোনও প্রধানমন্ত্রীকে বিদেশে মুখের উপর বলা হয়নি, আপনি মহিলাদের নিরাপত্তা দিচ্ছেন না। চিনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী চা খান, কিন্তু ডোকলাম নিয়ে চুপ। যেখানেই যাই, মানুষকে প্রশ্ন করি— আপনি খুশি? জবাব আসে— না।’’ রাহুলের কথায়, কংগ্রেস না লড়লে এত দিনে কৃষকদের সব জমি কেড়ে নিতেন মোদী।
মোদী-আরএসএসকে সামনে রেখে দলকে চাঙ্গা করাই লক্ষ্য ছিল রাহুলের। তাই আগের অবস্থান থেকে একটু সরে এসে আহ্বান জানালেন ১৮ থেকে ৯০, সব বয়সের নেতা-কর্মীদের। অশোক গহলৌত-সচিন পাইলট, জ্যোতিরাদিত্য-কমল নাথ, বিবদমান নেতাদের নাম একসঙ্গে বলে একজোট হওয়ার বার্তা দিলেন। বললেন, জোট বেঁধে লড়ে গুজরাতে কংগ্রেস মোদীর মুখের আদল বদলে দিয়েছে। পরের ভোটে জিতে দেখাবে।
তির যে বিঁধেছে প্রমাণ অমিত শাহের পর পর পাঁচখানি টুইট। বললেন— এ’টি ‘পরিবার-আক্রোশ’ সভা। আর রবিশঙ্কর প্রসাদ বললেন, ‘‘দিনে তারা দেখা।’’