গাঁধীমূর্তির পাদদেশে কংগ্রেসের প্রতিবাদ। ছবি: পিটিআই।
কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা দিবসে বিজেপি-কে তীব্র আক্রমণের রাস্তাই বেছে নিলেন রাহুল গাঁধী। সংসদের ভিতরে ও বাইরে মোদী সরকারকে ঝাঁঝালো বাক্যবাণে বিঁধলেন সদ্যনির্বাচিত কংগ্রেস সভাপতি ও তাঁর দলের নেতারা।
গত রবিবার কর্নাটকের একটি অনুষ্ঠানে সংবিধান থেকে ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ শব্দটাই মুছে দেওয়ার কথা বলে বিতর্কের মুখে পড়েন কেন্দ্রীয় কর্মদক্ষতা উন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী অনন্তকুমার হেগড়ে। বৃহস্পতিবার নাম না করে হেগড়ের মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেন রাহুল।
নয়াদিল্লিতে কংগ্রেসের ১৩৩তম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে এ দিন এক অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন রাহুল। ভাষণে তাঁর দাবি, “এটা খুবই পীড়াদায়ক যে আমাদের দেশের ভিত্তি সংবিধানের অস্তিত্বই আজ সরাসরি সঙ্কটের মুখে।” রাহুলের মতে, শীর্ষ বিজেপি নেতার এ ধরনের মন্তব্যের ফলে অজান্তে এবং পরোক্ষ ভাবে সঙ্কটের মুখে পড়েছে সংবিধানের অস্তিত্ব। কংগ্রেস কর্মী তথা প্রত্যেক দেশবাসীর কর্তব্য সংবিধান-সহ দেশের সমস্ত নাগরিকের অধিকার রক্ষা করা।
আরও পড়ুন
আমি র-এর চর, শেখানো বুলির মতো আউড়ে যাচ্ছিলেন কুলভূষণ
পাকিস্তানের তীব্র নিন্দায় সুষমা, ‘ধিক্কার’ উঠল গোটা সংসদ থেকে
পেশ তিন তালাক বিল, কিছু সংশোধন চায় কংগ্রেস
সংসদের বাইরে রাহুলের আক্রমণের রেশ দেখা দেয় অন্দরেও। সংসদের দু’কক্ষেই বার বার হেগড়েকে ক্যাবিনেট থেকে বরখাস্ত করার দাবি তোলেন কংগ্রেস নেতারা। বিজেপি আগেই জানিয়েছিল, হেগড়ের ওই মন্তব্যকে সমর্থন করে না তারা। বুধবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বিজয় গয়াল বলেছিলেন, “হেগড়ের মন্তব্য সমর্থন করে না সরকার।” শেষমেশ চাপের মুখে পড়ে এ দিন লোকসভায় ক্ষমা চাইতে বাধ্য হন হেগড়ে। তিনি বলেন, “আমার মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা হয়েছে। সংবিধানের উপর শ্রদ্ধা রয়েছে।” তবে তাতে যে চিঁড়ে ভেজেনি তা স্পষ্ট বিরোধী দলনেতা গুলাম নবি আজাদের কথা। তাঁর মন্তব্য, “এক জন মন্ত্রী হয়ে এ রকম মন্তব্য কী ভাবে করেন হেগড়ে? মন্ত্রীপদে থাকার কোনও অধিকারই নেই তাঁর। যদি কেউ সংবিধানের উপর আস্থা রাখতে না পারেন তবে তবে তাঁর মন্ত্রী পদে থাকার অধিকার নেই।”
এই ধরনের খবর আপনার ইনবক্সে সরাসরি পেতে এখানে ক্লিক করুন
হেগড়ের মন্তব্যের প্রতিবাদে এ দিন সংসদ চত্বরে গাঁধীমূর্তির পাদদেশে রাহুলের নেতৃত্বে কংগ্রেস নেতারা ধর্নায় বসেন এবং প্ল্যাকার্ড নিয়ে প্রদর্শন করেন।
এ দিন সকাল থেকেই আক্রমণের এই সুর বেঁধে দিয়েছিলেন রাহুল নিজে। তিনি বলেন, “বিজেপির রাজনৈতিক মতবাদের ভিত্তিই হল মিথ্যার উপরে গড়া। এটাই কংগ্রেসের সঙ্গে বিজেপি-র মূল পার্থক্য।” হিমাচল প্রদেশের হার প্রসঙ্গ উহ্য রেখেও তিনি বলেন, “আমরা হারতে পারি। তা-ও সত্যের পথ ছাড়ি না। আমরা সত্য পালন করি।”