Cabinet

লগ্নি টানতে উৎসাহ ভাতা ঘোষণার পথে কেন্দ্র

লকডাউনের জেরে রাজস্ব আয়ও কমে যাওয়ায় রাজকোষে টান পড়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০২০ ০৩:২৮
Share:

অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। ছবি পিটিআই।

অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে মোদী সরকার আরও এক দফা দাওয়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন দু’দিন আগে বলেছিলেন, লকডাউনের গ্রাস থেকে অর্থনীতির পুনরুদ্ধারে আরও এক দফা দাওয়াইয়ের বিকল্প খোলা রয়েছে। আজ আর্থিক বিষয়ক সচিব তরুণ বজাজ স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, এর কাজ চলছে।

Advertisement

অর্থমন্ত্রী তেমনই নির্দেশ দিয়েছেন। তাঁর ইঙ্গিত, অর্থনীতির সাত থেকে আটটি ক্ষেত্রে উৎপাদন বাড়ানো ও নতুন লগ্নি টানতে কেন্দ্র উৎসাহ ভাতা ঘোষণা করতে পারে। বিলগ্নিকরণের পথে হাঁটতে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বেসরকারিকরণের নীতিও দ্রুত ঘোষণা হবে।

বজাজ বলেন, ‘‘অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে কী ধরনের পদক্ষেপ প্রয়োজন, সে বিষয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্র এবং মন্ত্রক থেকে সুপারিশ এসেছে। আগামী বছরের বাজেট তৈরির কাজও শুরু হয়েছে। আমরা সরকারি দফতর, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলিকে পরিকাঠামো তৈরিতে খরচ বাড়াতে বলছি। যাতে অর্থনীতিতে তার প্রভাব পড়ে। চলতি অর্থ বছরের বাজেট বরাদ্দের সংশোধনের সময়েও যেখানে পরিকাঠামো তৈরিতে আরও বেশি অর্থদরকার হবে, তা বরাদ্দ করা হবে।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: করোনা-বিধি শিকেয়, ক্ষুব্ধ কমিশন

প্রসঙ্গত, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস আজ দাবি করেন, দেশে অর্থনীতি পুনরুজ্জীবনের দোরগোড়ায় এসে দাঁড়িয়েছে। বৃদ্ধির জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির প্রয়োজন পুঁজির এবং তা তারা জোগাড় করতে শুরু করেছে। তবে কোভিড-পরবর্তী পরিস্থিতিতে কেন্দ্রকে যে আর্থিক রূপরেখা প্রকাশ করতে হবে, তাও বলেছেন শক্তিকান্ত।

মোদী সরকার লকডাউনের পরেই মূলত গরিব মানুষকে সুরাহা দিতে প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনার ঘোষণা করেছিল। এর পরও বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আর্থিক বিষয়ক সচিব আজ যুক্তি দিয়েছেন, প্রথম দফায় মূলত একেবারে গরিব মানুষকে সুরাহা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। তার পরে দু’দফায় ঋণের জোগান ও বাজারে খরচ বাড়ানোর চেষ্টা হয়েছে। পরের ধাপে অর্থনীতির সাত থেকে আটটি ক্ষেত্রে উৎপাদন বাড়ানোর জন্য কেন্দ্র উৎসাহ ভাতা ঘোষণা করতে পারে। আগেই মোদী সরকার মোবাইল ফোন, ওষুধ, চিকিৎসা যন্ত্রপাতি উৎপাদনে এই উৎসাহ ভাতার ঘোষণা করেছে।

তবে লকডাউনের জেরে রাজস্ব আয়ও কমে যাওয়ায় রাজকোষে টান পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে বজাজ জানিয়েছেন, খুব দ্রুত রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বেসরকারিকরণের নীতিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সিলমোহর পড়বে।

অর্থমন্ত্রী আগেই জানিয়েছিলেন, একমাত্র নীতিগত ভাবে গুরুত্বপূর্ণ বা ‘স্ট্র্যাটেজিক’ ক্ষেত্রে সর্বাধিক চারটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা থাকবে। বাকি ক্ষেত্রের সমস্ত সংস্থা বেসরকারিকরণ করে ফেলা হবে। সরকারি সূত্রের খবর, ব্যাঙ্ক ও বিমা—এই ক্ষেত্রগুলি ‘স্ট্র্যাটেজিক’ ক্ষেত্রের মধ্যে থাকবে। কিন্তু সে ক্ষেত্রেও সরকারি ব্যাঙ্কের সংখ্যা কমবে। কারণ, এখন ১২টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক রয়েছে। ৮টি সরকারি বিমা সংস্থা রয়েছে। নীতি অনুযায়ী, সর্বাধিক চারটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক ও চারটি বিমা সংস্থা থাকার কথা।

আরও পড়ুন: কোয়াড-এর পাল্টা জোট গড়ছে চিন

বজাজের যুক্তি, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার নীতির ফলে দ্রুত বিলগ্নিকরণের সুবিধা হবে। তিনি বলেন, ‘‘লগ্নি তহবিলের মাধ্যমে বিনিয়োগ আসছে। সরাসরি বিদেশে শেয়ার ছাড়াও বিধিনিয়মও প্রায় চূড়ান্ত। আন্তর্জাতিক বন্ড সূচকে কিছু দিনের মধ্যেই আমরা জায়গা পেয়ে যাব। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সঙ্গেও এ বিষয়ে কথা চলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন