শরিকদের পারস্পরিক আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে রীতিমতো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বিহারের মহাজোট রাজনীতি! রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে এনডিএ প্রার্থীকে জেডিইউ সমর্থন করার পর থেকেই আক্রমণের ধার বাড়িয়ে দিয়েছে আরজেডি।
সেই আক্রমণের জবাবও দিচ্ছে জেডিইউ নেতারা।
আরজেডি নেতা তথা রাজ্যের উপ-মুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব থেকে শুরু করে জেডিইউ সাধারণ সম্পাদক কে সি ত্যাগী, একের পর এক বিবৃতি দিয়ে যাচ্ছেন। ফেসবুক, টুইটারে চলেছে নাম না করে আক্রমণ। আরজেডি নেতাদের এই আক্রমণের মুখে জেডিইউ নেতারা প্রকাশ্যেই জানাচ্ছেন, নীতীশ কুমারের উপরে কোনও ‘আক্রমণ’ তাঁরা মেনে নেবেন না। অন্য দিকে, নীতীশ কুমারকে ‘অহঙ্কারী’ ও ‘সুবিধাবাদী’ বলে আক্রমণ করেই চলেছেন আরজেডি নেতারা।
দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কে সি ত্যাগী আজ বলেন, ‘‘আমরা মহাজোট সরকারের মা। ধাই নই। এটা সকলকে মনে রাখতে হবে। মহাজোট ভাঙার চেষ্টা যাঁরা করবেন সাধারণ মানুষ তাঁদের জবাব দেবেন।’’ ত্যাগীর বক্তব্যের ‘পাল্টা’ দিয়েছেন আরজেডি মুখপাত্র মনোজ ঝা। তিনি বলেন, ‘‘বিহারের মানুষই মহাজোটের মা। বিহারের মানুষ সরকার বানিয়েছেন। তাঁরা চাইবেন না মহাজোট সরকার ভেঙে যাক।’’
জেডিইউ নেতৃত্বের বক্তব্য, পাঁচ বছরের জন্য মহাজোট হয়েছে। মেয়াদ শেষ হতে এখনও অনেকটা সময় বাকি। তাঁরা লালুপ্রসাদকে পরামর্শ দিয়েছেন, দলের সহ-সভাপতি রঘুবংশপ্রসাদ সিংহ এবং বিধায়ক ভাই বীরেন্দ্রকে সামলান। উল্লেখ্য, ওই দুই নেতা লাগাতার নীতীশের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়ে যাচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে মহাজোটের স্থায়িত্ব কমে যেতে পারে বলে জেডিইউ নেতৃত্ব আরজেডি-কে সতর্ক করেছেন। আরজেডি অবশ্য জেডিইউয়ের বিরুদ্ধে পরোক্ষ আক্রমণ চালিয়ে গেলেও ‘মহাজোট’ এখনই ভাঙতে চাইছেন না। আরজেডি মুখপাত্র এই বাগ্বিতণ্ডা বন্ধ করার জন্য দু’পক্ষের কাছেই আবেদন জানিয়েছেন। কারণ আরজেডি নেতৃত্ব এটাও বুঝতে পারছেন, মহাজোট ভাঙলে তাতে আখেরে বিজেপিই লাভবান হবে। লাভবান হবেন নীতীশও। বিজেপির সহায়তায় সরকার গড়বেন তিনি। কিন্তু কোণঠাসা হবেন আরজেডি নেতৃত্ব। সতর্ক জেডিইউ-ও। জোট ভাঙার দায় যাতে তাঁদের উপরে কোনও ভাবেই না বর্তায় সে ব্যাপারে তাঁরা সতর্ক। জেডিইউ রাজ্য সভাপতি বশিষ্ঠনারায়ণ সিংহও সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সতর্ক করেছেন, ‘‘এ ভাবে মহাজোট চলতে পারে না। শরিকদের পরস্পরের প্রতি সম্মান থাকা উচিত।’’
শরিকি চাপের এই রাজনীতি নিয়ে আলোচনা করতে আগামী ২ জুলাই রাজ্য কর্মসমিতির বৈঠক ডেকেছে জেডিইউ নেতৃত্ব। ওই বৈঠকের পর, আগামী ৯ জুলাই দলের কেন্দ্রীয় কর্মসমিতির বৈঠকও ডাকা হয়েছে।