ছোটদের টিকার নির্দেশিকা
Vaccine

Vaccines: দুই ডোজ়ের ব্যবধান ২৮ দিন, জানাল মন্ত্রক

স্বাস্থ্য কর্তাদের মতে, ১৮ বছরের কমবয়সিদের মধ্যে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ ক্যান্সার, ফুসফুসের সমস্যা, অঙ্গ প্রতিস্থাপন স্থূলতা-র মতো ক্রনিক রোগের শিকার। কো-মর্বিড সেই ছোটরা করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হলে মৃত্যুহার ৫ থেকে ৭ শতাংশ বেড়ে যেতে পারে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২২ ০৭:১১
Share:

ফাইল চিত্র।

চিনের একাধিক প্রদেশে নতুন করে ছড়াতে শুরু করেছে সংক্রমণ। করোনা বাড়ছে সিঙ্গাপুরেও। আগামী দিনে ওই সংক্রমণ ভারত-সহ অন্যান্য দেশে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই সংক্রমণের নতুন ঢেউ আসার আগে ১২ থেকে ১৪ বছর বয়সিদের টিকাকরণের আওতায় নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র।

Advertisement

স্বাস্থ্য কর্তাদের মতে, ১৮ বছরের কমবয়সিদের মধ্যে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ ক্যান্সার, ফুসফুসের সমস্যা, অঙ্গ প্রতিস্থাপন স্থূলতা-র মতো ক্রনিক রোগের শিকার। কো-মর্বিড সেই ছোটরা করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হলে মৃত্যুহার ৫ থেকে ৭ শতাংশ বেড়ে যেতে পারে। সেই বিপদের আশঙ্কা রুখতেই ছোটদের প্রতিষেধকের আওতায় নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র।

গত কালই কেন্দ্র জানিয়েছিল, ১৬ মার্চ, বুধবার থেকে ১২ থেকে ১৪ বছর বয়সিদের টিকাকরণ শুরু হবে। কিন্তু ছোটদের আদৌ ওই টিকা দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সরকারের ন্যাশনাল টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজ়রি গ্রুপ অন ইমিউনাইজেশন (এনটিএজিআই)-এর কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য অতিমারি বিশেষজ্ঞ জে পি মুলিইল। তিনি দাবি করেছিলেন, ১২ থেকে ১৪ বছর বয়সিদের টিকা দেওয়ার বিষয়ে ওই কমিটি কোনও সবুজ সঙ্কেত দেয়নি। আজ কার্যত সেই দাবি খারিজ করে এনটিএজিআই-এর কার্যনির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান এন কে অরোরা জানান, ‘‘ছোটদের টিকা দেওয়ার বিষয়ে জাতীয় স্তরে আগেই সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছিল। তা ছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)–র মতে, প্রাপ্তবয়স্কদের টিকাকরণের পরে যদি হাতে যথেষ্ট টিকা থাকে, তা হলে তা ছোটদের দেওয়া যেতে পারে। ভারতের কাছে ছোটদের দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত টিকা রয়েছে। তাই ১৮ বছরের কম বয়সিদের টিকাকরণ ধাপে ধাপে শুরু করেছে কেন্দ্র।’’

Advertisement

কেন ছোটদের টিকাকরণ প্রয়োজন সেই ব্যাখ্যায় অরোরা জানান, মূলত যে ছোটরা ক্রনিক রোগের শিকার তারা যদি করোনা সংক্রমিত হয়, সেই ক্ষেত্রে মৃত্যুহার অনেকটাই বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা। বিশেষত চিনে যেখানে ডেল্টা ও ওমিক্রনের দুই প্রজাতির বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ভাইরাস পাওয়া গিয়েছে, সেখানে ভবিষ্যৎ প্রস্তুতি হিসাবে ১২ থেকে ১৪ বছর বয়সিদের টিকাকরণের আওতায় নিয়ে আসার নীতিগত সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের। তা ছাড়া স্কুল-কলেজ খুলে যেতে শুরু করেছে। ছোটরাও ক্রমশ স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফিরে যাচ্ছে। অরোরার কথায়, ‘‘প্রাপ্তবয়স্কেরা যেখানে টিকা নিয়েছেন, সেখানে ছোটদের টিকাকরণের আওতায় না আনলে তাদের ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে যায়।’’

আজ ১২ থেকে ১৪ বছর বয়সিদের টিকাকরণ সংক্রান্ত নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। বলা হয়েছে ওই টিকাকরণ হবে কেবলমাত্র কর্বেভ্যাক্স প্রতিষেধকের মাধ্যমে। বায়োলজিক্যাল ই সংস্থার এই প্রতিষেধকটির দু’টি ডোজ় দেওয়া হবে। প্রথম ডোজ় নেওয়ার ২৮ দিন পরে দ্বিতীয়টি দেওয়া হবে। পাশাপাশি সমস্ত ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিদেরই ‘প্রিকশন’ ডোজ় নিতে পারবেন বলে জানিয়েছে কেন্দ্র। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, প্রথম দু’ডোজ় টিকা যে সংস্থার নেওয়া হয়েছে, প্রিকশন বা বুস্টার ডোজ়ও নিতে হবে সেই সংস্থারই।

২০২১ সালের ১ মার্চের তথ্য অনুযায়ী, দেশে ১২ ও ১৩ বছর বয়সি শিশুদের সংখ্যা প্রায় ৪ কোটি ৭০ লক্ষ। নির্দেশিকা অনুযায়ী, ২০১০ সাল বা তার আগে জন্মানো সকল শিশুর টিকাকরণের জন্য কোউইনে নাম নথিভুক্ত করা যেতে পারে। আগামিকাল, বুধবার থেকেই কোউইনে আবেদন জানানো যাবে। সেখানে নির্দিষ্ট স্লট বুক করতে পারবেন আবেদনকারী।

টিকা যাঁরা দেবেন, তাঁদের নজর রাখতে হবে, আবেদনকারীর বয়স ১২ পেরিয়েছে কি না। যদি কোনও ক্ষেত্রে দেখা যায়, কোউইনে স্লট বুক করা আবেদনকারীর ১২ বছর হয়নি, সে ক্ষেত্রে টিকা দেওয়া যাবে না, বলে জানিয়েছে কেন্দ্র।

নাম নথিভুক্তির সময়ে ওই পরিবারের কোনও সদস্য যাঁর নাম ইতিমধ্যেই কোউইনে নথিভুক্ত রয়েছে, তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকেই আবেদন করা যাবে। অথবা কোউইনে নতুন অ্যাকাউন্ট খুলেও নাম নথিভুক্ত ও আবেদন করা যাবে। এ ছাড়া ‘অনসাইট’ রেজিস্ট্রেশন বা টিকাকরণ কেন্দ্রে গিয়েও আবেদন করা যাবে। টিকাকরণ কেন্দ্রে ১২-১৪ বয়সিদের জন্য পৃথক স্থানের বন্দোবস্ত করতে হবে। এবং সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রে তার উল্লেখ রাখতে হবে। যার ফলে সুনির্দিষ্ট অংশেই প্রতিষেধক নিতে পারবে ওই বয়ঃসীমার শিশুরা। এড়ানো যাবে বিভ্রান্তি। ইতিমধ্যেই ১৪ থেকে ১৫ এবং ১৫ থেকে ১৮ বয়ঃসীমায় টিকাকরণ শুরু হয়ে গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন