‘মাথা নত করবো না’, বর্ণিকার পাশেই তাঁর বাবা

ঘটনার রাতে বর্ণিকার গাড়ির পিছু নিয়ে যে রাস্তা দিয়ে বিকাশের গাড়ি ধাওয়া করেছিল, সেই রাস্তার পাঁচটি সিসিটিভি ফুটেজ প্রথমে নিখোঁজ বলে জানা গিয়েছিল। যা শুনে তদন্ত প্রভাবিত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন বীরেন্দ্র।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৭ ০৪:৪১
Share:

বর্ণিকা কুণ্ডু। ছবি: সংগৃহীত।

মেয়েটির চরিত্রহননে ইতিমধ্যেই নেমে পড়েছেন একাধিক বিজেপি নেতা-কর্মী। প্রশ্ন উঠছে, হেনস্থার শিকার হওয়া বর্ণিকার জীবনযাত্রা এবং তাঁর রাতে ঘোরাঘুরি করা নিয়েও। এ সব সত্ত্বেও যে-ভাবে তাঁর মেয়ে পুরুষতান্ত্রিক মনোভাবের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন, তাতে তিনি অত্যন্ত খুশি। এই লড়াইয়ে তিনি মেয়ের পাশেই রয়েছেন বলে আজ জানালেন বর্ণিকার বাবা তথা হরিয়ানার অতিরিক্ত মুখ্যসচিব বীরেন্দ্র কুণ্ডূ।

Advertisement

হরিয়ানা বিজেপির সহ-সভাপতি রামবীর ভাট্টির মতো বিজেপি নেতারা আজ বর্ণিকার জীবনযাত্রা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ভাট্টির কথায়, ‘‘কেন রাতে একা ঘোরার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল বর্ণিকাকে? মেয়েদের রাতে বাইরে বেরোতে দেওয়াই উচিত নয় মা-বাবার।’’ যা শুনে ২৯ বছরের বর্ণিকা বলেন, ‘‘আমি কী করব সেটা ওঁর দেখার কথা নয়। আমি কোথায় যাব, কী করব সেটা আমার বা আমার পরিবারের ভাববার বিষয়। অন্য কারও নয়।’’ ফেসবুক পোস্টে মেয়ের এই মনোভাবকে সমর্থন করে পিতা বীরেন্দ্র জানিয়েছেন, কোনও অবস্থাতেই, কোনও চাপের কাছে তাঁরা মাথা নত করবেন না। তাঁদের একমাত্র লক্ষ্য হল দোষীদের শাস্তি দেওয়া। তবে যে ভাবে অভিযুক্তদের পরিবারকে টেনে আনা হচ্ছে, তা দুর্ভাগ্যজনক বলে মন্তব্য করেন তিনি। বীরেন্দ্রের কথায়, ‘‘আমরা কিন্তু অভিযুক্তদের পরিবারকে দায়ী করছি না। কোনও বাবা-মা তো সন্তানকে নারী-নিগ্রহ করতে শেখান না!’’

আরও পড়ুন:আনাই হলো না অপহরণের অভিযোগ

Advertisement

ঘটনার রাতে বর্ণিকার গাড়ির পিছু নিয়ে যে রাস্তা দিয়ে বিকাশের গাড়ি ধাওয়া করেছিল, সেই রাস্তার পাঁচটি সিসিটিভি ফুটেজ প্রথমে নিখোঁজ বলে জানা গিয়েছিল। যা শুনে তদন্ত প্রভাবিত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন বীরেন্দ্র। বিষয়টি তিনি রাজ্য পুলিশের ডিজিকেও জানান। রাতের দিকে অবশ্য সব সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধার করেছে পুলিশ। হেনস্থাকারীদের নামে কেন অপহরণের অভিযোগ আনেনি পুলিশ, কী করেই বা তারা এত তাড়াতাড়ি জামিন পেয়ে গেল, সেই সব প্রশ্নও উঠছে। বীরেন্দ্রের কথায়, ‘‘দু’জন অপরাধীকে শাস্তি দেওয়াটাই শেষ কথা নয়। আসল বিষয়টি হলো দেখা যে, আমাদের দেশ একজন মহিলাকে স্বাধীনভাবে ও সমান অধিকারের সঙ্গে বাঁচতে দেয় কি না। দেখা— যদি তাঁর সঙ্গে কোনও অন্যায় হয়ে থাকে, তা হলে ন্যায়ের খোঁজে তিনি বিচারব্যবস্থার দ্বারস্থ হতে পারবেন, এই বিশ্বাস সমাজ তাঁকে জোগাতে পারে কি না। যদি তা না হয়, তা হলে আমাদের সমাজ কোনও আইনশৃঙ্খলাহীন, অসভ্য সমাজের থেকে বিন্দুমাত্র উন্নত নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন